🌹একাদশ শ্রেণির বাংলা: সেমিস্টার-২:তেলেনাপোতা আবিষ্কার:প্রেমেন্দ্র মিত্র:লেখক পরিচিতি, গল্পের উৎস, বিষয়বস্তু, সম্পূর্ণ গল্প🌹

📚একাদশ শ্রেণির বাংলা: সেমিস্টার-২:তেলেনাপোতা আবিষ্কার:প্রেমেন্দ্র মিত্র:লেখক পরিচিতি, গল্পের উৎস, বিষয়বস্তু, প্রশ্নোত্তর📚

 

✍️লেখক পরিচিতি:

 

 ‘তেলেনাপোতা আবিষ্কার’ গল্পের লেখক প্রেমেন্দ্র মিত্র (১৯০৪-১৯৮৮) ছিলেন রবীন্দ্রোত্তর যুগের এক পরিচিত সাহিত্যিক। তিনি কবি, ছোটোগল্পকার এবং ঔপন্যাসিক হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থের মধ্যে ‘প্রথমা’, ‘সম্রাট’, ‘ফেরারি ফৌজ’, ‘সাগর থেকে ফেরা’ ইত্যাদি শামিল। সাহিত্য জগতে তাঁর অসামান্য অবদান থাকায় তাঁকে একাডেমী পুরস্কার এবং রবীন্দ্র পুরস্কারের মতো সম্মান লাভ হয়।

✍️গল্পের উৎস:

 

প্রেমেন্দ্র মিত্রের ছোটগল্প "তেলেনাপোতা আবিষ্কার" প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯৪৬ সালে তাঁর ছোটগল্পের সংকলন "কুড়িয়ে ছড়িয়ে"-তে। পরবর্তী সময়ে, ১৯৫২ সালে প্রকাশিত "প্রেমেন্দ্র মিত্রের শ্রেষ্ঠ গল্প" সংকলনেও এই গল্পটি স্থান পায়। এটি সেই সংকলন থেকে নেওয়া হয়েছে।

✍️ বিষয়বস্তু :

কলকাতা থেকে তেলেনাপোতা গ্রামে যাত্রা শুরু করে তিনজন যুবক। তাদের মধ্যে একজন হল মনিদা, যার জন্মস্থান এই তেলেনাপোতা গ্রাম। একসময় ম্যালেরিয়া মহামারীতে পুরো গ্রামটি প্রায় শ্মশানে পরিণত হয়েছিল এবং অনেকেই গ্রাম ছেড়ে শহরে চলে গিয়েছিল। মনিদাও তাদের মধ্যে একজন। বাকি দুজনের পরিচয় গল্পে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়নি। তাদের একজন হল প্রধান চরিত্র, যে মাছ ধরার শখের কারণে তেলেনাপোতায় আসতে চায়। অন্যজন হল পানশালার কষ্টকর অভ্যাসে আকৃষ্ট একজন, যিনি মূলত মদ্যপান করতে এসেছে।

কলকাতা থেকে তেলেনাপোতা যাওয়ার পথে গরম, অন্ধকার এবং মশার ভয়ানক গুঞ্জন এক অদ্ভুত পরিবেশ সৃষ্টি করে। রাতের অন্ধকারে তারা একটি গরুর গাড়িতে করে গ্রামে পৌঁছায়, এবং সেখানে পৌঁছানোর পর গ্রামটি মৃত নগরীর মতো নিস্তেজ মনে হয়। দুজন যুবক ঘুমিয়ে পড়লেও, প্রধান চরিত্র ছাদে উঠে পাশের বাড়ির জানালায় দাঁড়িয়ে থাকা একটি মেয়েকে দেখে। পরদিন সকালে মাছ ধরতে গিয়ে আবার তার দেখা হয়। কিন্তু, কোন মাছ না পেয়ে হতাশ হয়ে ফিরে আসে এবং জানতে পারে, ওই মেয়েটির নাম যামিনী।

যামিনীর বাড়িতে গিয়ে, প্রধান চরিত্রটি জানতে পারে যে, নিরঞ্জন নামে এক যুবক যামিনীকে বিয়ে করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আর ফিরে আসেনি। যামিনী অপেক্ষা করতে করতে তার দিন কাটাচ্ছে, আর তার মা এখনও আশায় দিন গুনছে যে নিরঞ্জন ফিরে এসে তার মেয়ে যামিনীকে বিয়ে করবে। মনিদা এবং তার সঙ্গী দুজনকে দেখে যামিনীর মা মনে করেন যে, নিরঞ্জন ফিরে এসেছে। তাই তিনি মনিদার কাছে যান, কিন্তু মনিদা বিরক্ত হয়ে সরে যান। তার পর, শখের মাছশিকারী বন্ধু আবেগপ্রবণ হয়ে মনিদার সঙ্গে গিয়ে যামিনীর মাকে জানায় যে, সে নিরঞ্জন এবং সে যামিনীকে বিয়ে করবে।

