📚সপ্তম শ্রেণির পরিবেশ বিজ্ঞান:প্রশ্নোত্তর:অধ্যায়-১: ভৌত পরিবেশ:আলো📚
✍️ প্রশ্নের মান-১:
1. কী শর্তে আপতন কোণ ও প্রতিসরণ কোণ সমান?
উত্তর : লম্ব আপতনের ক্ষেত্রে
2. আয়নায় একটি ঘড়িতে ৯টা বাজলে প্রকৃতপক্ষে কটা বাজছে?
উত্তর : 6টা
3. আয়নায় P, A, C, O, M, T, S অক্ষরগুলির মধ্যে কোনগুলির প্রতিবিম্বে পার্শ্বীয় পরিবর্তন ঘটবে না?
উত্তর : A, O, M, T
4. আলোর প্রতিসরণের ধর্ম দিয়ে ব্যাখ্যা করা যায় এমন একটি ঘটনা লেখো।
উত্তর : ওপর থেকে দেখলে জল ভরতি পাত্রের তলদেশ ওপরে উঠে আসা
5. আলোর প্রতিফলনের ক্ষেত্রে যে বিন্দুতে আপতিত রশ্মি, প্রতিফলিত রশ্মি ও অভিলম্বের সংযোগ হয়, তাকে কী বলে?
উত্তর : আপতন বিন্দু
6. আয়নার সামনে দাঁড়ালে কী ধরনের প্রতিবিম্ব গঠিত হবে?
উত্তর : সমশীর্ষ ও অসদ্ প্রতিবিম্ব
7. একটি ঈষৎ স্বচ্ছ মাধ্যমের উদাহরণ দাও।
উত্তর : ঘষা কাচ
8. ছায়ার গাঢ় অন্ধকার অঞ্চলকে কী বলে?
উত্তর : প্রচ্ছায়া
9. পেরিস্কোপ যন্ত্রের দুটি সমতল দর্পণ কত কোণ করে অবস্থান করে।
উত্তর : 45°
10. স্টিলের মসৃণ বাটিতে কী ধরনের প্রতিফলন হয়?
উত্তর : নিয়মিত প্রতিফলন
11. সাদা আলো প্রিজ্মে পড়লে সাতটি বর্ণে বিভক্ত হয়। ঘটনাটির নাম কী?
উত্তর : আলোর বিচ্ছুরণ
12. রংধনুর প্রান্তিক (প্রথম ও শেষ) বর্ণ দুটি কী কী ? অথবা, সাদা আলোর বর্ণালিতে প্রান্তিক বর্ণ দুটি কী কী?
উত্তর : বেগুনি ও লাল
13. কী ধরনের প্রতিফলকের ক্ষেত্রে বিক্ষিপ্ত প্রতিফলন হয়?
উত্তর : অমসৃণ
14. কোনো আলোকরশ্মি প্রতিফলকের উপর লম্বভাবে আপতিত হলে প্রতিফলন কোণের মান কত?
উত্তর : 0°
15. আপতন কোণ ও প্রতিফলন কোণের সমষ্টি 90° হলে, প্রতিফলন কোণের মান কত?
উত্তর : 45°
16. কোন্ বিজ্ঞানী বিচ্ছুরণ আবিষ্কার করেন?
উত্তর : স্যার আইজ্যাক নিউটন
17. রংধনু সৃষ্টির সময়ে প্রিজমের ন্যায় কাজ করে কে? অথবা, রংধনুতে আলোর বিচ্ছুরণ ঘটায় কে?
উত্তর : বায়ুতে উপস্থিত জলকণা (জলীয় বাষ্প)
18. আমাদের চামড়ার নীচে যে রঞ্জক থাকে তার নাম কী?
অথবা,
আমাদের চামড়ায় উপস্থিত কোন্ রঞ্জক সূর্য থেকে আসা অতিবেগুনি রশ্মিকে শোষণ করে নেয়?
অথবা,
কোন্ পদার্থের উপস্থিতিতে চামড়ার রং কালো বা বাদামি হয়?
উত্তর : মেলানিন
19. ভাঙা হাড়ের ছবি তুলতে কোন্ রশ্মি ব্যবহার করা হয়?
উত্তর : X-রশ্মি
20. বিক্ষিপ্ত প্রতিফলনে আলোকরশ্মি প্রতিফলনের সূত্র মেনে চলে কি?
