🌹একাদশ শ্রেণির ইতিহাস: সেমিস্টার-২: অধ্যায়ভিত্তিক প্রশ্নোত্তর:অধ্যায়-৩: দিগন্তের প্রসার(প্রশ্নের মান-৩,৪,৮)🌹

📚একাদশ শ্রেণির ইতিহাস: সেমিস্টার-২: অধ্যায়ভিত্তিক প্রশ্নোত্তর:অধ্যায়-৩: দিগন্তের প্রসার(প্রশ্নের মান-৩,৪,৮)📚

 

✍️প্রশ্নের মান-৩:

 

 1.'বৈজ্ঞানিক বিপ্লব' বলতে কী বোঝো?

 

উঃ বৈজ্ঞানিক বিপ্লব ১৬শ ও ১৭শ শতকে ঘটে, যখন বিজ্ঞানীরা প্রথাগত ধর্মীয় বিশ্বাস ও ধারণার বিরুদ্ধে পরীক্ষা ও পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে নতুন তত্ত্ব প্রতিষ্ঠা করেন। কোপার্নিকাস সূর্যকেন্দ্রিক তত্ত্ব প্রবর্তন করেন, গ্যালিলিও টেলিস্কোপের মাধ্যমে আকাশ পর্যবেক্ষণ করেন, কেপলার গ্রহগুলির কক্ষপথের গাণিতিক মডেল তৈরি করেন, এবং নিউটন মহাকর্ষের তত্ত্ব প্রদান করেন। বৈজ্ঞানিক বিপ্লবের ফলে আধুনিক বিজ্ঞান, পরীক্ষামূলক পদ্ধতি ও যুক্তির ভিত্তিতে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি হয়, যা প্রযুক্তি ও সমাজে ব্যাপক পরিবর্তন আনতে সাহায্য করে এবং আধুনিক যুগের ভিত্তি স্থাপন করে।

2. কাকে কেন 'আধুনিক বিজ্ঞানচর্চার জনক' বলা হয়?

 

উঃ গ্যালিলিও গ্যালিলেইকে 'আধুনিক বিজ্ঞানচর্চার জনক' বলা হয়, কারণ তিনি বৈজ্ঞানিক চিন্তা ও গবেষণায় বিপ্লব ঘটান। তার অবদানগুলি নিম্নরূপ:

1. টেলিস্কোপের উদ্ভাবন: গ্যালিলিও টেলিস্কোপ তৈরি করেন, যার মাধ্যমে তিনি আকাশে নতুন নতুন পর্যবেক্ষণ করতে সক্ষম হন।
   
2. সূর্যকেন্দ্রিক তত্ত্বের সমর্থন: গ্যালিলিও কোপার্নিকাসের সূর্যকেন্দ্রিক তত্ত্বের পক্ষে প্রমাণ দেন, যা পূর্ববর্তী পৃথিবীকেন্দ্রিক ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করে।
   
3. বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির উন্নয়ন: গ্যালিলিও পরীক্ষামূলক পদ্ধতির মাধ্যমে প্রকৃতির ঘটনার ব্যাখ্যা দেন, যা বৈজ্ঞানিক গবেষণার জন্য একটি নতুন দিক উন্মোচন করে।

4. আধুনিক বিজ্ঞানচর্চার ভিত্তি স্থাপন: তার কাজ বিজ্ঞানের উন্নয়নে পরীক্ষামূলক গবেষণা ও পর্যবেক্ষণের গুরুত্বকে প্রতিষ্ঠিত করে, যা আধুনিক বিজ্ঞানচর্চার ভিত্তি রচনা করে।

এ কারণে, তাকে আধুনিক বিজ্ঞানচর্চার জনক হিসেবে সম্মানিত করা হয়।

3. কাকে, কেন 'আরব দর্শনের জনক' বলা হয়?

 

উঃ 'আরব দর্শনের জনক' বলা হয় আল-ফারাবি-কে। তিনি ১০ম শতকে ইসলামি দর্শন ও বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। তার অবদানগুলি নিম্নরূপ:

1. দর্শনীয় চিন্তার বিকাশ: আল-ফারাবি প্লেটো ও অ্যারিস্টটল-এর চিন্তাধারা অনুসরণ করে ইসলামী দর্শনকে নতুন দৃষ্টিভঙ্গিতে উন্নীত করেন। তিনি সৃষ্টির শুরু, ইश्वरতত্ত্ব, এবং নৈতিকতা সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ তত্ত্ব প্রদান করেন।
 
2. রাজ্যনীতি ও রাষ্ট্রতত্ত্ব: আল-ফারাবি তার কর্মে রাজনৈতিক দর্শনের উপরও গুরুত্ব দেন। তিনি একটি আদর্শ রাষ্ট্রের ধারণা দেন, যেখানে জ্ঞানী ব্যক্তি রাজনীতি পরিচালনা করবে।

3. জ্ঞান ও বিজ্ঞানের সমন্বয়: তিনি দার্শনিক চিন্তা এবং বিজ্ঞানের মধ্যে একটি সমন্বয় প্রতিষ্ঠা করেন, যা ইসলামী দর্শন ও বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে অগ্রগতি ঘটায়।

এ কারণে, তাকে 'আরব দর্শনের জনক' হিসেবে সম্মানিত করা হয়।

4. কাকে, কেন 'খনিজ বিদ্যার জনক' বলা হয়?

 

উঃ 'খনিজ বিদ্যার জনক' বলা হয় জর্জিয়াস অ্যাগ্রিকোলা-কে। তিনি ১৫৫৬ সালে তার বিখ্যাত বই ‘De Re Metallica’ প্রকাশ করেন, যেখানে খনন, ধাতু নিষ্কাশন, এবং প্রক্রিয়াকরণের আধুনিক পদ্ধতি বিশদভাবে ব্যাখ্যা করা হয়। তার অবদানগুলি নিম্নরূপ:

1. খনন প্রযুক্তির বিবরণ: অ্যাগ্রিকোলা খনিজ পদার্থ ও ধাতু নিষ্কাশনের পদ্ধতিগুলি বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করেন, যা আধুনিক খনিজ বিদ্যার ভিত্তি স্থাপন করে।

2. খনিজ পদার্থের শ্রেণিবিন্যাস: তিনি খনিজ পদার্থগুলিকে শ্রেণিবদ্ধ করে তাদের বৈশিষ্ট্য ও গঠন ব্যাখ্যা করেন, যা খনিজ বিদ্যার উন্নয়নে সহায়ক হয়।

3. বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির প্রয়োগ: তিনি পরীক্ষামূলক পদ্ধতি ব্যবহার করে খনিজ গবেষণার গুরুত্ব বাড়ান, যা এই বিদ্যাকে বিজ্ঞানসম্মত করে তোলে।

এই কারণে, অ্যাগ্রিকোলা-কে 'খনিজ বিদ্যার জনক' বলা হয়।

5. জ্যোতিষ শাস্ত্র চর্চার সূচনা হয় কীভাবে?

 

উঃ জ্যোতিষ শাস্ত্রের সূচনা হয় প্রাচীন সভ্যতাগুলির আকাশ পর্যবেক্ষণ থেকে, যেখানে মানুষ বিভিন্ন গ্রহ-নক্ষত্রের গতিবিধি দেখে তাদের জীবন ও প্রাকৃতিক ঘটনাগুলির মধ্যে সম্পর্ক খোঁজার চেষ্টা করত। বিভিন্ন সভ্যতায় জ্যোতিষশাস্ত্রের ভিন্ন ভিন্ন ধারা বিকশিত হয়:

1. মেসোপটেমিয়া: প্রায় ৪০০০ খ্রিষ্টপূর্বে মেসোপটেমিয়ায় জ্যোতিষশাস্ত্রের প্রাথমিক চর্চা শুরু হয়। সুমেরীয়রা গ্রহ-নক্ষত্রের অবস্থান ও গতিবিধি নির্ধারণ করে তাদের দৈনন্দিন জীবন ও কৃষিকাজে সাহায্য পেত।

2. প্রাচীন মিশর: মিশরে জ্যোতিষশাস্ত্রের মাধ্যমে সময় মাপা, মরশুম নির্ধারণ এবং ধর্মীয় আচার পালন করা হতো।

3. ভারত ও চীন: প্রাচীন ভারত ও চীনে গ্রহ-নক্ষত্রের অবস্থানের ওপর ভিত্তি করে ভবিষ্যৎ নির্ধারণ এবং সামাজিক আচার-অনুষ্ঠান পরিচালনা করত।

4. গ্রিক সভ্যতা: গ্রিকরা জ্যোতিষশাস্ত্রকে দর্শনের সাথে যুক্ত করে এবং পিথাগোরাস ও প্লেটোর মতো দার্শনিকেরা জ্যোতিষশাস্ত্রের ওপর বিশদ আলোচনা করেন।

এইভাবে বিভিন্ন সভ্যতায় আকাশ পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে জ্যোতিষ শাস্ত্রের বিকাশ ঘটে।

6. জ্যোতিষশাস্ত্রের সঙ্গে জ্যোতির্বিজ্ঞানের সম্পর্ক কিরূপ?