প্রধান চরিত্রটি তেলেনাপোতা থেকে ফিরে আসার সময় তার মাছ ধরার সরঞ্জাম রেখে যায়, ভেবেছিল যে, সে একদিন আবার ফিরে আসবে এবং যামিনীকে বিয়ে করবে। কিন্তু কলকাতায় ফিরে ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে অনেক দিন শয্যাশায়ী থাকে। সুস্থ হয়ে ওঠার পর, সে বুঝতে পারে যে যামিনী আর তেলেনাপোতা, সব কিছুই এখন শুধুই স্মৃতির মতো হয়ে গেছে। এবং যামিনী?? তার সঙ্গে কী ঘটল, তা জানার জন্য পুরো গল্প পড়তে হবে।

✍️প্রশ্নোত্তর(প্রশ্নের মান-৫):

 

 1."তাহলে হঠাৎ একদিন তেলেনাপোতা আপনিও আবিষ্কার করতে পারেন।"- তেলেনাপোতা আবিষ্কারের শর্তগুলি উল্লেখ করো। গল্পের নায়ক কীভাবে তেলেনাপোতা আবিষ্কার সমর্থ হয়েছিল লেখো। ৩+২=৫
উত্তর:

তেলেনাপোতা আবিষ্কারের শর্ত: 
প্রেমেন্দ্র মিত্রের "তেলেনাপোতা আবিষ্কার" গল্পে একটি রহস্যময় ও কল্পনাপ্রসূত স্থান খুঁজে পাওয়ার শর্ত উল্লেখ করা হয়েছে। তেলেনাপোতা আবিষ্কারের জন্য গল্পকার যে শর্তগুলির কথা বলেছেন তা হলো—  

1. শনি বা মঙ্গলবার দিনটি বেছে নিতে হবে।  
2. দুজন বন্ধু বা সঙ্গী সঙ্গে থাকা আবশ্যক।  
3. মাছ ধরার দক্ষতা না থাকলেও, এ বিষয়ে প্রবল উৎসাহ থাকা প্রয়োজন।  
4. পড়ন্ত বিকেলে ঠাসা ভিড়ের একটি বাসে চেপে যাত্রা শুরু করতে হবে।  
5. ভাদ্রের গরমে দীর্ঘ পথের ধাক্কা সামলে ঘণ্টাখানেক পরে কোনো নীচু জলাভূমির ধারে নামতে হবে।  

এসব শর্ত পূরণ করলেই তেলেনাপোতা আবিষ্কারের অভিজ্ঞতা অর্জন করা সম্ভব।  

নায়কের তেলেনাপোতা আবিষ্কার:
গল্পের নায়ক বন্ধুদের সঙ্গে তেলেনাপোতার উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। প্রথমে বাসে, পরে গোরুর গাড়িতে চড়ে তারা ধ্বংসপ্রাপ্ত একটি প্রাসাদে পৌঁছায়। বাসযোগ্য ঘরে অবস্থান করার পর, নায়ক সেই রাতেই ছাদে উঠে একটি দূরের বাড়ির জানালায় রহস্যময় ছায়ামূর্তি দেখে।  

পরদিন মাছ ধরতে গিয়ে সে ব্যর্থ হয় এবং লজ্জিত হয়। এরপর, তীব্র আবেগে যামিনীর মায়ের কাছে নিজের অনুভূতি প্রকাশের চেষ্টা করেও সফল হতে পারে না। তেলেনাপোতা থেকে ফিরে এসে নায়ক ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়, এবং তার স্মৃতি থেকে ধীরে ধীরে তেলেনাপোতার আবিষ্কারের মুহূর্তগুলি মুছে যেতে থাকে।  

তেলেনাপোতার এই আবিষ্কার গল্পের একটি রূপক, যা মানুষের আকাঙ্ক্ষা ও বাস্তবতার সংঘাতের প্রতীক।  

2."আপনার দুই বন্ধু তখন দুই কারণে অচেতন।" দুই বন্ধুর অচেতনতার সুযোগে গল্পের কথক যে অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছিল, তার বর্ণনা দাও। (৫)