উত্তর : হ্যাঁ
21. একটি আলোকরশ্মির আপতন কোণ অপেক্ষা প্রতিসরণ কোণ বেশি হলে, সেটি কোন্ মাধ্যম থেকে কোন্ মাধ্যমে গেছে?
উত্তর : ঘন থেকে লঘু মাধ্যমে
22. আলো কম পেলে কোন্ কোন্ প্রাণী শীতঘুমে চলে যায়?
উত্তর : গিরগিটি, সাপ, ব্যাং, ভালুক, ছুঁচো ইত্যাদি
23. আলো কম পেলে কোন্ প্রাণীর বাচ্চারা মারা যায় ?
উত্তর : স্যামন মাছের
24. সূর্যের আলোর রং কী?
উত্তর : সাদা
25. বর্ণালির সাতটি রং-এর নাম লেখো।
অথবা,
সূর্যের আলোর মধ্যে থাকা সাতটি রং-এর আলোগুলির নাম লেখো।
উত্তর :বেগুনি, নীল, আকাশি, সবুজ, হলুদ, কমলা ও লাল
✍️ প্রশ্নের মান-২/৩:
1. আলো বলতে কি বোঝ?
উত্তর : আলো এক প্রকার শক্তি, যা তরঙ্গের মাধ্যমে বিস্তার লাভ করে আমাদের দর্শনের অনুভূতি ঘটায়। আলো নিজে দৃশ্যমান নয় কিন্তু অন্য সকল বস্তুকে দৃশ্যমান করে তুলে। তাকে দৃশ্যমান আলো (Visible light) বা সংক্ষেপে আলো বলে।
2. আলোক উৎস কাকে বলে?
উত্তর :⦿আলোক উৎস (Source of Light) :যে-কোনো বস্তু, যা আলো উৎপাদন করে বা অন্য উৎস থেকে পাওয়া আলো বিকিরণ করতে সক্ষম, তাকেই আলোক উৎস বলে।
3. সপ্রভ বস্তু কাকে বলে? উদাহরণ দাও?
উত্তর :যেসব বস্তু থেকে আলো নির্গত হয় বা যে সব বস্তু আলো বিকিরণ করে তাদেরকে 'স্বপ্রভ বস্তু' বা 'আলোক উৎস' বলে।
⦿উদাহরণ :সূর্য, তারা বা নক্ষত্র, বৈদ্যুতিক বাতি, জলন্ত মোমবাতি, জোনাকি ইত্যাদি।
4. অপ্রভ বা নিষ্প্রভ বস্তু কাকে বলে? উদাহরণ দাও?
উত্তর :যে সকল বস্তু নিজে আলো নির্গত করতে পারেনা কিন্তু স্বপ্রভ বস্তুর আলোয় নিজে আলোকিত হয় তাকে নিষ্প্রভ বস্তু বলে।
⦿উদাহরণ :ইট, কাঠ, চেয়ার, টেবিল, ঘরবাড়ি, গাছপালা ইত্যাদি।
5. আলোকীয় মাধ্যম বলতে কী বোঝায়?
উত্তর :⦿আলোকীয় মাধ্যম (Optical Medium) :আলোকশক্তি যে অঞ্চল বা স্থানের মধ্য দিয়ে চলাচল করতে পারে, তাকেই আলোকীয় মাধ্যম বলে। যেমন — বায়ু, কাচ, জল ইত্যাদি।
আবার, আলো শূন্যমাধ্যমেও চলাচল করতে পারে। তাই, শূন্যস্থানও একপ্রকার আলোকীয় মাধ্যম।
6. স্বচ্ছ মাধ্যম কাকে বলে? উদাহরণ দাও?
উত্তর :যেসব মাধ্যমের মধ্য দিয়ে আলো সহজে চলাচল করতে পারে তাকে স্বচ্ছ মাধ্যম বলে।
⦿উদাহরণ :জল, কাচ, বায়ু প্রভৃতি।
7. অস্বচ্ছ মাধ্যম কাকে বলে? উদাহরণ দাও?
উত্তর :যেসব মাধ্যমের মধ্য দিয়ে আলো চলাচল করতে পারে না তাকে অস্বচ্ছ মাধ্যম বলে।
⦿উদাহরণ :কাঠ, মাটি, পাথর প্রভৃতি।
8. ঈষৎ স্বচ্ছ মাধ্যম কাকে বলে? উদাহরণ দাও?
