📚অষ্টম শ্রেণির ভূগোল সাজেশন(দ্বিতীয় পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়ণ)📚
✍️ প্রশ্নের মান-২:
১. সেলভা অরণ্যের দুটি বৈশিষ্ট্য লেখ।
উঃ ১.এই অরণ্যে, লম্বা চওড়া পাতার গাছ পাওয়া যায়। ২.এই অরণ্য চিরহরিৎ হয় এবং শরৎ ঋতু তাদের প্রভাবিত করে না।
২. কানাডিয় শিল্ড অঞ্চলের অবস্থান লেখ।
উঃ উত্তর আমেরিকার উত্তর-পূর্বাংশে যে প্রাচীন শিলা গঠিত ক্ষয়প্রাপ্ত মালভূমি অবস্থান করছে তাকে কানাডীয় শিল্ড অঞ্চল বলা হয়। বিরাট 'V' আকৃতির এই অঞ্চলটি কানাডার উত্তরাংশে হাডসন উপসাগরকে বেষ্টন করে রয়েছে। পৃথিবীর মোট ১১টি শিল্ড অঞ্চলের মধ্যে এটি বৃহত্তম।
৩. টীকা লেখ -মিশ্র অরণ্য।
উঃ
৪. টীকা লেখ- মৃত্যু উপত্যকা।
উঃ উত্তর আমেরিকা মহাদেশের পশিমের পার্বত্য অঞ্চলের ( cordilera) ক্যালিফোর্নিয়ার দক্ষিণ- পূর্ব অংশের এই উপত্যকা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৯০ মিটার নিচু। তাই এই অঞ্চলের যে জল পাওয়া যায় তাতে লবনতা এত বেশি যে এখানে কোনো জীব বেঁচে থাকতে পারে না ।এই গভীর উপত্যকা মৃত্যু উপত্যকা নামে পরিচিত। এই উপত্যকা উত্তর আমেরিকা র সবচেয়ে উষ্ণতম স্থান। এখনকার উষ্ণতা ৫৬°c। এবং পশ্চিম গোলার্ধে সবচেয়ে নিম্নতম স্থান ।
৫. টীকা লেখ- ক্যাটাবেটিক বায়ু।
উঃ রাতের বেলা বিকিরণের ফলে পর্বতের গা এবং উপত্যকা শীতল হয়ে পড়ে । শীতল ভূমির সংস্পর্শে এসে ভূমি সংলগ্ন বায়ুও শীতল হয় । ফলে এই শীতল ও ভারী বায়ু পর্বতের গা ও উপত্যকা বেয়ে নীচের দিকে নেমে আসে । রাতের বেলা উপত্যকা বেয়ে নিম্নগামী এই বায়ুপ্রবাহকে পার্বত্য বায়ু (Mountain Wind) ও পর্বতের গা বেয়ে নীচের দিকে প্রবাহিত বায়ুকে ক্যাটাবেটিক বায়ু (Katabatic Wind) বলে ।
উদাঃ ভারতের হিমাচল প্রদেশের কুলু ও কাংড়া উপত্যকায় রাতের বেলা এইপ্রকার বায়ু প্রবাহিত হয় ।
৬. টীকা লেখ-ডোলড্রামস।
উঃ উত্তর গোলার্ধে কর্কটীয় উচ্চচাপ ডানদিকে বেঁকে গিয়ে উত্তর-পূর্ব আয়ন বায়ু নামে এবং দক্ষিণ গোলার্ধে মকরীয় উচ্চচাপ বলয় থেকে প্রবাহিত বায়ু বাঁদিকে বেঁকে গিয়ে দক্ষিণ-পূর্ব আয়ন বায়ু নামে নিরক্ষীয় নিম্নচাপ বলয়ের দিকে প্রবাহিত হয়। এই দুই বায়ু নিরক্ষীয় নিম্নচাপ বলয় (5° উ: ও 5° দ:) বরাবর মিলিত হয়, তাই এই অঞ্চল ITCZ (Inter Tropical Convergence Zone) বা আন্তঃক্রান্তীয় অভিসৃতি অঞ্চল নামে পরিচিত। এখানে সমান্তরাল কোনো বায়ুপ্রবাহ না থাকায় একে নিরক্ষীয় শাস্তবলয় বা ডোলড্রাম বলে।
৭.‘শিল্ড' শব্দের অর্থ কী? কানাডিয়ান শিল্ডের অপর নাম কী?
উঃ 👉 'শিল্ড' কথার অর্থ শক্ত পাথুরে তরঙ্গায়িত ভূমিরূপ।
👉কানাডিয়ান শিল্ডের অপর নাম 'লরেন্সিয় মালভূমি'।
৮.আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের কোন্ অঞ্চলকে ‘পৃথিবীর রুটির ঝুড়ি' বলা হয়? এখানকার কোন্ রাজ্যে সর্বাধিক গম উৎপন্ন হয়?
উঃ 👉 প্রেইরি তৃণভূমি অঞ্চলকে।
👉আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ডাকোটা রাজ্যে সর্বাধিক গম উৎপন্ন হয় , বসন্তকালীন গম বলয়ের দক্ষিণে শীতকালে গম উৎপন্ন হয় বলে এই অঞ্চলের আরেক নাম ' পৃথিবীর রুটির ঝুড়ি ' ।
৯.মৌসুমি বায়ুকে সমুদ্রবায়ু ও স্থলবায়ুর বৃহৎ সংস্করণ বলা হয় কেন?
উঃ গ্রীষ্মকালকে দিন আর শীতকালকে রাত ধরা হলে এই দুই ঋতুর পার্থক্যের জন্যই
মৌসুমি বায়ু প্রবাহিত হয় । তাই এই বায়ুকে সমুদ্রবায়ু ও স্থলবায়ুর বৃহৎ
সংস্করণ বলে ।
১০.ফেরলের সূত্রটি লেখো।
উঃ কোরিওলিস বলের প্রভাবে বায়ুপ্রবাহ উচ্চচাপ থেকে নিম্নচাপের দিকে সোজাপথে প্রবাহিত না হয়ে উত্তর গোলার্ধে ডানদিকে এবং দক্ষিণ গোলার্ধে বামদিকে বেঁকে প্রবাহিত হয় ।
১১. পার্থক্য লেখ-পম্পাস ও সাভানা।
উঃ দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের তৃণভূমি পম্পাস নামে পরিচিত।
১২. কোরিওলিস বল কী?