উত্তর:
ভগ্ন অট্টালিকায় কথকের অভিজ্ঞতা: 
প্রেমেন্দ্র মিত্রের 'তেলেনাপোতা আবিষ্কার' গল্পে কথক এবং তার দুই সঙ্গী দীর্ঘ পথচলার ক্লান্তি নিয়ে তেলেনাপোতার একটি পুরোনো ভগ্নপ্রায় অট্টালিকায় আশ্রয় নেয়। সঙ্গীদের মধ্যে একজন মেঝেতে শতরঞ্জি বিছিয়ে ঘুমিয়ে পড়ার প্রস্তুতি নেয়, আর অন্যজন মদ্যপানে নিমগ্ন হয়ে যায়। তাদের এই নিস্তেজ অবস্থার সুযোগে কথক একা ছাদের দিকে যেতে মনস্থির করেন। ভাঙা সিঁড়ি দিয়ে টর্চ হাতে উঠে যাওয়ার সময় তিনি প্রতিটি ধাপে সতর্ক থাকেন, কারণ ইট-বালির খসে পড়ার সম্ভাবনা ছিল।  

ছাদে উঠে তিনি কৃষ্ণপক্ষের মৃদু চাঁদের আলোয় চারপাশের সৌন্দর্য লক্ষ্য করেন। ধ্বংসের মাঝে তিনি এক রহস্যময় মায়া অনুভব করেন। তার মনে হয়, এই জীর্ণ স্থানের কোনো গুপ্ত প্রকোষ্ঠে হয়তো বন্দি রাজকুমারী সোনার কাঠি ও রুপোর কাঠি পাশে নিয়ে ঘুমিয়ে রয়েছেন। হঠাৎ দূরের একটি জানালায় আলোর রেখা দেখতে পান এবং সেই আলোয় রহস্যময় ছায়ামূর্তি দেখা যায়। তবে পরে তিনি একে তার দৃষ্টিভ্রম মনে করেন।  

অবশেষে কথক উপলব্ধি করেন যে, এই ভগ্নপুরী ধ্বংসের নিদ্রায় নিমগ্ন এক মায়াবী স্থান, যা তাকে স্বপ্নের মতো অনুভূতি দিয়েছে। তিনি নীচে নেমে দুই বন্ধুর পাশে গিয়ে শুয়ে পড়েন এবং ঘুমিয়ে যান।  

3."আপনার আসল উদ্দেশ্যে আপনি নিশ্চয় বিস্মৃত হবেন না।"
আসল উদ্দেশ্যটি কী? উদ্দেশ্যটি আসল কেন এবং তা কতদূর পূরণ হয়েছিল?

উত্তর:

1. আসল উদ্দেশ্য:
প্রেমেন্দ্র মিত্রের ‘তেলেনাপোতা আবিষ্কার’ গল্পে মূল চরিত্রের প্রধান লক্ষ্য ছিল মাছ ধরা। যদিও তেলেনাপোতার ঐতিহাসিক প্রাচীন বাড়ি এবং মায়াবী পরিবেশ তাকে আকর্ষণ করে, তার ভ্রমণের মূল কারণ ছিল মৎস্যশিকার।

2. উদ্দেশ্যকে ‘আসল’ বলার কারণ:
তেলেনাপোতার পরিবেশ ছিল চমকপ্রদ ও মোহনীয়, যা তাকে মুগ্ধ করেছিল। কিন্তু তার যাত্রার উদ্দেশ্য ছিল শুধুমাত্র মাছ ধরা। তার লক্ষ্য ছিল সরল এবং স্পষ্ট। তেলেনাপোতার সৌন্দর্য তার জন্য উপভোগ্য হলেও, সেটি তার মূল লক্ষ্য ছিল না। তাই মাছ ধরাকে তার ‘আসল’ উদ্দেশ্য বলা হয়েছে।

3. উদ্দেশ্য পূরণ হয়েছিল কি না:
গল্পে দেখা যায়, নায়কের আসল উদ্দেশ্য পূরণ হয়নি। মাছ ধরার জন্য সে অনেক চেষ্টা করলেও, একটিও মাছ তার বঁড়শিতে ধরা পড়েনি। এমনকি একটি মাছ ধরার সম্ভাবনা তৈরি হলেও, তার অসাবধানতার কারণে সেটি হাতছাড়া হয়। শেষপর্যন্ত তাকে ব্যর্থ হয়ে খালি হাতে ফিরে আসতে হয়।

এই ঘটনাগুলি চরিত্রের অভিজ্ঞতা এবং তার আসল লক্ষ্য পূরণের ব্যর্থতাকে স্পষ্টভাবে তুলে ধরে।

4."কে, নিরঞ্জন এলি বাবা?"-নিরঞ্জন কে? কোন্ পরিস্থিতিতে গল্পের নায়ক নিরঞ্জনের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন? 