 

উঃ জ্যোতিষশাস্ত্র এবং জ্যোতির্বিজ্ঞানের মধ্যে প্রাথমিকভাবে সম্পর্ক থাকলেও তারা ভিন্ন শাখা। উভয় ক্ষেত্রেই গ্রহ-নক্ষত্রের গতিবিধি নিয়ে কাজ করা হয়, তবে তাদের উদ্দেশ্য ও পদ্ধতিতে বড় পার্থক্য রয়েছে।

1. জ্যোতিষশাস্ত্র: এটি আধ্যাত্মিক এবং প্রায়ই ধর্মীয় ভিত্তিতে তৈরি, যেখানে বিশ্বাস করা হয় যে গ্রহ ও নক্ষত্রের অবস্থান মানুষের জীবনে প্রভাব ফেলে। এটি ব্যক্তিগত ও সামাজিক ঘটনার পূর্বাভাস দেয় এবং ভাগ্য নির্ধারণের চেষ্টা করে।

2. জ্যোতির্বিজ্ঞান: এটি একটি বিজ্ঞান যা মহাবিশ্বের গঠন, গ্রহ-নক্ষত্রের গতি, এবং প্রাকৃতিক ঘটনাগুলি পরীক্ষামূলক পদ্ধতিতে অধ্যয়ন করে। জ্যোতির্বিজ্ঞান পরীক্ষা ও পর্যবেক্ষণকে গুরুত্ব দেয় এবং এটি প্রমাণভিত্তিক গবেষণা করে।

3. ভিন্ন উদ্দেশ্য: জ্যোতিষশাস্ত্র ভবিষ্যৎ নির্ধারণের উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হলেও জ্যোতির্বিজ্ঞান মহাবিশ্বের প্রকৃতির ব্যাখ্যা দেয়।

এ কারণে, যদিও উভয়ের উৎপত্তি আকাশ পর্যবেক্ষণে, তাদের উদ্দেশ্য ও বৈজ্ঞানিক ভিত্তি ভিন্ন।

7. কোপারনিকাসের মতবাদ কী?

 

উঃ কোপারনিকাসের মতবাদ হল সূর্যকেন্দ্রিক তত্ত্ব, যা তিনি ১৫৪৩ সালে তার বিখ্যাত গ্রন্থ ‘De Revolutionibus Orbium Coelestium’-এ প্রকাশ করেন। এই তত্ত্বে তিনি উল্লেখ করেন যে সূর্য মহাবিশ্বের কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থিত এবং পৃথিবীসহ অন্যান্য গ্রহগুলি সূর্যকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয়।

কোপারনিকাসের মতবাদের মূল বিষয়:

1. সূর্য স্থির থাকে এবং মহাবিশ্বের কেন্দ্র হিসেবে কাজ করে।
2. পৃথিবীসহ অন্যান্য গ্রহগুলি সূর্যের চারপাশে নির্দিষ্ট কক্ষপথে ঘোরে।
3. পৃথিবীর ঘূর্ণনের ফলে দিন ও রাতের সৃষ্টি হয়।
4. চন্দ্র পৃথিবীকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয়।

কোপারনিকাসের এই তত্ত্ব পূর্ববর্তী পৃথিবীকেন্দ্রিক মতবাদকে চ্যালেঞ্জ করে এবং পরবর্তীতে বৈজ্ঞানিক বিপ্লবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

8. 'কোপার্নিকাসের বিপ্লব' বলতে কী বোঝো?

 

উঃ 'কোপার্নিকাসের বিপ্লব' বলতে বোঝায় ১৫৪৩ সালে নিকোলাস কোপার্নিকাসের সূর্যকেন্দ্রিক তত্ত্বের প্রবর্তন, যা প্রথাগত পৃথিবীকেন্দ্রিক তত্ত্বকে চ্যালেঞ্জ করে বিজ্ঞান ও জ্যোতির্বিজ্ঞানে একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করে। কোপার্নিকাস প্রথম প্রস্তাব করেন যে সূর্য মহাবিশ্বের কেন্দ্র এবং পৃথিবীসহ অন্যান্য গ্রহগুলো সূর্যকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয়।

কোপার্নিকাসের বিপ্লবের মূল বৈশিষ্ট্য:

1. মহাবিশ্বের গঠন সম্পর্কে নতুন ধারণা: তার তত্ত্ব প্রমাণ করে যে পৃথিবী স্থির নয়, বরং এটি সূর্যের চারপাশে ঘুরে।

2. প্রথাগত চিন্তার পরিবর্তন: পূর্ববর্তী পৃথিবীকেন্দ্রিক ধারণা, যা আরিস্টটল ও টলেমি সমর্থন করেছিলেন, তা পরিবর্তন করে সূর্যকে কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হয়।

3. বৈজ্ঞানিক চিন্তার বিকাশ: এই তত্ত্বের মাধ্যমে বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি নতুনভাবে প্রসারিত হয় এবং এটি গ্যালিলিও, কেপলার, ও নিউটনের মতো বিজ্ঞানীদের গবেষণাকে প্রভাবিত করে।

এই বিপ্লব বৈজ্ঞানিক বিপ্লবের ভিত্তি স্থাপন করে এবং আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞানের সূচনা করে।

9. কাকে, কেন হেলেনিস্টিক কোপার্নিকাস বলা হয়?

 

উঃ হেলেনিস্টিক কোপার্নিকাস বলা হয় প্রাচীন গ্রিক জ্যোতির্বিজ্ঞানী আরিস্টার্কাসকে। তিনি কোপার্নিকাসের বহু পূর্বে, প্রায় ৩য় শতাব্দীতে, প্রথমবারের মতো সূর্যকেন্দ্রিক তত্ত্বের ধারণা প্রদান করেছিলেন।

আরিস্টার্কাসের অবদান:

1. আরিস্টার্কাস প্রস্তাব করেছিলেন যে সূর্য মহাবিশ্বের কেন্দ্রে অবস্থিত এবং পৃথিবীসহ অন্যান্য গ্রহ সূর্যকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয়।

2. তিনি পৃথিবীর ঘূর্ণনের ধারণা প্রদান করেন, যা দিন ও রাতের সৃষ্টি করে।

3. তার এই ধারণা ঐ সময়ে জনপ্রিয় না হলেও পরবর্তীকালে কোপার্নিকাসের তত্ত্বের ভিত্তি স্থাপন করে।

এই কারণে, প্রাচীনকালে সূর্যকেন্দ্রিক মতবাদ প্রচারের জন্য তাকে হেলেনিস্টিক কোপার্নিকাস বলা হয়।

10. কাকে কেন 'আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞানের জনক' বলা হয়?

 

উঃ 'আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞানের জনক' বলা হয় গ্যালিলিও গ্যালিলিকে। ১৬০৯ সালে তিনিই প্রথম টেলিস্কোপ ব্যবহার করে মহাকাশ পর্যবেক্ষণ করেন, যা জ্যোতির্বিজ্ঞানে বিপ্লব ঘটায়। তার গবেষণাগুলি জ্যোতির্বিজ্ঞানে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করে এবং কোপার্নিকাসের সূর্যকেন্দ্রিক তত্ত্বকে সমর্থন করে।

গ্যালিলিওর অবদান:

1. টেলিস্কোপ ব্যবহার: গ্যালিলিও তার নির্মিত টেলিস্কোপের মাধ্যমে চাঁদের পৃষ্ঠ, বৃহস্পতি গ্রহের উপগ্রহ, শুক্র গ্রহের কলা, এবং সূর্যের কালো দাগ পর্যবেক্ষণ করেন।

2. সূর্যকেন্দ্রিক তত্ত্বের সমর্থন: তার পর্যবেক্ষণ প্রমাণ করে যে গ্রহগুলো সূর্যের চারপাশে আবর্তিত হয়, যা কোপার্নিকাসের তত্ত্বকে শক্তিশালী করে।

3. বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির প্রয়োগ: গ্যালিলিও বিজ্ঞানকে পর্যবেক্ষণ ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে বিকাশিত করেন, যা আধুনিক বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গির ভিত্তি স্থাপন করে।

এই কারণে, গ্যালিলিওকে 'আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞানের জনক' হিসেবে সম্মানিত করা হয়।

11. কাকে, কেন 'দৃশ্যমান জ্যোতির্বিজ্ঞানের জনক' বলা হয়?

 

উঃ 'দৃশ্যমান জ্যোতির্বিজ্ঞানের জনক' বলা হয় গ্যালিলিও গ্যালিলিকে, কারণ তিনিই প্রথম টেলিস্কোপের মাধ্যমে মহাকাশের দৃশ্যমান পর্যবেক্ষণ করেন এবং প্রমাণসহ বিভিন্ন জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব প্রদান করেন।

গ্যালিলিওর এই বিশেষণ পাওয়ার কারণ:

1. টেলিস্কোপ ব্যবহার: ১৬০৯ সালে গ্যালিলিও টেলিস্কোপ ব্যবহার করে মহাকাশ পর্যবেক্ষণ করেন, যা ছিল সে সময়ের জন্য এক নতুন আবিষ্কার।

2. মহাকাশের প্রথম দৃশ্যমান প্রমাণ: তিনি চাঁদের পৃষ্ঠে খাঁজ ও পাহাড়, বৃহস্পতির চারটি উপগ্রহ, শুক্রের কলা, এবং সূর্যের কালো দাগ পর্যবেক্ষণ করেন, যা আগে দৃশ্যমানভাবে প্রমাণিত ছিল না।

3. প্রমাণভিত্তিক জ্যোতির্বিজ্ঞান: গ্যালিলিও তার পর্যবেক্ষণ ও চিত্রায়ণের মাধ্যমে জ্যোতির্বিজ্ঞানে প্রমাণভিত্তিক গবেষণার সূচনা করেন, যা তাকে দৃশ্যমান জ্যোতির্বিজ্ঞানের জনক হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে।

এভাবে, তার পর্যবেক্ষণই জ্যোতির্বিজ্ঞানে দৃশ্যমান তথ্য সংগ্রহের যুগের সূচনা করে।

12. জ্যোতির্বিজ্ঞানে জিওরদানো ব্রুনোর অবদান কী ছিল?
অথবা, জিওরদানো ব্রুনো কি জন্য বিখ্যাত?