উঃ পৃথিবীর আবর্তন ও ঘূর্ণন গতির কারনে পৃথিবীর ওপর যেকোনো স্বচ্ছন্দ ও গতিশীল
বস্তুর ওপর এক ধরনের বল কাজ করে যা বস্তুগুলির দিকবিক্ষেপ ( পরিবর্তন
ঘটায় । এই দিক বিক্ষেপকারী বলকেই বলে কোরিওলিস বল ।
১৩. টীকা লেখ-ITCZ
উঃ নিরক্ষীয় অঞ্চলে একটি স্থায়ী নিম্নচাপ বলয় আছে যাকে নিরক্ষীয় শান্ত বলয় বলা হয়। বায়ুচাপের সমতা রক্ষার জন্য এই নিম্নচাপ বলয়ের দু-দিকে অবস্থিত উপক্রান্তীয় উচ্চচাপ বলয় থেকে দুটি আয়ন বায়ু উত্তর-পূর্ব আয়ন বায়ু এবং দক্ষিণ-পূর্ব আয়ন বায়ু নিরক্ষীয় নিম্নচাপ বলয়ের দিকে প্রবাহিত হয়। নিরক্ষীয় নিম্নচাপ বলয়ে এই দুটি আয়ন বায়ু পরস্পরের সঙ্গে মিলিত হয়। এই অঞ্চলকে বলা হয় আন্তঃক্রান্তীয় অভিসরণ অঞ্চল বা ITCZ (Inter Tropical Convergence Zone)।
১৫. টীকা লেখ-আপেক্ষিক আদ্রতা।
উঃ কোনো নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় কোনো নির্দিষ্ট আয়তনের বায়ুতে উপস্থিত জলীয় বাষ্পের ভর এবং ঐ তাপমাত্রায় ঐ আয়তনের বায়ুকে সম্পৃক্ত করতে প্রয়োজনীয় জলীয় বাষ্পের ভরের অনুপাতকে ঐ স্থানের আপেক্ষিক আর্দ্রতা বলে।
উদাহরণ: যদি বায়ুতে 10 গ্রাম জলীয় বাষ্প থাকে এবং একই তাপমাত্রায় 100 গ্রাম বায়ুকে সম্পৃক্ত করতে 15 গ্রাম জলীয় বাষ্পের প্রয়োজন হয়, তাহলে আপেক্ষিক আর্দ্রতা হবে 66.67%।
আপেক্ষিক আর্দ্রতার গুরুত্ব:
আপেক্ষিক আর্দ্রতা আমাদের জীবন এবং পরিবেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি আমাদের আবহাওয়া, স্বাস্থ্য, কৃষি, শিল্প, এবং আরও অনেক কিছুকে প্রভাবিত করে।
১৬. Bumpy Cloud কাকে বলে এবং কেন?
উঃ স্ট্যাটোকিউমুলাস মেঘকে Bumpy Cloud বলে । কারণ এই মেঘ দেখতে অনেকটা
স্তূপের মতো ও স্তরে স্তরে জানো থাকে । অনেক সময় দেখে মনে হয় স্তরগুলো
যেন গড়িয়ে চলছে ।
১৭. পশ্চিমা বায়ু কাকে বলে?
উঃ উত্তর ও দক্ষিণ গােলার্ধের দুই উপক্ৰান্তীয় (কর্কটীয় ও মকরীয়) উচ্চচাপ বলয় থেকে দুই মেরুবৃত্ত প্রদেশীয় নিম্নচাপ বলয়ের দিকে সারাবছর নির্দিষ্ট পথে নিয়মিতভাবে যে বায়ু প্রবাহিত হয়, তাকে বলে পশ্চিমা বায়ু ।
১৮. বাইস ব্যালটের সূত্রটি লেখ।
উঃ 1857 সালে ডাচ আবহবিদ বাইস ব্যালট বায়ুর চাপের পার্থক্য ও বায়ুপ্রবাহের
মধ্যে সম্পর্ক নির্ণয় করতে গিয়ে এই সুত্র আবিষ্কার করেন । উত্তর গোলার্ধে
বায়ু যেদিক থেকে প্রবাহিত হয় , বাইস ব্যালটের সূত্রানুসারে সেইদিকে পিছন
ফিরে দাঁড়ালে ডানদিকে বায়ুর উচ্চচাপ ও বাঁদিকে নিম্নচাপ হয় । দক্ষিণ
গোলার্ধে ঠিক এর বিপরীত অবস্থা লক্ষ করা যায় ।
১৯. টীকা লেখ-অশ্ব অক্ষাংশ।
উঃ ষোড়শ শতকে কর্কটীয় ও মকরীয় শান্ত বলয় দিয়ে পালতোলা জাহাজগুলো চলাচলের
সময় গতিহীন হয়ে পড়ত । ফলে • মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপ থেকে আসা ঘোড়াভর্তি
বানিজ্যিক জাহাজগুলোর পশ্চিম ভারতীয় দ্বীপপুঞ্জ ও আমেরিকায় যেতে অনেক
বেশি সময় লাগত । এই অবস্থায় জাহাজের ভার কমাতে এবং পানীয় জল ও খাবারের
সংকট এড়াতে কিছু ঘোড়াকে আটলান্টিক মহাসাগরের ফেলে দিতে হতো । এই কারণে এই
দুই ক্রান্তীয় অঞ্চল ‘ অশ্ব অক্ষাংশ ' নামে পরিচিত ।
২০.গর্জনশীল চল্লিশা কাকে বলে?
উঃ 40 ° দক্ষিণ অক্ষরেখা বরাবর পশ্চিম থেকে পূর্বে সশব্দে প্রবাহিত পশ্চিমাবায়ু ‘ গর্জনকারী চল্লিশা ' নামে পরিচিত ।
২১. শিলা বৃষ্টি কি?
উঃ ঊর্ধ্বমুখী বায়ুর প্রভাবে অনেক সময় জলকণাগুলি উঁচুতে উঠে যায় , সেখানে জলকণাগুলি ঠান্ডা হয়ে বরফের টুকরোতে পরিণত হয় এবং এই বরফের টুকরোগুলি জলকণার সাথে যুক্ত হয়ে আয়তনে বেড়ে যায় এবং বৃষ্টির সাথে ঝরে পড়ে , একে শিলাবৃষ্টি বলে ।
২২. মেলানেশিয়া বলতে কী বোঝো?