উত্তর: 

নিরঞ্জনের পরিচয়:
প্রেমেন্দ্র মিত্রের "তেলেনাপোতা আবিষ্কার" গল্পে নিরঞ্জন যামিনীর মায়ের দূরসম্পর্কের বোনপো। ছোটবেলায় যামিনীর বিয়ের প্রস্তাবও নিরঞ্জনের সঙ্গে ঠিক হয়েছিল।  

নায়কের নিরঞ্জনের ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়া:

 
গল্পের নায়ক মণি, যামিনীর বাড়িতে দুপুরে খেতে গিয়ে পরিস্থিতি কঠিন হয়ে ওঠে। যামিনী ও তার মা, নিরঞ্জনের ব্যাপারে জেদ ধরে রাখায় মণি নিজেকে নিরঞ্জন হিসেবে পরিচয় দেয়। কারণ, যামিনীর মা বিশ্বাস করতেন যে, নিরঞ্জন বিদেশ থেকে ফিরে এসে যামিনীকে বিয়ে করবে। বাস্তবে নিরঞ্জন বিদেশে যায়নি এবং সে যামিনীর মাকে মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে চলে গেছে।  

মণি, নিরঞ্জনের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে বৃদ্ধা যামিনীর মায়ের দুঃখ ও কষ্টের প্রতি সহানুভূতি দেখিয়ে তার পরিস্থিতি সামলানোর চেষ্টা করে। এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে মণি, "না মাসিমা, আর পালাব না" বলে নিরঞ্জনের ভূমিকায় এসে যামিনীর মায়ের মনকে কিছুটা শান্ত করতে সক্ষম হয়। 

5.‘তেলেনাপোতা আবিষ্কার’-গল্পে যামিনীর চরিত্র আলোচনা করো।

উত্তরঃ

প্রেমেন্দ্র মিত্রের  'তেলেনাপোতা আবিষ্কার' গল্পে যামিনী একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র। তার দৈন্যদশা এবং গভীর মানবিক গুণাবলি গল্পের মূল আকর্ষণ। এখানে তার চরিত্রের কিছু বৈশিষ্ট্য আলোচনা করা হল।

সেবাপরায়ণতা: 
যামিনী তার অসুস্থ মায়ের প্রতি যে আন্তরিক সেবা দেখায়, তা গল্পে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সে কষ্টে থাকা মাকে যত্ন সহকারে দেখাশোনা করে এবং কথক ও তার বন্ধুদের খাওয়ার আমন্ত্রণ জানিয়ে স্নেহ প্রদর্শন করে।

ধৈর্যশীলতা:
তেলেনাপোতার নির্জন, অবহেলিত পরিবেশে যামিনী তার বৃদ্ধা মাকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করে। যদিও সে নিরঞ্জনের নির্মম প্রতারণায় ভোগে, তবুও তার মন থেকে ক্ষোভ বা প্রতিশোধের ভাবনা উধাও হয়ে যায়।

মনের সুকোমলতা:
যামিনী, তার গভীর প্রেমের জন্য নির্মম প্রতারণার শিকার হয়েছে, কিন্তু তার মন ও হৃদয়ের মাধুর্য কখনও হারায় না। তার নিখুঁত হাসি এবং প্রেমময় ব্যক্তিত্ব গল্পের একটি উল্লেখযোগ্য দিক।

সতর্কতায় নিষ্ঠা:
যামিনী জানে যে নিরঞ্জন তাকে ছেড়ে চলে গেছে এবং তাকে কোনোদিন ফিরবে না। তবে, সে কখনও তার অন্ধ মাকে এই সত্যটি জানাতে দেয়নি। অত্যন্ত সতর্কতা ও নিষ্ঠার সাথে সে তার দিনগুলি অতিবাহিত করেছিল।

সপ্রতিভতা: 
যামিনী তার কথাবার্তা এবং আচরণে কোনোভাবেই লজ্জিত বা সংকোচিত ছিল না। একবার, যখন কথক মাছ ধরতে বসেছিল, তখন তার ফাতনায় টান পড়লে যামিনী দ্রুত বলে উঠেছিল, "বসে আছেন কেন? টান দিন।"

এইভাবে, যামিনীর চরিত্র সেবাপরায়ণতা, ধৈর্যশীলতা, সপ্রতিভতা, সতর্কতা এবং মনের সুকোমলতা দ্বারা পূর্ণ। তার এই গুণাবলির সমাহার তাকে এক অসাধারণ চরিত্র হিসেবে গড়ে তোলে।