 

উঃ জিওরদানো ব্রুনো (1548-1600) ছিলেন এক Italian দার্শনিক এবং জ্যোতির্বিজ্ঞানী, যিনি তাঁর যুগের প্রচলিত ধারণাগুলি চ্যালেঞ্জ করে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি প্রধানত দুটি কারণে বিখ্যাত:

1. সূর্যকেন্দ্রিক তত্ত্বের সমর্থন: ব্রুনো কোপার্নিকাসের সূর্যকেন্দ্রিক তত্ত্বকে সমর্থন করেন এবং পৃথিবীসহ অন্যান্য গ্রহের সূর্যের চারপাশে ঘোরার ধারণাকে গ্রহণ করেন। তিনি আরও প্রস্তাব করেন যে, আমাদের সৌরজগতের মতো আরও অসংখ্য সৌরজগৎ মহাবিশ্বে বিদ্যমান, যা তখনকার প্রথাগত চিন্তার বিপরীত ছিল।

2. মহাবিশ্বের অসীমতা: তিনি মহাবিশ্বকে অসীম ও অনন্ত হিসেবে দেখেছিলেন, যেখানে প্রতিটি তারা (নক্ষত্র) আসলে একটি সূর্য এবং তার আশেপাশে গ্রহ থাকতে পারে। এটি তখনকার সীমিত মহাবিশ্বের ধারণার বিরুদ্ধে ছিল।

ব্রুনোর এই মতবাদগুলি তাকে ধর্মীয় কর্তৃপক্ষের বিরোধিতা ও অত্যাচারের সম্মুখীন করেছিল এবং 1600 সালে তাকে যীশু খ্রীষ্টের বিরুদ্ধে heresy (অশুদ্ধ বিশ্বাস) প্রচারের জন্য পুড়িয়ে মারা হয়। তবে তার ধারণাগুলি পরবর্তী জ্যোতির্বিজ্ঞানী এবং বৈজ্ঞানিকদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ ছিল।

13. ভৌগোলিক অভিযান বা আবিষ্কার বলতে কী বোঝো?

 

উঃ ভৌগোলিক অভিযান বা আবিষ্কার বলতে বোঝানো হয় নতুন ভূমি বা অঞ্চলের সন্ধান, যা পূর্বে অজানা ছিল, এবং সেই অঞ্চলে যাত্রা বা অনুসন্ধান করা। এটি সাধারণত ১৫শ ও ১৬শ শতাব্দীতে ইউরোপীয় দেশগুলোর দ্বারা পরিচালিত হয়েছিল, যেখানে সমুদ্র পথে নতুন বাণিজ্যপথ খোঁজা এবং নতুন অঞ্চলের প্রতি আগ্রহ ছিল। এই অভিযানগুলোর মাধ্যমে পৃথিবীর মানচিত্রে নতুন ভূখণ্ড যুক্ত হয় এবং বৈশ্বিক বাণিজ্য, সংস্কৃতি ও তথ্যের আদান-প্রদান শুরু হয়।

উল্লেখযোগ্য ভৌগোলিক অভিযানগুলোর মধ্যে:
1. কোলম্বাসের আমেরিকা আবিষ্কার (১৪৯২)
2. মাগেলানের বিশ্বভ্রমণ (১৫২২)
3. ভাস্কো দা গামার ভারত আবিষ্কার (১৪৯৮)

এই অভিযানগুলোর ফলস্বরূপ নতুন বাণিজ্যপথের উদ্ভব, উপনিবেশ স্থাপন, এবং বিশ্বব্যাপী রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্কের বিকাশ ঘটে।

14. ভৌগোলিক আবিষ্কারের দুটি কারণ উল্লেখ করো।

 

উঃ ভৌগোলিক আবিষ্কারের দুটি প্রধান কারণ হলো:

1. বাণিজ্য প্রসারের ইচ্ছা: ইউরোপীয় দেশগুলো নতুন বাণিজ্যপথ ও সম্পদ খুঁজতে চেয়েছিল, বিশেষ করে মসলার মতো মূল্যবান পণ্যের জন্য। পূর্ববর্তী স্থলপথে বাণিজ্যব্যয় বেশি ছিল এবং মধ্যস্থতাকারীদের ওপর নির্ভর করতে হতো, তাই সমুদ্রপথে নতুন পথ আবিষ্কার তাদের জন্য লাভজনক ছিল।

2. ধর্মপ্রচার ও উপনিবেশ স্থাপন: ইউরোপীয় জাতিগুলো খ্রিস্টধর্ম প্রচার এবং নতুন অঞ্চলে রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করতে চেয়েছিল। তারা নতুন ভূমিতে ধর্মপ্রচার এবং উপনিবেশ স্থাপনের মাধ্যমে নিজেদের আধিপত্য বিস্তার করতে আগ্রহী ছিল।

15. ভৌগোলিক অভিযানে বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারের ভূমিকা কী ছিল?

 

উঃ ভৌগোলিক অভিযানে বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারগুলোর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল, যা অভিযাত্রীদের নিরাপত্তা এবং সফলতার সম্ভাবনা বাড়িয়েছিল। কিছু প্রধান বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার ও উন্নতির ভূমিকা নিম্নরূপ:

1. নৌপরিবহন প্রযুক্তির উন্নতি: কম্পাস, অ্যাস্ট্রোল্যাব এবং ক্রমান্বয়ে উন্নতমানের মানচিত্রের মতো যন্ত্রের আবিষ্কার এবং ব্যবহার অভিযাত্রীদের সমুদ্রপথে দিকনির্দেশ পেতে সাহায্য করেছিল, যা তাদের দীর্ঘ যাত্রায় সঠিক পথে এগিয়ে যেতে সহায়ক ছিল।

2. নতুন জাহাজ নির্মাণ কৌশল: ক্যারাভেল এবং অন্যান্য উন্নত জাহাজের আবিষ্কার দীর্ঘ সমুদ্রযাত্রাকে আরও সহজ করে। এগুলোর কাঠামো ও নকশা ছিল শক্তিশালী, ফলে এগুলোতে অধিক খাদ্যসামগ্রী এবং মানুষ বহন করা যেতো, যা দীর্ঘ যাত্রায় প্রয়োজনীয় ছিল।

বৈজ্ঞানিক এ উন্নতিগুলি অভিযাত্রীদের জন্য অজানা পথ আবিষ্কার ও নতুন অঞ্চলগুলোতে যাত্রা করা সহজতর করে, ফলে ভৌগোলিক অভিযানে বিজ্ঞান একটি মূল চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করেছিল।

16. ভৌগোলিক অভিযানে নাবিক হেনরির অবদান কী ছিল?

 

উঃ নাবিক হেনরি, যিনি *প্রিন্স হেনরি দ্য নেভিগেটর* নামে পরিচিত, ১৫শ শতকে ইউরোপের ভৌগোলিক অভিযানের ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। তার অবদানগুলো ছিল:

1. পরিকল্পনা ও প্রেরণা প্রদান: তিনি আফ্রিকার উপকূলে সমুদ্রপথে যাত্রা ও নতুন অঞ্চল আবিষ্কারের জন্য পরিকল্পনা করেছিলেন। তার নেতৃত্বে অনেক অভিযাত্রী অজানা অঞ্চলে যাত্রা শুরু করে।

2. নেভিগেশন ও নৌবিদ্যার উন্নতি: হেনরি পর্তুগালের সাগরতীরের কাছে একটি নৌবিদ্যা ও মানচিত্রবিদ্যা কেন্দ্র স্থাপন করেন। এখানে নাবিকদের নেভিগেশন, মানচিত্রপঠন, এবং নৌকৌশল শেখানো হতো, যা অভিযাত্রীদের দক্ষতা বাড়ায়।

3. মানচিত্র প্রণয়ন ও তথ্য সংগ্রহ: হেনরি জাহাজ অভিযানে সংগৃহীত বিভিন্ন তথ্যের ভিত্তিতে মানচিত্র প্রণয়ন ও সংরক্ষণের ব্যবস্থা করেন, যা পরবর্তী অভিযাত্রিকদের জন্য সহায়ক হয়েছিল।

তার এই অবদানগুলোই ইউরোপের ভৌগোলিক আবিষ্কারের নতুন যুগের সূচনা করে।

17. 'হেনরি দ্যা নেভিগেটর' কাকে বলা হয় এবং কেন?