উঃ মেলানেশিয়ার অর্থ হল মেলা = কালো এবং নেশিয়া। দেশ অর্থাৎ 'কালো দেশ'। অস্ট্রেলিয়ার উত্তর-পূর্ব দিকে পশ্চিমে পাপুয়া নিউগিনি থেকে পূর্বে ফিজি দ্বীপপুঞ্জ পর্যন্ত বিস্তৃত দ্বীপমালা মেলানেশিয়া নামে পরিচিত। মূলত এই অঞ্চলের অধিবাসীদের গায়ের রং কালো বলে এরকম নামকরণ করা হয়েছে।
২৩. শিশির ও কুয়াশার মধ্যে দুটি পার্থক্য লেখ।
উঃ ১.কুয়াশার ঘনত্ব বেশি। অন্যদিকে কুয়াশার থেকে শিশিরের ঘনত্ব তুলনামূলকভাবে কম।
২ শিশিরের দৃষ্টিপাত এক কিলোমিটারেরও বেশি সীমাবদ্ধ। অন্যদিকে কুয়াশার দৃষ্টিপাত প্রায় এক কিলোমিটার সীমাবদ্ধ।
৩.শিশির অল্প সময়ের জন্য স্থায়ী হয়। জন্যদিকে কুয়াশা দীর্ঘ সময়ের জন্য স্থায়ী হয়।
২৪. ঘূর্ণবাতের চোখ কি?
উঃ ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাতের উৎপত্তি হয় দুই গোলার্ধের 5 ° -20 ° অক্ষাংশের
মধ্যবর্তী অঞ্চলে । এই ঘূর্ণবাতের কেন্দ্রে বায়ুর চাপ সব থেকে কম থাকে ।
তাই এই অংশের নাম ‘ ঘূর্ণবাতের চোখ ' । এখানে আকাশ পরিষ্কার ও মেঘমুক্ত
থাকে ।
২৫. শিশিরাঙ্ক কাকে বলে?
উঃ যে অবস্থায় বায়ু আর জলীয় বাষ্প ধারণ করতে পারে না এবং অতিরিক্ত
জলীয়বাষ্প শিশির আকারে নামতে থাকে , তাকে শিশিরাঙ্ক বলে । শিশিরাঙ্কে
বায়ুর আপেক্ষিক আর্দ্রতা সর্বাধিক 100 % হয় ।
২৬. অধঃক্ষেপণ বলতে কি বোঝো?
উঃ পৃথিবীর অভিকর্ষের টানে বায়ুমণ্ডল থেকে জলকণা বা বরফকণা ভূপৃষ্ঠে নেমে এলে তাকে অধঃক্ষেপণ বলে । আমাদের সবচেয়ে পরিচিত অধঃক্ষেপণ হল বৃষ্টিপাত ।
২৭. চিনুক কি?
উঃ আর্দ্র বায়ু উপকূলীয় পর্বতের প্রতিবাত ঢাল বরাবর উপরে উঠে মেঘ ও বৃষ্টিপাত সৃষ্টি করার পর অনুবাত অঞ্চলে নেমে এসে উষ্ণ ও শুষ্ক বায়ুরূপে প্রবাহিত হয় । উত্তর আমেরিকার রকি পর্বতের অনুবাত ঢালে প্রবাহিত এরকম উষ্ণ ও শুষ্ক বায়ুপ্রবাহ চিনুক (Chinook) নামে পরিচিত । ‘Chinook’ একটি রেড ইন্ডিয়ান শব্দ, যার অর্থ হল ‘তুষার ভক্ষক’ ।
২৮. টীকা লেখ- বৃষ্টিচ্ছায় অঞ্চল।
উঃ পর্বতের প্রতিবাত ঢালে প্রচুর পরিমাণে বৃষ্টি হয় এবং এই বৃষ্টি হওয়ার পর
বায়ু পর্বতের অনুবাত ঢালে আসে তখন জলীয় বাষ্পের পরিমাণ কমে যায় এবং
বায়ু যত নীচে নামতে থাকে তার উন্নতা তত বাড়তে থাকে এবং বায়ুর জলীয়
বাষ্প বহু ধারণের ক্ষমতা বাড়তে থাকে , ফলে বায়ু অসম্পৃক্ত হয়ে যায় ।
এইজন্য অনুবাত ঢালে বৃষ্টিপাত কম হয় এবং এই ঢালকে বৃষ্টিচ্ছায় অঞ্চল বলে
।
২৯. টীকা লেখ- পৃথিবীর রুটির ঝুড়ি।
উঃ প্রেইরি তৃণভূমি অঞ্চল জুড়ে প্রচুর পরিমানে গম উৎপন্ন হয় । এই অঞ্চলের উত্তরাংশে উঘ্ন চিনুক বায়ুর প্রভাবে বরফ গলে গেলে শীতের শেষে বসন্তকালে গম চাষ করা হয় । এই অংশ বসন্তকালীন গম বলয় নামে পরিচিত । এখানকার ডাকোটা রাজ্যে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সর্বাধিক গম উৎপন্ন হয় , বসন্তকালীন গম বলয়ের দক্ষিণে শীতকালে গম উৎপন্ন হয় বলে এই অঞ্চলের আরেক নাম ' পৃথিবীর রুটির ঝুড়ি ' ।
৩০. উত্তর আমেরিকা মহাদেশকে কেন পঞ্চহ্রদের দেশ বলা হয়?
উঃ উত্তর আমেরিকায় হিমবাহের ক্ষয়কার্যের ফলে পাঁচটি বৃহৎ হ্রদের সৃষ্টি হয়েছে । এগুলি হল সুপিরিয়র , মিচিগান , হুরন , ইরি ও অন্টারিও । এই পাঁচটি হ্রদকে একত্রে পঞ্চহ্রদ ও বলা হয়। সেজন্য উত্তর আমেরিকা মহাদেশকে পঞ্চ হ্রদের দেশ বলা হয়।
৩১. ঘূর্ণবাত কাকে বলে?
উঃ ক্রান্তীয় ও নাতিশীতোয় মণ্ডলে নিম্নচাপ কক্ষকে বেষ্টন করে কুণ্ডলীর মতো পাক খেয়ে কেন্দ্রমুখী ও ঊর্ধ্বগামী দ্রুতগতি সম্পন্ন উয় ঘূর্ণি বায়ু প্রবাহকে ঘূর্ণবাত বলে।
৩২. কোন মেঘকে বজ্র মেঘ বলে এবং কেন?
অথবা, কিউমুলোনিম্বাস মেঘের বর্ণনা দাও।
উঃ এই মেঘ দেখতে অনেকটা গম্বুজের মতো । সাদা , ধূসর ও কালো রঙের হয় । সাধারণ
ভূপৃষ্ঠ সংলগ্ন বায়ুস্তর থেকে নাম 12000 ফুট পর্যন্ত এই মেঘের উল্লম্ব
বিস্তার । এই মেঘের ওপরদিক চ্যাপ্টা ও তলদেশ প্রায় সমতল । কিউমুলোনিশ্বাস মেঘে বজ্রপাতসহ ঋড় হয় বলে এর আরেক নাম বজ্রমেঘ । অনেক সময় এই মেঘ থেকে
শিলাবৃষ্টি হতেও দেখা যায় ।
৩৩. পঞ্চ হ্রদ বলতে কী বোঝো?
উঃ উত্তর আমেরিকার মধ্যভাগের সমভূমি অঞ্চলের দক্ষিণ পূর্ব অংশে হিমবাহের ক্ষয়কার্যের ফলে পাঁচটি বৃহৎ হ্রদের সৃষ্টি হয়েছে (সুপিরিয়র , মিশিগান , হুরন , ইরি ও অন্টারিও)।এই পাঁচটি হ্রদকে একত্রে পঞ্চহ্রদ বলা হয় ।
৩৪. টীকা লেখ- সমোবর্ষণ রেখা।
উঃ কোন নির্দিষ্ট সময়ে পৃথিবীর যে কোন দেশের বা ভৌগোলিক অঞ্চলের সমান বৃষ্টি বা বর্ষণবিশিষ্ট বিভিন্ন স্থানসমূহ যুক্ত করে আবহাওয়া মানচিত্রে প্রদর্শিত কাল্পনিক রেখাকে বুঝায়। অন্যভাবে বলা যায়, কোন নির্দিষ্ট সময়ের সমবর্ষণ সম্পন্ন এলাকাসমূহ যে সব রেখা দ্বারা যুক্ত করে মানচিত্রে প্রদর্শন করা হয়, সে সব রেখাকে সমবর্ষণ রেখা বলে।
৩৫. টীকা লেখ- লরেন্সীয় মালভূমি।
উঃ
৩৬. সমুদ্র বায়ু ও স্থলবায়ু বলতে কী বোঝো?
উঃ👉সাধারণত বিকেল ও সন্ধ্যায় সমুদ্র থেকে স্থল ভাগের দিকে যে বায়ু প্রবাহিত হয়, তাকে সমুদ্র বায়ু বলে।
👉 মধ্যরাত থেকে ভোরের দিকে স্থল ভাগ থেকে সমুদ্রের দিকে প্রবাহিত বায়ু কে স্থল বায়ু বলে।
✍️প্রশ্নের মান-৩:
১. হ্রদ অঞ্চল পশুপালনে উন্নত কেন?
উঃ যে সকল কারণে হ্রদ অঞ্চলের পশুপালনে উন্নতি সেগুলি হল- ( i ) প্রচুর
পরিমাণে ভুট্টা , হে , ক্লোভার ঘাস জন্মায় , যা পশুখাদ্যের পর্যাপ্ত জোগান
দেয় ( ii ) হ্রদ অঞ্চলের পর্যাপ্ত জল পশুদের প্রয়োজনীয় জলের চাহিদা
মেটায় ( iii ) বিস্তীর্ণ সমভূমি অঞ্চলে পশুদের অগাধ বিচরণের সুবিধা ( iv )
এই অঞ্চলের শীতল জলবায়ুর জন্য দুধ ও দুগ্ধজাত দ্রব্য এবং মাংস প্রভৃতি
পচনশীল উপাদানের সহজ সংস্করণ করা যায় ।
২. নিরক্ষীয় অঞ্চলে কেন নিম্নচাপ বলয় সৃষ্টি হয়েছে?
উঃ সৃষ্টির কারণ : (i) এই অঞ্চলে সারা বছর সূর্যরশ্মি লম্বভাবে পড়ে বলে এখানকার বায়ু সারাবছর উষ্ণ ও হালকা হয় । (ii) এই অঞ্চলে জলভাগের পরিমাণ বেশি হওয়ায় বায়ুতে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বেশি থাকে, ফলে বায়ু হালকা হয় ও বায়ু চাপ কম হয় । (iii) পৃথিবীর আবর্তন গতি নিরক্ষীয় অঞ্চলে সব চেয়ে বেশি বলে এর প্রভাবে এই অঞ্চলের উষ্ণ ও হালকা বায়ু ক্রান্তীয় অঞ্চলের দিকে বিক্ষিপ্ত হয় । ফলে বায়ুর ঘনত্ব কমে ও বায়ুর চাপ কম হয় ।
৩. পৃথিবীর ফুসফুস বলা হয় কোন অরণ্যকে? এই অরণ্যের জলবায়ু ও স্বাভাবিক উদ্ভিদের বৈশিষ্ট্য লেখ।
উঃ 👉আমাজন নদী অববাহিকায় অবস্থিত সেলভা অরণ্য পৃথিবীর 20 শতাংশ অক্সিজেনের জোগান দেয় তাই একে ‘ ' পৃথিবীর ফুসফুস ' বলা হয় ।
👉এটি সাধারণত আমাজন অববাহিকার অংশ এবং নিরক্ষরেখার কাছে অবস্থিত। এই অরণ্যে, লম্বা চওড়া পাতার গাছ পাওয়া যায়। এই অরণ্য চিরহরিৎ হয় এবং শরৎ ঋতু তাদের প্রভাবিত করে না। এটি মূলত এই নির্দিষ্ট অঞ্চলে নিয়মিত বৃষ্টিপাতের কারণে হয় যা গাছগুলিকে সারা বছর বেঁচে থাকার জন্য পর্যাপ্ত পুষ্টি সরবরাহ করে।
৪. চিত্রসহ পরিচলন বৃষ্টিপাত ব্যাখ্যা কর।
উঃ ভূপৃষ্ঠের অধিক উষ্ণতার ফলে পরিচলন পদ্ধতিতে জলীয় বাষ্পপূর্ণ উষ্ণ বায়ু ঊর্ধ্বে উঠে ঘনীভূত হয়ে যে বৃষ্টিপাত ঘটায়, তাকে পরিচলন বৃষ্টিপাত বলে।
বৈশিষ্ট্য:
(i) পরিচলন বৃষ্টিপাত সাধারণত দুপুরের পর বা বিকালের দিকে হয়, তাই একে 4 O’Clock Rain বলে। (ii) মূলত কিউমুলোনিম্বাস মেঘ থেকে বজ্রবিদ্যুৎসহ মুশলধারে পরিচলন বৃষ্টিপাত হয়।
উদাহরণ:
নিরক্ষীয় অঞ্চলে সারাবছর বিকালবেলা পরিচলন বৃষ্টি হয়।
৫. চিত্রসহ শৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টিপাত ব্যাখ্যা কর।
উঃ ‘শৈল’ শব্দের অর্থ পর্বত এবং ‘উৎক্ষেপ’-এর অর্থ উপরে ওঠা। সাধারণ জলীয় বাষ্পপূর্ণ বায়ু পর্বতে বাধা পেয়ে ওপরে উঠে ঘনীভূত হয়ে যে বৃষ্টিপাত ঘটায়, তাকে শৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টিপাত বলে।এই ধরণের বৃষ্টিপাত সৃষ্টিতে শৈল অর্থাৎ পর্বত গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করে বলে। একে শৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টিপাত বলা হয়ে থাকে।
উদাহরণ:দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর আরবসাগরীয় শাখা পশ্চিমঘাট পর্বতের পশ্চিম ঢালে বাধা পেয়ে প্রচুর শৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টিপাত ঘটায়।
৬. পম্পাস অঞ্চলকে দক্ষিণ আমেরিকার শস্য ভান্ডার বলা হয় কেন?