 

উঃ *প্রিন্স হেনরি দ্য নেভিগেটর* নামে পরিচিত হলেন পর্তুগালের প্রিন্স হেনরি (১৩৯৪-১৪৬০)। তাকে "দ্য নেভিগেটর" বলা হয়েছিল তার সমুদ্র অভিযানের প্রতি গভীর আগ্রহ এবং নৌ অভিযানের উন্নয়নে অসামান্য অবদানের জন্য, যদিও তিনি নিজে সমুদ্রযাত্রায় অংশগ্রহণ করেননি।

1. সমুদ্রযাত্রার পৃষ্ঠপোষকতা: হেনরি পর্তুগালের দক্ষিণ উপকূলে অভিযান পরিচালনা, গবেষণা এবং দক্ষ নাবিক গড়ে তোলার জন্য প্রচুর অর্থায়ন করেন। তার নেতৃত্বে পর্তুগিজ অভিযাত্রীরা আফ্রিকার পশ্চিম উপকূলের অজানা অঞ্চল আবিষ্কার করে এবং সমুদ্রপথে নতুন নতুন পথ উন্মোচন করে।

2. নৌবিদ্যা শিক্ষার প্রচলন: হেনরি পর্তুগালের সাগরতীরের কাছে একটি নৌবিদ্যা ও মানচিত্রবিদ্যা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেন, যেখানে নাবিকরা সমুদ্রযাত্রার কৌশল, মানচিত্র প্রণয়ন, এবং নেভিগেশনের আধুনিক প্রযুক্তি শিখতে পারত।

তার এই ভূমিকার জন্যই ইতিহাসে তাকে "হেনরি দ্য নেভিগেটর" নামে স্মরণ করা হয়।

18. ভৌগোলিক অভিযানে ভাস্কো দা গামার অবদান কী ছিল?

 

উঃ ভৌগোলিক অভিযানে ভাস্কো দা গামার অবদান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল, কারণ তিনি প্রথম ইউরোপীয় নাবিক যিনি সমুদ্রপথে আফ্রিকা ঘুরে ভারতে পৌঁছান। তার এই অভিযানের মাধ্যমে ইউরোপ ও ভারতের মধ্যে সরাসরি সমুদ্রপথে যোগাযোগ স্থাপন হয়, যা বৈশ্বিক বাণিজ্যে একটি যুগান্তকারী পরিবর্তন আনে।

1. ভারতীয় মসলা বাণিজ্যের পথ উন্মোচন: ১৪৯৮ সালে ভাস্কো দা গামা ক্যালিকট (বর্তমান কোঝিকোড়) বন্দরে পৌঁছান। এতে ইউরোপীয় দেশগুলো মসলা এবং অন্যান্য মূল্যবান পণ্য ভারতের বাজার থেকে সহজেই সংগ্রহ করতে পারে, যার ফলে ইউরোপে ব্যবসায়িক সমৃদ্ধি আসে।

2. পর্তুগিজ উপনিবেশ স্থাপনের পথপ্রদর্শন: ভাস্কো দা গামার আবিষ্কৃত পথের মাধ্যমে পর্তুগিজরা ভারতের উপকূলে বাণিজ্যিক ঘাঁটি স্থাপন করতে সক্ষম হয়, যা পরবর্তী উপনিবেশ স্থাপনের ভিত্তি তৈরি করে।

তার অভিযানের মাধ্যমে ইউরোপ-ভারত বাণিজ্য নতুন দিগন্তে পৌঁছায় এবং পরবর্তীতে বিশ্বব্যাপী বাণিজ্যিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

19. কোন ইউরোপীয় বণিককে কেন 'পূর্ব দিকের সিজার' বলা হয়?

 অথবা কাকে, কেন 'সমুদ্রের সিংহ' বলা হয়?

 

উঃ পূর্ব দিকের সিজার নামে পরিচিত ছিলেন পর্তুগালের আফনসো ডি আলবুকের্ক। তাকে এই উপাধি দেওয়া হয়েছিল কারণ তিনি ভারত ও আফ্রিকা উপকূলে পর্তুগালের বাণিজ্যিক ও সামরিক আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তার নেতৃত্বে পর্তুগিজরা পূর্বের সমুদ্রপথে এবং ভারতীয় মহাসাগরে শক্তিশালী উপস্থিতি তৈরি করে, যা পরবর্তী উপনিবেশ স্থাপনের ভিত্তি তৈরি করে। আলবুকের্কের কৌশল এবং সমুদ্রযুদ্ধের দক্ষতার জন্যই তাকে এই উপাধি দেওয়া হয়।

সমুদ্রের সিংহ উপাধিটি প্রখ্যাত পর্তুগিজ নাবিক ফ্রান্সিসকো দে আলমিদা কে দেওয়া হয়। তার এই উপাধি তাকে দিয়েছিলেন তার সাহসিকতা, নেতৃত্ব এবং সামুদ্রিক অভিযানে অসাধারণ দক্ষতার জন্য। তিনি ভারতীয় উপকূলে প্রথম পর্তুগিজ উপনিবেশ স্থাপনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন এবং তার নেতৃত্বে পর্তুগিজরা ভারতে বাণিজ্যিক আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়।

20. টীকা লেখো : খ্রিস্টোফার কলম্বাস।

 

উঃ খ্রিস্টোফার কলম্বাস (১৪৫১–১৫০৬) ছিলেন একজন ইতালীয় নাবিক এবং অভিযাত্রী, যিনি ১৪৯২ সালে স্পেনের রাণী আইসাবেলা ও রাজা ফার্দিনান্দের সমর্থনে পশ্চিমমুখী অভিযান শুরু করেন। তার লক্ষ্য ছিল এশিয়ার জন্য একটি নতুন সমুদ্রপথ খোঁজা, কিন্তু তিনি ভুলক্রমে ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জে পৌঁছান, যা পরবর্তীতে আমেরিকা নামে পরিচিত হয়। কলম্বাসের এই অভিযান ইউরোপ এবং আমেরিকার মধ্যে প্রথম সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন করে, যা বিশ্ব ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। তার অভিযানের ফলে ইউরোপীয় দেশগুলো আমেরিকায় উপনিবেশ স্থাপন শুরু করে, এবং বৈশ্বিক বাণিজ্য ও সাংস্কৃতিক আদান-প্রদানের পথ খুলে যায়। তবে, তার আগমন স্থানীয় আদিবাসীদের জন্য বিপর্যয়কর ছিল, কারণ ইউরোপীয় উপনিবেশীরা তাদের উপর অত্যাচার ও শোষণ চালায়। কলম্বাসের অবদান বিশ্ব ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ, যদিও তার অভিযানও বিভিন্ন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।

21. ভৌগোলিক অভিযানে মেকেনালের অবদান কী ছিল?

 

উঃ মেকেনালের (Mackenal) অবদান ভৌগোলিক অভিযানে ছিল তার মানচিত্রবিদ্যা এবং নৌচলাচল সম্পর্কিত গবেষণায়। তিনি জাহাজের নেভিগেশন এবং নতুন অঞ্চল আবিষ্কারের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তার কাজ মূলত সমুদ্রপথের মানচিত্র নির্মাণ এবং নৌবিদ্যা সংক্রান্ত ছিল।

1. মানচিত্র নির্মাণ: মেকেনাল নতুন অঞ্চলের সন্ধানে সমুদ্রপথের মানচিত্র নির্মাণে ব্যাপক অবদান রাখেন। তার মানচিত্রগুলো অভিযাত্রীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা প্রদান করেছিল, যা তাদের অভিযানের সঠিক পথ অনুসরণে সাহায্য করেছিল।

2. নৌচলাচল উন্নয়ন: মেকেনাল সমুদ্রপথ এবং নৌবিদ্যার আধুনিক প্রযুক্তি সম্পর্কে গবেষণা ও উন্নয়ন করেছিলেন, যার মাধ্যমে দীর্ঘ সমুদ্রযাত্রা আরো নিরাপদ ও কার্যকরী হয়।

এভাবে তার অবদানগুলি ভৌগোলিক অভিযানে অত্যন্ত মূল্যবান ছিল।

22. আমেরিগো ভেসপুচি কে ছিলেন?

অথবা, আমিরিগো ভেসপুচি স্মরণীয় কেন?

 

উঃ আমেরিগো ভেসপুচি (1454-1512) ছিলেন একজন ইতালীয় নাবিক, পর্তুগিজ সমুদ্র অভিযাত্রী এবং মানচিত্রকার। তিনি আমেরিকা মহাদেশের নামকরণের সাথে যুক্ত এবং তার অবদানের জন্য স্মরণীয়।

1. নতুন মহাদেশ আবিষ্কার: ভেসপুচি প্রথম হিসেবে এই উপলব্ধি করেন যে, নতুন পৃথিবীটি আসলে এশিয়া নয়, বরং একটি পৃথক মহাদেশ। তিনি দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের উপকূলীয় অঞ্চল ঘুরে দেখেন এবং তা সঠিকভাবে চিহ্নিত করেন, যা ইউরোপে প্রথমবারের মতো আমেরিকার একটি আলাদা মহাদেশ হিসেবে পরিচিতি পায়।

2. নামকরণ: আমেরিগো ভেসপুচির কর্মের জন্য, 1507 সালে একটি মানচিত্রে তার নামের ভিত্তিতে "আমেরিকা" নামটি নতুন মহাদেশের জন্য রাখা হয়।

তার এই অবদানই তাকে ইতিহাসে স্মরণীয় করে রেখেছে।

23. 'নতুন বিশ্ব' বলতে কী বোঝো?