উঃ কৃষিকাজে দক্ষিণ আমেরিকার পম্পাস অঞ্চল বেশ উন্নত । এখানকার উর্বর পলিমুক্তিকা ও পরিমিত বৃষ্টিপাত কৃষির পক্ষে অনুকূল । অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতির ব্যবহার এবং উন্নত প্রথায় এখানে কৃষিকাজ করায় উৎপাদনের পরিমান অনেক বেশি হয় । সেই কারণে পম্পাস অঞ্চলকে দক্ষিণ আমেরিকার শস্যভাণ্ডার বলা হয় ।
৭. ঘূর্ণবাত ও প্রতীপ ঘূর্ণবাত এর মধ্যে তিনটি পার্থক্য লেখ।
উঃ ১.নিম্নচাপ বিশিষ্ট ঝরকে ঘূর্নবাত বা সাইক্লোন বলা হয়ে থাকে।উচ্চচাপ বিশিষ্ট অঞ্চল থেকে বর্হিমুখী বায়ু প্রবাহকে প্রতীপ ঘূর্নবাত বলে।
২.চারিদিক থেকে বায়ু ঘূর্নবাত কেন্দ্রের দিকে ধেয়ে আসে অর্থাৎ বায়ু প্রবাহ কেন্দ্রমুখী হয়। প্রতীপ ঘূর্নবাতে বায়ু কেন্দ্র থেকে বাইরের দিকে যায় অর্থাৎ বায়ু প্রবাহ বর্হিমুখী।
৩. ঘূর্নবাতের কেন্দ্রের বায়ু উষ্ণ ও ঊর্ধবগামী হয়।প্রতীপ ঘূর্নবাতের কেন্দ্রে বায়ু ঠাণ্ডা ও নিম্নগামী হয়।
৮. আমাজন নদীর মোহনায় বদ্বীপ সৃষ্টি হয়নি কেন?
উঃ আমাজন অববাহিকা বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে অবস্থিত হওয়ায় ও প্রচুর পরিমাণে ঢালু হওয়ার কারণে সমগ্র অববাহিকার জল মূল নদী দিয়ে প্রবল বেগে আটলান্টিক মহাসাগরে মেশে । আমাজন নদীর মোহনা বেশ প্রশস্ত হওয়ায় সমুদ্রের জল নদীতে অবাধে প্রবেশ করে । মোহনা অঞ্চলে উপকূল সংলগ্ন সমুদ্রস্রোতও খুব শক্তিশালী । এইসব কারণে আমাজন নদীর মোহনায় কোনো বদ্বীপ সৃষ্টি হয়নি ।
৯. কানাডিয়ান শিল্ড অঞ্চলের জলবায়ু ও স্বাভাবিক উদ্ভিদ আলোচনা কর।
উঃ কানাডীয় শিল্ড অঞ্চলের সামগ্রিক জলবায়ু অতি শীতল মহাদেশীয়
প্রকৃতির । শিন্ড অঞ্চলের উত্তরাংশে অতি শীতল তুলা জলবায়ু দেখা যায় ।
বছরের সাত মাস এখানে তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নীচে থাকায় সমগ্র অঞ্চলটি
বরফাচ্ছন্ন থাকে । গ্রীষ্মকাল এখানে স্বল্পস্থায়ী , তাপমাত্রা গড়ে 10 °
সে .। মোট বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বছরে 40 সেমির কম । শিল্ড অঞ্চলের দক্ষিণ ও
দক্ষিণপূর্বের অংশটির জলবায়ু উদ্বু প্রকৃতির । শিল্ড অঞ্চলের উত্তরে অতি
শীতল জলবায়ুর জন্য শৈবাল , গুল্ম ও ঔষধি গাছ ছাড়া কোনো বড়ো গাছ জন্মায়
না । শিল্প অঞ্চলের দক্ষিণে ও দক্ষিণ পূর্বে প্রচুর পরিমাণে পাইন , ফার ,
বর্গ , ম্যাপল প্রভৃতি সরলবর্গীয় বৃক্ষের অরণ্য দেখা যায় । এই কাঠের
প্রাচুর্যতার কারণে কানাডা কান্ঠশিল্পে বেশ উন্নত । কানাডীয় শিল্ড অঞ্চলের
দক্ষিণ পূর্বাংশে ওক , এলম , সাদা সিডার , পাইন প্রভৃতি পর্ণমোচী উদ্ভিদ ও
সরলবর্গীয় উদ্ভিদের মিশ্র বনভূমি দেখা যায় ।
১০. উত্তর আমেরিকার শিল্পউন্নতির কারণ গুলি কি কি?
১১. তুন্দ্রা জলবায়ু অঞ্চলের স্বাভাবিক উদ্ভিদের নাম লেখ এবং কয়েকটি বৈশিষ্ট্য লেখ।
উঃ
১২. উচ্চতা অনুযায়ী মেঘ কয় প্রকার ও কি কি?
উঃ ভূ-পৃষ্ঠ থেকে উচ্চতা অনুযায়ী মেঘকে প্রধানতঃ তিন ভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে; যেমন—
[i] নিচু মেঘ (ভূ-পৃষ্ঠ থেকে উচ্চতা ২,১৩৫ মিটার),
[ii] মাঝারি উঁচু মেঘ (২,১৩৫ মিটার —৬,০৯৭ মিটার),
[iii] উঁচু মেঘ (৬,০৯৭ মিটার—১২,৩৫০ মিটার)।
১৩. ফেরেলের সূত্রটি লেখ।
উঃ কোরিওলিস বলের প্রভাবে বায়ুপ্রবাহ উচ্চচাপ থেকে নিম্নচাপের দিকে সোজাপথে প্রবাহিত না হয়ে উত্তর গোলার্ধে ডানদিকে এবং দক্ষিণ গোলার্ধে বামদিকে বেঁকে প্রবাহিত হয় ।
১৪. চিত্রসহ বৃষ্টিচ্ছায় অঞ্চল বর্ণনা করো।
উঃ পর্বতের প্রতিবাত ঢালে প্রচুর পরিমাণে বৃষ্টি হয় এবং এই বৃষ্টি হওয়ার পর বায়ু পর্বতের অনুবাত ঢালে আসে তখন জলীয় বাষ্পের পরিমাণ কমে যায় এবং বায়ু যত নীচে নামতে থাকে তার উন্নতা তত বাড়তে থাকে এবং বায়ুর জলীয় বাষ্প বহু ধারণের ক্ষমতা বাড়তে থাকে , ফলে বায়ু অসম্পৃক্ত হয়ে যায় । এইজন্য অনুবাত ঢালে বৃষ্টিপাত কম হয় এবং এই ঢালকে বৃষ্টিচ্ছায় অঞ্চল বলে ।
১৫. মেঘ কিভাবে সৃষ্টি হয়?
উঃ সূর্যের তাপে সমুদ্র , নদী , পুকুরের জল উত্তপ্ত হয়ে বাষ্পে পরিণত হয়ে বায়ুতে মেশে । এছাড়াও গাছপালার প্রস্বেদন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জলীয়বাষ্প বাতাসে যুক্ত হয় । এই জলীয়বাষ্পযুক্ত বায়ু সাধারণ বায়ু অপেক্ষা হালকা হয় এবং সহজে ওপরের দিকে উঠে যায় । ওপরে বায়ুর চাপ কম হওয়ায় জলীয়বাষ্পযুক্ত বায়ু প্রসারিত হয় । ওপরের শীতল বায়ুর সংস্পর্শে এসে জলীয় বাষ্পপূর্ণবায়ু তাড়াতাড়ি শীতল হয় ।
বায়ু যত শীতল হয় জলীয় বাষ্প ধরে রাখার ক্ষমতা তত কমে যায় । ধীরে ধীরে ওই আর্দ্র বায়ুর তাপমাত্রা শিশিরাঙ্কে এসে পৌঁছায় এবং বায়ু সম্পৃক্ত হয়ে পড়ে । এই সম্পৃক্ত বায়ু আরো শীতল হয়ে ঘনীভূত হয় এবং ছোটো ছোটো জলকণায় পরিণত হয় । এই জলকণা বায়ুতে ভাসমান ধূলিকণা , লবণকণাও নানাধরণের কঠিন কণিকাকে অবলম্বন করে মেঘ সৃষ্টি করে ।
১৬. লা প্লাটা নদীর গতিপথ বর্ণনা কর।
উঃ লা প্লাটা দক্ষিণ আমেরিকার সবচেয়ে সুন্দর নদী । প্যারাগুয়ে,উরুগুয়ে এবং পারানা জল প্রবাহের সম্মিলনের পরে, লা প্লাটা মোহনা গঠিত হয়। নৌবাহিনীর জাহাজ ডায়াজ ডি সোলিসের নেতৃত্বে প্রথমবারের মতো ইউরোপীয় পর্যটকদের একটি জাহাজের নৌকো ছিল। প্রাথমিকভাবে, গবেষকরা একটি প্রবাহ খুঁজছিলেন যা প্রশান্ত মহাসাগর এবং আটলান্টিকের মধ্যে একটি উত্তরণ হবে।
অধিবাসীরা নিজেদের বিশ্বাস করেন যে প্রাচীনকালে জলাশয়ের তলদেশে প্রচুর পরিমাণে সোনা পাওয়া যায়। লা প্লাটা নদীটি 320 কিলোমিটারের জন্য প্রসারিত এটি বিশ্বের সবচেয়ে বিস্তৃত মোহনা, তার আকার মাত্র 35 কিলোমিটার। কিছু কিছু স্থানে, মোহনারটি 100 কিমি পর্যন্ত প্রসারিত হয়, শীর্ষস্থানীয় স্থানে অবস্থিত, এটি কেপ অফ এন্টোনিও এবং মালদোনাটোমের মধ্যে অবস্থিত। এখানে, প্রস্থ নির্দেশক 200 কিলোমিটারের চিহ্ন অতিক্রম করেছে।
১৭. আয়ন বায়ু কাকে বলে? আয়ন বায়ুর বৈশিষ্ট্য গুলি লেখ।
উঃ কর্কটীয় উচ্চচাপ বলয় ও মকরীয় উচ্চচাপ বলয় থেকে নিরক্ষীয় নিম্নচাপ বলয়ের দিকে সারাবছর একই গতিবেগে যে বায়ু প্রবাহিত হয়, তাকে আয়ন বায়ু (Trade Winds) বলা হয় ।
বৈশিষ্ট্য:
১) এই বায় ২০০ উঃ থেকে ২০০ দঃ অক্ষরেখার মধ্যে প্রবাহিত হয়।
২) শীতকালে এই বায়ুর গতিবেগ বেশি থাকে।
৩) উত্তর পূর্ব বায়ু ঘণ্টায় ১৬ কিমি ও দক্ষিণ পূর্ব অয়ন বায়ু ঘণ্টায় ২২.৪ কিমি বেগে প্রবাহিত হয়।
১৮. নিয়ত বায়ু কাকে বলে? নিয়ত বায়ুর বৈশিষ্ট্য গুলি লেখ।
উঃ ভূপৃষ্ঠের বিভিন্ন অংশে কতকগুলি স্থায়ী উচ্চচাপ ও নিম্নচাপ বলয় থাকার জন্য কতকগুলি বায়ুও সারাবছর ধরে ওই উচ্চচাপ বলয়গুলি থেকে নিম্নচাপ বলয়গুলির দিকে নিয়মিতভাবে নির্দিষ্টপথে প্রবাহিত হয়। এদের বলে নিয়ত বায়ু।