 

উঃ 'নতুন বিশ্ব' বলতে সাধারণত বোঝানো হয় আমেরিকা মহাদেশকে, যা ইউরোপীয় অভিযাত্রীদের মাধ্যমে ১৫শ শতাব্দীতে আবিষ্কৃত হয়। পূর্বে ইউরোপীয়রা মনে করত যে পৃথিবীটি এশিয়া, আফ্রিকা এবং ইউরোপের মধ্যে সীমাবদ্ধ, কিন্তু আমেরিকা মহাদেশের আবিষ্কার ইউরোপের জন্য নতুন এক দিগন্ত উন্মোচন করে।

এখনকার 'নতুন বিশ্ব' শব্দটি ঐতিহাসিকভাবে ইউরোপীয়দের জন্য অপরিচিত অঞ্চলগুলো, বিশেষত উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকাকে বোঝায়। এটি প্রথম ইউরোপীয় অভিযাত্রীদের দ্বারা আবিষ্কৃত হয় এবং পরবর্তীতে বিশ্বব্যাপী বাণিজ্য, উপনিবেশ স্থাপন ও সাংস্কৃতিক মিশ্রণের সূচনা হয়।

24. কৃষি বিপ্লব কী? কৃষি বিপ্লবের দুটি ফলাফল লেখো।

 

উঃ কৃষি বিপ্লব বলতে মূলত কৃষির উৎপাদন পদ্ধতিতে এক গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনকে বোঝায়, যা ১৮শ শতাব্দীর শেষে এবং ১৯শ শতাব্দীর শুরুতে ঘটে। এই বিপ্লবের মাধ্যমে কৃষি পদ্ধতিতে উন্নতি এবং নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার কৃষির উৎপাদনশীলতা বাড়িয়ে দেয়।

কৃষি বিপ্লবের দুটি ফলাফল:

1. উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি: উন্নত কৃষি পদ্ধতি এবং নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার (যেমন উন্নত বীজ, আবাদী ভূমির উন্নতি, এবং সেচ ব্যবস্থা) কৃষির উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করেছে। ফলে খাদ্য সরবরাহ বাড়ে এবং জনসংখ্যা বৃদ্ধি পায়।

2. শিল্প বিপ্লবের প্রাথমিক প্রণোদনা: কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি পাওয়ায় অনেক মানুষ শহরে চলে আসে, যা শিল্প বিপ্লবের সূচনা করে। অতিরিক্ত কর্মশক্তি শিল্পখাতে চলে যায়, যার ফলে নতুন প্রযুক্তির উদ্ভাবন এবং উৎপাদন প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন আসে।

25. ইউরোপের কোথায়, কেন 'এনক্লোজার মুভমেন্ট' হয়?

 

উঃ 'এনক্লোজার মুভমেন্ট' ইউরোপের বিশেষত ইংল্যান্ডে ঘটে, ১৬শ শতাব্দী থেকে ১৮শ শতাব্দী পর্যন্ত। এই আন্দোলনটি ছিল কৃষি জমির খণ্ডীকরণ এবং অভিজ্ঞানির দ্বারা ভূমি বিশেষভাবে ব্যক্তিগত মালিকানায় পরিণত করার প্রক্রিয়া।

কেন এটি হয়েছিল:

1. কৃষির উন্নতি: উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর জন্য জমির কার্যকরী ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হয়েছিল। জমির খণ্ডীকরণের মাধ্যমে একক মালিক অধিক সুবিধা পেয়েছিল, যা আধুনিক কৃষি পদ্ধতির বিকাশকে সাহায্য করে।

2. অর্থনৈতিক পরিবর্তন: শিল্প বিপ্লবের আগাম প্রস্তুতি হিসেবে, বড় আকারের কৃষি উৎপাদন এবং জমির মেকানাইজড ব্যবহারের জন্য অভিজ্ঞানিরা জমি একত্রিত করতে চেয়েছিলেন, যাতে তারা আধুনিক কৃষি পদ্ধতিতে অধিক লাভজনক উৎপাদন করতে পারেন।

এনক্লোজার মুভমেন্টের ফলে, ছোট খামারগুলি ধ্বংস হয়ে যায় এবং কৃষকরা কাজের জন্য শহরে চলে যায়, যা শিল্প বিপ্লবের জন্য মানুষের উত্স হিসেবে কাজ করে।

26. আরবীওরা কীভাবে কাগজ শিল্পের প্রসার ঘটিয়েছিল?

 

উঃ আরবীরা কাগজ শিল্পের প্রসার ঘটিয়েছিল ৮ম শতাব্দীতে, যখন তারা চীনের কাগজ তৈরির পদ্ধতি গ্রহণ ও উন্নত করে।

কিভাবে প্রসার ঘটেছিল:

1. চীনের পদ্ধতি গ্রহণ: আরবরা চীনের মাধ্যমে কাগজ তৈরির পদ্ধতি জানে, এবং ৭৫৫ খ্রিস্টাব্দে তারা সেমিরার যুদ্ধের পর চীনের বন্দিদের কাছ থেকে কাগজ তৈরির গোপন পদ্ধতি শিখে নেয়। এরপর তারা এই প্রযুক্তি নিজেদের দেশে নিয়ে আসে।

2. উন্নয়ন ও উৎপাদন: আরবরা কাগজ তৈরির প্রক্রিয়ায় উন্নতি ঘটায়, যেমন মেশিনের ব্যবহার, কাগজের মান বৃদ্ধি, এবং উৎপাদন ক্ষমতা বাড়ানো। তারা কাগজের ওপর নতুন নতুন ব্যবহার যেমন ধর্মীয় ও সাহিত্যিক বই লেখা, ব্যবসায়িক দলিল সংরক্ষণ এবং প্রশাসনিক কাজে ব্যবহার শুরু করে।

3. প্রসার ও বিতরণ: আরবরা কাগজ শিল্পের উৎপাদন ও ব্যবহারের মাধ্যমে সারা মধ্যপ্রাচ্য, উত্তর আফ্রিকা এবং ইউরোপে কাগজের প্রসার ঘটায়। বিশেষত, কাগজ ব্যবহারের মাধ্যমে লেখালেখি ও শিক্ষার ক্ষেত্রে একটি নতুন দিগন্তের সূচনা হয়।

এভাবে আরবরা কাগজ শিল্পের দ্রুত প্রসারের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

27. গুটেনবার্গ কীভাবে মুদ্রণযন্ত্র তৈরি করেন?

 

উঃ গুটেনবার্গ ১৫শ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে মুদ্রণযন্ত্রের উদ্ভাবন করেন। তাঁর এই উদ্ভাবন মুদ্রণ শিল্পে বিপ্লব ঘটায়। তিনি মূলত টাইপ মুদ্রণ পদ্ধতি তৈরি করেন, যা পূর্বে ব্যবহৃত হাতে লিখিত পাণ্ডুলিপির চেয়ে অনেক দ্রুত এবং কার্যকর ছিল।

গুটেনবার্গের মুদ্রণযন্ত্র তৈরির প্রক্রিয়া ছিল:

1. ধাতব মোবাইল টাইপ: গুটেনবার্গ ধাতুর তৈরি আলাদা আলাদা অক্ষরের টাইপ তৈরি করেন, যা একটি বাক্য বা পৃষ্ঠার জন্য বারবার ব্যবহার করা যেত। এটি ছিল তার মুদ্রণযন্ত্রের মূল বৈশিষ্ট্য।

2. কাগজে মুদ্রণ: তিনি কাগজের উপর ইনক (কালি) ব্যবহার করে ধাতু টাইপগুলো ব্যবহার করতেন, যা অক্ষরের ছাপ তৈরি করত।

3. প্রেসের উন্নতি: গুটেনবার্গ এক ধরনের প্রেস ব্যবহার করতেন যা আটা অথবা কাপড়ের সাহায্যে কাগজে চাপ দিয়ে প্রিন্ট করত। এটি সম্পূর্ণ মুদ্রণ প্রক্রিয়াকে দ্রুত এবং স্বয়ংক্রিয় করে তোলে।

গুটেনবার্গের উদ্ভাবনের ফলে বই ছাপানোর প্রক্রিয়া সহজ, দ্রুত এবং সস্তা হয়, যা বিশ্বব্যাপী জ্ঞানের প্রচার এবং শিক্ষা বিস্তারে বিপ্লবী ভূমিকা পালন করে।

28. সামরিক বিপ্লব কী? সামরিক বিপ্লবের দুটি ফলাফল লেখো।

 

উঃ সামরিক বিপ্লব বলতে একধরনের গুরুত্বপূর্ণ সামরিক পরিবর্তন ও উন্নয়ন বোঝানো হয়, যা যুদ্ধের কৌশল, সংগঠন, অস্ত্র এবং সৈন্য বাহিনীর ব্যবস্থাপনায় মৌলিক পরিবর্তন নিয়ে আসে। এটি ১৬শ এবং ১৭শ শতাব্দীতে ইউরোপে ঘটেছিল এবং এতে যুদ্ধের ধরন এবং সামরিক শক্তির ব্যবহার নতুন আঙ্গিকে চলে আসে।

সামরিক বিপ্লবের দুটি ফলাফল:

1. বেশি পেশাদার সেনাবাহিনী: রাজারা এবং শাসকরা নিয়মিত এবং পেশাদার সেনাবাহিনী গঠন করতে শুরু করেন, যা দীর্ঘকালীন যুদ্ধ পরিচালনার জন্য তৈরি ছিল। এর ফলে, শক্তিশালী কেন্দ্রিক শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়।

2. অস্ত্র এবং কৌশলের উন্নতি: নতুন ধরনের অস্ত্র যেমন বন্দুক, তোপ, এবং মারাত্মক অস্ত্রের ব্যবহার বৃদ্ধি পায়। এছাড়াও, যুদ্ধের কৌশল যেমন শৃঙ্খলাবদ্ধ বাহিনী এবং খোলামেলা যুদ্ধ পদ্ধতির উদ্ভব ঘটে, যা যুদ্ধের ফলাফলকে ব্যাপকভাবে পরিবর্তন করে।

29. সাগা বন কী?