বৈশিষ্ট্য:
1. উত্তর গােলার্ধে ঘণ্টায় 15-25 কিলােমিটার,দক্ষিণ গােলার্ধে ঘণ্টায় 25-35 কিলােমিটার বেগে প্রবাহিত হয়।
2.আয়ন বায়ু সাধারণত নিরক্ষরেখার দুদিকে 5° থেকে 25° অক্ষাংশের মধ্যে সারাবছর প্রবাহিত হয়।
3. কম উষ্ণ অঞ্চল থেকে বেশি উষ্ণ অঞলে প্রবাহিত হয় বলে এই বায়ুর উষ্ণতা ও জলীয় বাষ্প ধারণক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
১৯.উত্তর আমেরিকার হ্রদ অঞ্চলের পশুপালনের উন্নতির কারণ গুলি লেখ।
উঃ যে সকল কারণে হ্রদ অঞ্চলের পশুপালনে উন্নতি সেগুলি হল- ( i ) প্রচুর
পরিমাণে ভুট্টা , হে , ক্লোভার ঘাস জন্মায় , যা পশুখাদ্যের পর্যাপ্ত জোগান
দেয় ( ii ) হ্রদ অঞ্চলের পর্যাপ্ত জল পশুদের প্রয়োজনীয় জলের চাহিদা
মেটায় ( iii ) বিস্তীর্ণ সমভূমি অঞ্চলে পশুদের অগাধ বিচরণের সুবিধা ( iv )
এই অঞ্চলের শীতল জলবায়ুর জন্য দুধ ও দুগ্ধজাত দ্রব্য এবং মাংস প্রভৃতি
পচনশীল উপাদানের সহজ সংস্করণ করা যায় ।
২০.আয়ন বায়ুর প্রভাবে কিভাবে মহাদেশের পশ্চিমাংশে মরুভূমি সৃষ্টি হয়েছে ?
২১.পম্পাস অঞ্চলের ভূপ্রকৃতি ও নদনদী সম্পর্কে লেখো ।
উঃ । পম্পাস তৃণভূমি অঞ্চল নদীবাহিত পলিমৃত্তিকা এবং বায়ুবাহিত লোয়েস মৃত্তিকা দ্বারা গঠিত হয়েছে । এই অঞ্চল সমভূমি হলেও কোথাও কোথাও ছোটো পাহাড় বা টিলা দেখা যায় । পম্পাস অঞ্চল পশ্চিমে আন্দিজ পর্বতের পাদদেশ থেকে পূর্বে আটলান্টিক মহাসাগরের দিকে ঢালু । পারানা ও প্যারাগুয়ে এই অঞ্চলের প্রধান দুটি নদী । আর্জেন্টিনার রাজধানী বুয়েনাস এয়ার্স শহরের কাছে এই দুটি নদীর মিলিত প্রবাহ লা - প্লাটা নামে প্রবাহিত হয়ে আটলান্টিক মহাসাগরে পড়েছে ।
২২.হ্রদ অঞ্চলে কৃষির উন্নতির কারণগুলি লেখো ।
উঃ । হ্রদ অঞ্চল উত্তর আমেরিকার অন্যতম কৃষি উন্নত অঞ্চল । এই অঞ্চলে কৃষির উন্নতির কারণগুলি হল— ( 1 ) বিস্তীর্ন তরঙ্গায়িত সমতল ভূমি ( ii ) আধুনিক পদ্ধতিতে কৃষিকাজের সুবিধা ( ii ) শস্যাবর্তন পদ্ধতির প্রয়োগ ( iv ) হ্রদগুলি থেকে জলসেচের মাধ্যমে পর্যাপ্ত জল সহজেই পাওয়া যায় । ( v ) এখানকার উন্নত চার্নোজেম মৃত্তিকা কৃষিকার্যের পক্ষে আদর্শ । ( vi ) ঘনবসতির জন্য কৃষি ফসলের ব্যাপক চাহিদা ( vii ) নাতিশীতোয় ও আর্দ্র জলবায়ু , যে কারণে পরিমিত বৃষ্টিপাত ও উন্নতা ।
২৩.. কানাডার শিন্ড অঞ্চল শিল্পে উন্নত কেন ?
উঃ । কানাডার শিল্ড অঞ্চল শিল্পে উন্নত হওয়ার কারণগুলি হল- ( i ) এখানে পর্যাপ্ত বনভূমিতে বন্যপশুর লোমশ চামড়া ও প্রচুর খনিজ পদার্থ পাওয়া যায় । ( ii ) কানাডার উন্নত মানের প্রযুক্তি ও কারিগরী দক্ষতার সহায়তা পাওয়া যায় । ( iii ) স্থানীয় শীগুলি থেকে উৎপন্ন জলবিদ্যুৎ শক্তির প্রাপ্যতা । ( iv ) শিল্ড অঞ্চলের দক্ষিণ প্রান্তে পঞ্চ হ্রদ ও সেন্ট লরেন্স নদীর মাধ্যমে সৃষ্ট সুলভ জলপথের কারণে শিশু অঞ্চল শিল্পে উন্নত হয়েছে ।
✍️ প্রশ্নের মান-৫:
১. চিত্রসহ বৃষ্টিপাতের শ্রেণীবিভাগ কর।
উঃ উৎপত্তি ও বৈশিষ্ট্যগত তারতম্যের ভিত্তিতে বৃষ্টিপাতকে তিনভাগে ভাগ করা যায়, যথা—
1. পরিচলন বৃষ্টিপাত 2.শৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টিপাত 3.ঘূর্ণবাতজনিত বৃষ্টিপাত।
২. দক্ষিণ আমেরিকা কে ভূ-প্রাকৃতিক বিভাগে ভাগ
করে যে কোন একটি বিভাগের সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও।
উঃ দক্ষিণ আমেরিকার ভূ - প্রাকৃতিক বৈচিত্র্যকে প্রধানত চারভাগে ভাগ করা
হয়েছে । ( i ) পশ্চিমের পার্বত্য অঞ্চল , ( ii ) পশ্চিমের সংকীর্ণ
উপকূলীয় অঞ্চল , ( iii ) পূর্বের উচ্চভূমি অঞ্চল , ( iv ) মধ্যভাগের বিশাল
সমভূমি অঞ্চল ।