 

উঃ সাগা বন (Sāgā ban) একটি বাংলাভাষী শব্দ যা মূলত "সাগা বন" বা "সাগা বনের" সংশ্লিষ্ট বা প্রাচীন বনাঞ্চলগুলির ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। এটি সাধারণত এমন এক বনাঞ্চল বা পরিবেশকে বোঝাতে ব্যবহৃত হয়, যা প্রাচীন কাল থেকেই গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক বা সাংস্কৃতিক দৃষ্টিকোণ থেকে স্থান পেয়ে আসছে।

এছাড়া, "সাগা বন" কোন বিশেষ অঞ্চল বা স্থান নাম হতে পারে যেখানে দীর্ঘকালের ইতিহাস বা বিশেষ ঘটনা লুকিয়ে থাকতে পারে, তবে এর অধিক পরিচিত বা বৈশিষ্ট্যপূর্ণ ব্যবহার এবং ধারণা অঞ্চলের উপর নির্ভর করে ভিন্ন হতে পারে।

30. ইউকিয়ো-ই বলতে কী বোঝো?

 

উঃ ইউকিয়ো-ই (Ukiyo-e) হলো জাপানি পেইন্টিং এবং প্রিন্টমেকিংয়ের একটি ধারা যা ১৭শ থেকে ১৯শ শতাব্দী পর্যন্ত জনপ্রিয় ছিল। এর মানে "ভাসমান বিশ্ব" বা "অস্থায়ী পৃথিবী", যা জীবনের অস্থিরতা এবং আধুনিক শহুরে জীবনের আনন্দ এবং দুঃখকে চিত্রিত করে।

ইউকিয়ো-ই ছবির মধ্যে সাধারণত দৈনন্দিন জীবনের দৃশ্য, বিখ্যাত অভিনেতাদের ছবি, সুন্দরী নারীদের চিত্র, কাবুকি থিয়েটারের দৃশ্য, প্রকৃতির দৃশ্য এবং ঐতিহাসিক কাহিনীর চিত্র প্রতিফলিত হত। এটি মূলত কাঠের ব্লক প্রিন্টিং পদ্ধতিতে তৈরি করা হতো, এবং এর মাধ্যমে ব্যয়বহুল কাঠের ব্লক থেকে প্রচুর মুদ্রণ করা সম্ভব ছিল।

এই ধারা জাপানি শিল্পের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ এবং বিশ্বব্যাপী চিত্রকলা এবং প্রিন্টমেকিংয়ের ইতিহাসে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে।

 

✍️প্রশ্নের মান-৪:

 

 1. বিজ্ঞান কি? বিজ্ঞানের সংজ্ঞা নিয়ে বিভিন্ন বক্তব্য আলোচনা করো।

 

উঃ বিজ্ঞান এমন একটি শৃঙ্খলা যা প্রাকৃতিক জগত ও মহাবিশ্ব সম্পর্কে সংগঠিত জ্ঞান প্রদান করে। এটি পর্যবেক্ষণ, পরীক্ষা, গবেষণা, এবং প্রমাণিত তথ্যের ভিত্তিতে বিভিন্ন প্রাকৃতিক ঘটনা ও তাদের কারণ ব্যাখ্যা করে। বিজ্ঞান সম্পর্কে বিভিন্ন সংজ্ঞা ও দার্শনিকের ব্যাখ্যা রয়েছে, যা বিজ্ঞানের বৈশিষ্ট্য ও উদ্দেশ্যকে তুলে ধরে।

1. অ্যারিস্টটল: তিনি বিজ্ঞানকে মানবিক চিন্তার একটি শৃঙ্খলা হিসেবে দেখেছেন, যা বাস্তবতা ও জ্ঞানের মধ্যে সম্পর্ককে বোঝায়।

2. গ্যালিলিও গ্যালিলি: গ্যালিলিওর মতে, বিজ্ঞান এমন এক প্রক্রিয়া যা পর্যবেক্ষণ ও পরীক্ষার মাধ্যমে প্রকৃত সত্যকে উদ্ঘাটন করে।

3. আইজ্যাক নিউটন: নিউটনের মতে, বিজ্ঞান হল এমন একটি পদ্ধতি যা প্রকৃতির কার্যকলাপ ও তার কার্যকারণ সম্পর্ক নিয়ে অনুসন্ধান করে।

4. রিচার্ড ফাইনম্যান: ফাইনম্যান বিজ্ঞানের সংজ্ঞায় বলেছেন, বিজ্ঞান হল এমন একটি প্রক্রিয়া যা নিখুঁত পর্যবেক্ষণ ও গণনা নির্ভর পরীক্ষা দ্বারা প্রমাণিত সত্যকে বোঝার জন্য ব্যবহৃত হয়।

5. কার্ল পপার: তিনি বিজ্ঞানকে বলেছিলেন এমন একটি গবেষণাপ্রক্রিয়া, যা পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে হাইপোথিসিস তৈরি করে এবং তা পরীক্ষা করে।

এই সংজ্ঞাগুলো বিজ্ঞানের মূল উদ্দেশ্যকে তুলে ধরে, যেমন প্রাকৃতিক ঘটনাকে বিশ্লেষণ করা, সত্য অনুসন্ধান করা, এবং জ্ঞানকে সুশৃঙ্খলভাবে সংগঠিত করা।

2. ডাইনি বিদ্যা প্রসারের কারণ কী ছিল?

 

উঃ ডাইনি বিদ্যার প্রসারের পেছনে বেশ কয়েকটি কারণ ছিল, যা মূলত মধ্যযুগীয় ইউরোপে দেখা যায়। সে সময় সমাজে ভয়, কুসংস্কার, এবং অজ্ঞতার কারণে ডাইনি বিদ্যার প্রতি মানুষের আস্থা বৃদ্ধি পায়।

1. ধর্মীয় ও সামাজিক ভীতি: খ্রিস্টধর্ম প্রচলনের সাথে সাথে ডাইনি বিদ্যাকে শয়তানের কাজ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। শাসকদের সমর্থন পেয়ে চার্চ ডাইনি বিদ্যার বিরুদ্ধে প্রচারণা চালায়, যা ডাইনিদের শাস্তি দেওয়ার প্রবণতাকে বাড়িয়ে তোলে।

2. প্রাকৃতিক দুর্যোগ: খরা, মহামারি, ফসলের ক্ষতি ইত্যাদি প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণ হিসেবে ডাইনি বিদ্যাকে দায়ী করা হতো। মানুষ বিশ্বাস করত, ডাইনিরা প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘটাচ্ছে।

3. অজ্ঞতা ও কুসংস্কার: বিজ্ঞান ও শিক্ষার অভাবের কারণে মানুষ ডাইনি বিদ্যার প্রতি সহজেই বিশ্বাসী হয়ে ওঠে। সমাজের দুর্বল, দরিদ্র এবং নিঃসঙ্গ নারীদেরই অধিকাংশ ক্ষেত্রে ডাইনিরূপে অভিযুক্ত করা হতো।

4. রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক উদ্দেশ্য: অনেক সময় সম্পদ আত্মসাৎ বা ব্যক্তিগত শত্রুতা থেকে ডাইনি বলে আখ্যা দেওয়া হতো। ডাইনি বলে অভিযুক্ত নারীদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার সুযোগ নিত অনেক শাসক।

এভাবে ধর্মীয় প্রচারণা, কুসংস্কার, ভয় এবং বিভিন্ন স্বার্থসংশ্লিষ্ট উদ্দেশ্য ডাইনি বিদ্যার প্রসারের প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

3. চার্চ কেন ডাইনিবিদ্যা চর্চার অবসানের উদ্যোগ নিয়েছিল?