দক্ষিণ আমেরিকার পশ্চিমের পার্বত্য অঞ্চল : পশ্চিমের পার্বত্য অঞ্চলটি দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের পশ্চিমে প্রধানত আন্দিজ পর্বতমালা নিয়ে গঠিত । উত্তরে ক্যারিবিয়ান সাগর থেকে দক্ষিণে হর্ন অন্তরীপ পর্যন্ত এই পার্বত্য অঞ্চলটি বিস্তৃত । আন্দিজ পৃথিবীর দীর্ঘতম পর্বতমালা । আন্দিজ পৃথিবীর দ্বিতীয় উচ্চতম পর্বতশ্রেণি । অ্যাকোনোকাগুয়া আন্দিজ পর্বতের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ । আন্দিজ পর্বতমালার বেশ কিছু জায়গায় পর্বতবেষ্টিত মালভূমি আছে । যেমন — বলিভিয়া , ইকুয়েডর , পেরু , টিটিকাকা মালভূমি । এই মালভূমিতে অবস্থিত টিটিকাকা হ্রদ পৃথিবীর উচ্চতম হ্রদ । এর উচ্চতা 3,810 মিটার ।
৩. একটি চিত্র অঙ্কন করে পৃথিবীর বায়ুচাপ বলয় গুলির অবস্থান চিহ্নিত কর।
৪. উত্তর আমেরিকা কে ভূ-প্রাকৃতিক বিভাগে ভাগ করে যে কোন একটি বিভাগের সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও।
উঃ 👉 ভূ - প্রকৃতির তারতম্যের ভিত্তিতে উত্তর আমেরিকা মহাদেশকে তিনটি
ভাগে ভাগ করা হয় । যথা- ( i ) পশ্চিমের পার্বত্য অঞ্চল বা কর্ডিলেরা । (
ii ) মধ্যভাগের সমভূমি অঞ্চল । ( iii ) কানাডীয় বা লরেন্সীয় উচ্চভূমি ।
👉মধ্যভাগের সমভূমি অঞ্চল : এই সমভূমি একটি বৃহৎ সমভূমি বা Great plain নামে পরিচিত । কারণ , পশ্চিমের পার্বত্য অঞ্চল ও পূর্ব ভাগের উচ্চভূমি অঞ্চলের মাঝখানে উত্তরে সুমেরু থেকে দক্ষিণে মেক্সিকো উপসাগর পর্যন্ত এক বিশাল অঞ্চল জুড়ে এটি অবস্থান করছে । এখানকার উল্লেখযোগ্য নদীগুলি হল ম্যাকেঞ্জি , সেন্ট লরেন্স , মিসিসিপি - মিসৌরি প্রভৃতি । এখানে প্রচুর মালভূমি , টিলা ও নিম্ন মালভূমি রয়েছে । সব মিলিয়ে অঞ্চলটিকে তরঙ্গায়িত বলা যায় । এই সমভূমির উত্তর দিকে হাডসন উপসাগরকে বেষ্টন করে , কানাডিয়ান শিল্ড অবস্থান করছে । দীর্ঘদিন ধরে হিমবাহের ক্ষয়কার্য চলার ফলে এই অঞ্চলটি যায় সমভূমিতে পরিণত হয়েছে । এটি পৃথিবীর প্রাচীনতম ভূখণ্ডের অংশবিশেষ । এখানের উল্লেখযোগ্য হ্রদগুলি হল উইনিপেগ , ছোট বিয়ার , আথাবাস্কা , গ্রেট স্নেভ ইত্যাদি । এখানে হিমবাহের ক্ষয়কার্যের ফলে পাঁচটি বৃহৎ হ্রদের সৃষ্টি হয়েছে । এগুলি হল সুপিরিয়র , মিচিগান , হুরন , ইরি ও অন্টারিও । এই পাঁচটি হ্রদকে একত্রে পঞ্চহ্রদ ও বলা হয় ।
৫. দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের জলবায়ুর বৈচিত্রের কারণ গুলি লেখ।
উঃ এই মহাদেশের জলবায়ুর বৈচিত্র্যের অন্যতম কারণগুলি হল -( i ) অক্ষাংশগত অবস্থান : দক্ষিণে
আমেরিকার উত্তরদিকে আর প্রায় মাঝবরাবর মকরক্রান্তি রেখা বিস্তৃত ।
অক্ষাংশগত অবস্থান হিসাবে মহাদেশটির 70 শতাংশ উয়ুমন্ডলে 20 শতাংশ
নাতিশীতোষু মন্ডলে এবং 10 শতাংশ শীতল নাতিশীতোয় মন্ডলে অবস্থিত ।
( ii )
সমুদ্র থেকে দূরত্ব : মহাদেশটির উত্তরাংশ প্রশস্ত এবং দক্ষিণাংশ অত্যন্ত
সংকীর্ণ । এই কারণে মহাদেশের উত্তরে অভ্যন্তরভাগে সমুদ্রের প্রভাব পড়ে না ।
( iii ) ভূমির উচ্চতা : প্রশান্ত মহাসাগরীয় আর্দ্র পশ্চিমাবায়ু আন্দিজ
পর্বতে বাধা পায় বলে মহাদেশের দক্ষিণে প্রবেশ করতে পারে না । তাই এখানে
প্যাটাগোনিয়া মরুভূমির সৃষ্টি হয়েছে । আন্দিজ পর্বত , গায়না উচ্চভূমি ও
ব্রাজিলের উচ্চভূমি উন্নমণ্ডলে অবস্থিত হওয়া সত্ত্বেও এখানে উন্নতা
সারাবছর কম থাকে ।
( iv ) সমুদ্রস্রোতঃ একই অক্ষাংশে
অবস্থিত হওয়া সত্ত্বেও উয় ব্রাজিল স্রোতের জন্য মহাদেশের পূর্বদিকের
জলবায়ু উ হয় । শীতল পেরু স্রোতের জন্য পশ্চিমদিকের জলবায়ু শীতল হয় ।
( v
) বায়ুপ্রবাহ ঃ এই মহাদেশের পশ্চিমপ্রান্তে আটাকামা মরুভূমির সৃষ্টি
হয়েছে । দক্ষিণ - পূর্ব আয়ন বায়ু আন্দিজ পর্বতে বাধা পায় বলে এই
পর্বতের পশ্চিমঢাল বৃষ্টিচ্ছায় অঞ্চলে পরিণত হয়েছে ।