 

উঃ চার্চ ডাইনি বিদ্যা চর্চার অবসানের উদ্যোগ নিয়েছিল মূলত ধর্মীয়, সামাজিক, এবং রাজনৈতিক কারণ থেকে। সে সময়ে ডাইনি বিদ্যাকে শয়তানের কার্যকলাপ হিসেবে বিবেচনা করা হতো, যা খ্রিস্টধর্মের মূল শিক্ষা ও আদর্শের বিরোধী ছিল। চার্চ বিশ্বাস করত যে, ডাইনিরা শয়তানের উপাসনা করে এবং সমাজে অশুভ শক্তির প্রভাব ছড়ায়। এই কারণে চার্চ ডাইনি বিদ্যা চর্চার অবসানে উদ্যোগ নেয়।

1. ধর্মীয় বিশ্বাস ও শুদ্ধতা রক্ষা: চার্চের ধারণা ছিল যে ডাইনি বিদ্যা মানুষের মনকে বিপথে পরিচালিত করছে এবং খ্রিস্টীয় বিশ্বাসের সাথে বিরোধ তৈরি করছে। তাই ধর্মীয় শুদ্ধতা রক্ষার জন্য চার্চ ডাইনি বিদ্যার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়।

2. সামাজিক নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা: চার্চ ডাইনি বিদ্যার বিরুদ্ধে প্রচার চালিয়ে সমাজে ধর্মীয় কর্তৃত্ব বজায় রাখতে চেয়েছিল। ডাইনি বিদ্যাকে দমন করার মাধ্যমে চার্চ তার ক্ষমতা ও সামাজিক প্রভাবকে সুসংহত করেছিল।

3. কুসংস্কার ও ভয়ের পরিবেশ দূর করা: ডাইনি বিদ্যা সম্পর্কে মানুষের মধ্যে ভীতি ও কুসংস্কার বৃদ্ধি পাচ্ছিল, যা সমাজে অস্থিরতা তৈরি করেছিল। চার্চ এই কুসংস্কার দূর করার জন্য ডাইনি বিদ্যার চর্চা বন্ধ করতে চেয়েছিল।

4. রাজনৈতিক ক্ষমতা ও প্রভাব বিস্তার: চার্চের উদ্দেশ্য ছিল ডাইনি বিদ্যা দমনের মাধ্যমে রাজনৈতিক ক্ষমতা আরও জোরদার করা। এ কারণে অনেক ডাইনি অভিযানের নেতৃত্ব চার্চ নিজে পরিচালনা করত।

এই কারণগুলোর সমন্বয়ে চার্চ ডাইনি বিদ্যা চর্চার অবসানে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে।

4. 'হোয়াইট ম্যাজিক' কীভাবে কার্যকরী হত?

 

উঃ 'হোয়াইট ম্যাজিক' বলতে এমন এক ধরনের যাদু বা জাদুবিদ্যাকে বোঝানো হয়, যা সাধারণত কল্যাণকর বা সহায়ক উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হত। এটি 'ব্ল্যাক ম্যাজিক' বা অশুভ যাদুর বিপরীতে মানবকল্যাণে কাজে লাগানোর চেষ্টা করা হতো। হোয়াইট ম্যাজিক মূলত নিরাময়, সুরক্ষা, শুদ্ধি, এবং শুভ ফল লাভের জন্য কার্যকরী হত। এর প্রয়োগ ছিল বিভিন্ন আচার-অনুষ্ঠান, মন্ত্রপাঠ, এবং বিভিন্ন প্রাকৃতিক উপাদানের ব্যবহার।

1. নিরাময় ও সুরক্ষা: হোয়াইট ম্যাজিক সাধারণত রোগ সারাতে এবং খারাপ শক্তি থেকে রক্ষা করতে ব্যবহার করা হতো। নির্দিষ্ট গাছপালা, ঔষধি, বা তাবিজ ব্যবহার করে রোগমুক্তি এবং সুরক্ষা লাভের চেষ্টা করা হত।

2. শুভ ফল লাভ: জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সফলতা বা ইতিবাচক ফলাফল লাভের জন্যও হোয়াইট ম্যাজিক ব্যবহৃত হত। উদাহরণস্বরূপ, কৃষিকাজে ভালো ফসল উৎপাদন, প্রেমে সফলতা, বা শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য বিভিন্ন শুভ মন্ত্র বা আচার পালন করা হতো।

3. শুদ্ধি ও পবিত্রতা: কোনো জায়গা বা ব্যক্তির ওপর থেকে খারাপ প্রভাব দূর করার জন্য হোয়াইট ম্যাজিকের আচার পালন করা হতো। শুদ্ধিকরণ প্রক্রিয়ায় ধূপ, ফুল, এবং নির্দিষ্ট মন্ত্র ব্যবহার করা হত।

4. সাহায্য ও সহায়তা প্রার্থনা: প্রাকৃতিক বিপর্যয়, যুদ্ধ, বা মহামারির সময় মানুষ হোয়াইট ম্যাজিকের আশ্রয় নিত। বিভিন্ন দেবতার কাছে প্রার্থনা বা বিশেষ আচার পালনের মাধ্যমে সাহায্য লাভের চেষ্টা করা হত।

এই উপায়গুলোর মাধ্যমে হোয়াইট ম্যাজিক কার্যকরী হত এবং মানুষ এই যাদুবিদ্যার ওপর ভরসা রাখত।

5. 'ব্ল্যাক ম্যাজিকে'র ধারণা ব্যাখ্যা করো।

 

উঃ 'ব্ল্যাক ম্যাজিক' হলো এক ধরনের জাদুবিদ্যা যা সাধারণত অশুভ উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হত এবং সমাজে ভয় ও কুসংস্কার ছড়াতে সহায়ক ছিল। এই যাদুবিদ্যার মাধ্যমে প্রাকৃতিক এবং অতিপ্রাকৃত শক্তিকে কাজে লাগিয়ে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলার চেষ্টা করা হত।

1. অশুভ প্রভাব সৃষ্টি: ব্ল্যাক ম্যাজিকের মূল উদ্দেশ্য ছিল ব্যক্তিগত শত্রু, প্রতিদ্বন্দ্বী বা অবাঞ্ছিত ব্যক্তির ক্ষতি করা। এতে বিভিন্ন অভিশাপ, শাস্তিমূলক মন্ত্র, এবং ভৌতিক শক্তি ব্যবহার করা হত।

2. শারীরিক ও মানসিক ক্ষতি: ব্ল্যাক ম্যাজিকের মাধ্যমে অন্যের শরীরিক রোগ বা মানসিক অবসাদ ঘটানোর চেষ্টা করা হতো।

3. আত্মিক শক্তির ব্যবহার: বিভিন্ন আচার-অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রেতাত্মা বা অশুভ আত্মার সাহায্য নিয়ে প্রতিপক্ষের ওপর প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করা হত।

4. ভয়ের পরিবেশ তৈরি: ব্ল্যাক ম্যাজিক ব্যবহার করে সমাজে কুসংস্কার, ভয় এবং অসহায়ত্বের বাতাবরণ তৈরি করা হতো, যা মানুষের মাঝে অস্থিরতা সৃষ্টি করত।

ব্ল্যাক ম্যাজিক সমাজের শান্তি ও স্থিতি ব্যাহত করত এবং একে বিপদজনক বলে মনে করা হত।

6. সামরিক ক্ষেত্রে প্রযুক্তির অগ্রগতিতে বারুদের ভূমিকা কী ছিল?

 

উঃ সামরিক ক্ষেত্রে প্রযুক্তির অগ্রগতিতে বারুদের আবিষ্কার একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যুদ্ধক্ষেত্রে আগের প্রচলিত অস্ত্র এবং কৌশলের পরিবর্তে বারুদের ব্যবহার নতুন সামরিক বিপ্লবের সূচনা করে।

1. অস্ত্রের উন্নতি: বারুদের আবিষ্কার বন্দুক, কামান, এবং গোলাবারুদের মতো আধুনিক অস্ত্র তৈরি সহজ করে, যা যুদ্ধে দূর থেকে আক্রমণের সুযোগ দেয়। ফলে যুদ্ধের কৌশল এবং ধরণে পরিবর্তন আসে।

2. দুর্গ ও প্রতিরক্ষার উন্নতি: কামান এবং গোলাবারুদ ব্যবহারের কারণে মধ্যযুগীয় দুর্গ ও প্রাচীরের ব্যবহার কমে যায় এবং নতুন ধরণের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা তৈরি হয়।

3. কৌশলগত পরিবর্তন: দূর থেকে আক্রমণ করার ফলে আগের মুখোমুখি যুদ্ধের কৌশল বদলে যায়, এবং নতুন সামরিক কৌশল, যেমন ঘেরাও বা দূর থেকে আক্রমণ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।

4. সাম্রাজ্য বিস্তারে সহায়ক: বারুদের সাহায্যে ইউরোপীয় দেশগুলো সহজেই তাদের সাম্রাজ্য বিস্তার করতে সক্ষম হয়, যা বৈশ্বিক রাজনীতিতে বড় ধরনের প্রভাব ফেলে।

বারুদ সামরিক ক্ষমতাকে উল্লেখযোগ্যভাবে শক্তিশালী করে এবং আধুনিক যুদ্ধের রূপান্তরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

7. গ্যালিলিওর আবিষ্কারগুলি সংক্ষেপে লেখো ।

 

উঃ গ্যালিলিও গ্যালিলি একজন বিখ্যাত বিজ্ঞানী ছিলেন, যিনি জ্যোতির্বিজ্ঞান, পদার্থবিদ্যা এবং গণিতশাস্ত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। তাঁর প্রধান আবিষ্কারগুলি হলো:

1. দূরবীক্ষণের উন্নতি: গ্যালিলিও প্রথম কার্যকর দূরবীক্ষণ তৈরি করেন এবং মহাকাশ পর্যবেক্ষণ করেন, যা আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞানের জন্য যুগান্তকারী ছিল।

2. চাঁদের পৃষ্ঠ: তিনি চাঁদের পৃষ্ঠে পর্বত ও উপত্যকার অস্তিত্ব আবিষ্কার করেন, যা দেখায় যে এটি মসৃণ নয় বরং পৃথিবীর মতোই অসমতল।

3. বৃহস্পতি ও তার উপগ্রহ: গ্যালিলিও বৃহস্পতির চারটি উপগ্রহ আবিষ্কার করেন (ইও, ইউরোপা, গ্যানিমিড এবং ক্যালিস্টো), যা প্রমাণ করে যে পৃথিবী ছাড়াও অন্য গ্রহেরও উপগ্রহ থাকতে পারে।

4. শুক্রগ্রহের কলা: তিনি প্রথম শুক্রগ্রহের কলা পর্যবেক্ষণ করেন, যা সূর্যকেন্দ্রিক সৌরজগতের ধারণাকে সমর্থন করে।

5. মুক্তপিণ্ড ত্বরণ তত্ত্ব: গ্যালিলিও দেখান যে নিখুঁত অবস্থায় বিভিন্ন ওজনের বস্তুর পতন হার একই হয়।

গ্যালিলিওর আবিষ্কারগুলো জ্যোতির্বিজ্ঞান ও পদার্থবিজ্ঞানে এক নতুন দিগন্তের সূচনা করে এবং বৈজ্ঞানিক বিপ্লবে বিশাল ভূমিকা রাখে।

8. জ্যোতির্বিজ্ঞান বলতে কী বোঝো?

 

উঃ জ্যোতির্বিজ্ঞান হলো মহাবিশ্বের বাইরে অবস্থিত বস্তু এবং ঘটনাগুলির বৈজ্ঞানিক অধ্যয়ন। এর মাধ্যমে আমরা গ্রহ, নক্ষত্র, গ্যালাক্সি, ধূমকেতু, ব্ল্যাক হোল, এবং মহাকাশের অন্যান্য কাঠামোর গঠন, গতি, অবস্থান এবং বৈশিষ্ট্য নিয়ে গবেষণা করি। জ্যোতির্বিজ্ঞান শুধু মহাবিশ্বের সৃষ্টি এবং বিকাশ বুঝতে সহায়ক নয়, বরং এটি আমাদের সৌরজগত ও পৃথিবীর সাথেও সম্পর্কিত বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেয়।

জ্যোতির্বিজ্ঞান মূলত দুটি ভাগে বিভক্ত:

1. পর্যবেক্ষণমূলক জ্যোতির্বিজ্ঞান: টেলিস্কোপ ও অন্যান্য যন্ত্রের মাধ্যমে মহাবিশ্বের বস্তু পর্যবেক্ষণ ও তথ্য সংগ্রহ করে।
   
2. তাত্ত্বিক জ্যোতির্বিজ্ঞান: কম্পিউটার মডেল এবং গণিতের মাধ্যমে মহাবিশ্বের কার্যপ্রণালী ও বস্তুগুলির আচরণ বিশ্লেষণ করে।

জ্যোতির্বিজ্ঞানের মাধ্যমে মহাবিশ্বের উৎপত্তি, গঠন এবং ভবিষ্যত সম্পর্কে আমাদের ধারণা সুস্পষ্ট হয়।

 

9. কাকে, কেন 'আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞানের জনক' বলা হয়?

 

উঃ গ্যালিলিও গ্যালিলিকে "আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞানের জনক" বলা হয়, কারণ তিনি দূরবীক্ষণ (টেলিস্কোপ) ব্যবহার করে প্রথমবারের মতো মহাকাশ পর্যবেক্ষণ করেন এবং বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির মাধ্যমে মহাজাগতিক বস্তু ও ঘটনা বিশ্লেষণ করেন। তাঁর আবিষ্কারগুলি জ্যোতির্বিজ্ঞানে এক নতুন যুগের সূচনা করে এবং পুরনো ধারণাগুলোর সংশোধন ও আধুনিকীকরণে সহায়ক হয়।

গ্যালিলিওর কিছু গুরুত্বপূর্ণ অবদান:

1. দূরবীক্ষণের উন্নয়ন: তিনি প্রথম কার্যকর টেলিস্কোপ তৈরি করেন এবং এর মাধ্যমে মহাকাশ পর্যবেক্ষণ করেন।
   
2. বৃহস্পতির উপগ্রহ আবিষ্কার: বৃহস্পতির চারটি উপগ্রহ আবিষ্কার করে দেখান যে পৃথিবী ছাড়া অন্য গ্রহেরও উপগ্রহ থাকতে পারে।
   
3. শুক্রগ্রহের কলা পর্যবেক্ষণ: শুক্রের বিভিন্ন কলা পর্যবেক্ষণ করে সূর্যকেন্দ্রিক সৌরজগতের ধারণাকে সমর্থন করেন।

4. চাঁদের পৃষ্ঠে বৈচিত্র্য: চাঁদের পৃষ্ঠে পর্বত ও উপত্যকা দেখতে পান, যা প্রমাণ করে চাঁদ মসৃণ নয়।

গ্যালিলিওর এসব বৈজ্ঞানিক পর্যবেক্ষণ এবং পরীক্ষামূলক পদ্ধতি আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞানকে একটি শক্তিশালী ভিত্তি প্রদান করে।

12. জ্যোতির্বিজ্ঞান শাস্ত্রে স্যার আইজ্যাক নিউটনের অবদান কী ছিল?

উঃ
13. জ্যোতির্বিজ্ঞান চর্চার ফলাফল কী হয়েছিল?

উঃ
14. প্রযুক্তিবিদ্যার উন্নতির কারণ কি ছিল?

উঃ
15. কৃষিক্ষেত্রে প্রযুক্তিবিদ্যার উন্নতির ফলাফল কী হয়েছিল?

উঃ
16. ভৌগলিক অভিযানে কলম্বাসের অবদান কী ছিল?

উঃ
17. ভৌগোলিক আবিষ্কারের কারণ গুলি সংক্ষেপে আলোচনা করো।

উঃ
18. ভৌগোলিক আবিষ্কারের সুফল গুলি সংক্ষেপে লেখো।

19. ইউরোপীয় অর্থনীতিতে ভৌগোলিক আবিষ্কারের প্রভাব কেমন ছিল?

উঃ
20. মুদ্রণবিপ্লব কী? ইউরোপে মন্ত্রণ বিপ্লবে আরবদের অবদান কী ছিল?

উঃ
21. কাকে কেন 'আধুনিক মুদ্রণ যন্ত্রের জনক' বলা হয়?

উঃ
22. গুটেনবার্গের মুদ্রণযন্ত্র আবিষ্কার ও তার ফলাফল কী হয়েছিল?

উঃ
23. মুদ্রণযন্ত্রের আবিষ্কার কীভাবে শিক্ষার প্রসারে সাহায্য করেছিল?

উঃ
24. ইউরোপে মুদ্রণ বিপ্লবের পটভূমি আলোচনা করো ৷

উঃ
25. মুদ্রণ বিপ্লবের চারটি ফলাফল সংক্ষেপে লেখো ।

উঃ

 

✍️প্রশ্নের মান-৮:

1. রেনেসাঁকালে ইউরোপের বিজ্ঞানচর্চার অগ্রগতি
আলোচনা করো।
2. অপরসায়ন বলতে কী বোঝো? অপরসায়নের উদ্ভব ও
বিকাশ সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করো ।
3. ডাইনিবিদ্যা বলতে কী বোঝো? ডাইনিবিদ্যার উদ্ভব
কীভাবে হয় বলে তুমি মনে করো ।
4. ডাইনিবিদ্যার সঙ্গে জাদুবিদ্যার সম্পর্ক কী ছিল?
5. মধ্যযুগে ইউরোপে জাদুবিদ্যাচর্চার ওপর সংক্ষিপ্ত
আলোচনা করো।
6. জ্যোতিষবিদ্যা বলতে কী বোঝো? প্রাচীন বিশ্বের নানা
দেশে কীভাবে জ্যোতিষচর্চা হত তা সংক্ষেপে আলোচনা
করো।
7. আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞানচর্চাকে গ্যালিলিও কীভাবে
অগ্রগামী করেছিলেন বলে মনে হয়?
৪. আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞানে সৌরকেন্দ্রিক মহাবিশ্বের ধারণা
কীভাবে গঠিত হল?
9. ভৌগোলিক আবিষ্কারের কারণগুলো আলোচনা করো ।
10. ভৌগোলিক আবিষ্কারের সুদূরপ্রসারী ফলাফল আলোচনা করো।
11. নতুন বিশ্ব বলতে কী বোঝো? নতুন বিশ্বে করা কীভাবে
উপনিবেশ গড়ে তোলে?
12. ইউরোপে কীভাবে আধুনিক মুদ্রণযন্ত্রের পথ চলা শুরু
হয় তা সংক্ষেপে আলোচনা করো।
13. ইউরোপে আধুনিক মুদ্রণযন্ত্রের প্রভাব কী পড়েছিল?