উত্তর :যেসব মাধ্যমের মধ্য দিয়ে আলো অংশিক ভাবে চলাচল করতে পারে তাকে ঈষৎ স্বচ্ছ মাধ্যম বলে।
⦿উদাহরণ :ঘষা কাচ, তৈলাক্ত কাগজ প্রভৃতি।
9. সমসত্ত্ব মাধ্যম কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
উত্তর :যে সব মাধ্যমের মধ্য দিয়ে আলো সরলরেখা বরাবর সব দিকে সমান বেগে চলতে পারে তাদের সমসত্ব মাধ্যম বলে।
⦿উদাহরণ :জল, বায়ু, কাচ প্রভৃতি
10. অসমসত্ত্ব মাধ্যম কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
উত্তর :যে সব মাধ্যমের মধ্য দিয়ে আলো সরলরেখা বরাবর চলতে পারে না ও আলোর বেগও সমান থাকে না তাদের অসমসত্ব মাধ্যম বলে।
⦿উদাহরণ :অভ্র, কোয়ার্টজ প্রভৃতি
11. আলো সরল রেখায় চলে - প্রমাণ করো।
উত্তর : আলো সরল রেখায় চলে প্রমাণ করার জন্য একটি জ্বলন্ত মোমবাতি এবং দুটি পাইপ দেওয়া হল পাইপ দুটির মধ্যে একটি সোজা এবং অন্যটি বাঁকা। এবার এক চোখ বন্ধ করে সোজা পাইপটি দিয়ে জলন্ত মোমবাতির শিখাটিকে দেখার চেষ্টা করলে খুব সহজেই মোমবাতির শিখাটি দেখতে পাব। অনুরূপ ভাবে বাঁকা পাইপ দিয়ে মোমবাতির শিখা দেখার চেষ্টা করলে মোমবাতির শিখাটিকে দেখতে পাওয়া যাবে না। এই দুটি ঘটনা থেকে বোঝা গেল প্রথম পাইপ সোজা থাকার দরুন আলো খুব সহজেই আমাদের চোখে এসে পড়ে। কিন্তু দ্বিতীয় ক্ষেত্রে আমরা মোমবাতির শিখাটি দেখতে পেলাম না কারণ পাইপটি বাঁকা ছিল। এর থেকে প্রমাণিত হয় আলো সরলরেখা বরাবর চলাচল করে।
12. ‘আলো একপ্রকার শক্তি – এই বক্তব্যের সমর্থনে যুক্তি দাও।
উত্তর :1. অন্যান্য শক্তির মতো আলোও অদৃশ্য, ভরহীন, আয়তনহীন কিন্তু ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য।
2. অন্যান্য শক্তিকে যেমন আলোতে আলোকে তেমন অন্য শক্তিতে রূপান্তরিত করা যায়, যেমন— - বৈদ্যুতিক বাতিতে তড়িৎশক্তি আলোকশক্তিতে রূপান্তরিত হয়। আবার, সৌরকোশে আলোকশক্তি তড়িৎশক্তিতে পরিবর্তিত হয়। হাইড্রোজেন ও ক্লোরিন গ্যাস মিশিয়ে আলোর মধ্যে রাখলে হাইড্রোজেন ক্লোরাইড গ্যাস উৎপন্ন হয়। এক্ষেত্রে, আলোকশক্তি রাসায়নিক শক্তিতে রূপান্তরিত হয়েছে।
13. ‘শুধু চোখ থাকলেই দেখা যায় না, দেখার জন্য আলো দরকার' ব্যাখ্যা করো।
উত্তর : আলোকরশ্মি কোনো বস্তু থেকে প্রতিফলিত বা প্রতিসৃত হয়ে আমাদের চোখে এসে পৌঁছোলে তবেই বস্তুটিকে দেখা যায়। সুতরাং, কোনো বস্তুকে দেখতে হলে সেটি আলোকিত হওয়া প্রয়োজন। তাই বলা হয়, কোনো কিছু দেখার জন্য চোখ এবং আলো দুই-ই দরকার।
আলোক রশ্মি
1. আলোক রশ্মি কাকে বলে?
উত্তর : আলো সরল রেখায় চলাচল করে। আলোর চলার পথকে তীর চিহ্ন যুক্ত যে কাল্পনিক সরলরেখা দিয়ে বোঝানো হয় তাকে আলোকরশ্মি বলে।
2. রশ্মিগুচ্ছ বলতে কী বোঝায়?
⦿রশ্মিগুচ্ছ (Beam of Light) :আলোর উৎস যত ছোটোই হোক না কেন, তা থেকে প্রকৃতপক্ষে অসংখ্য রশ্মি নির্গত হয়। একাধিক আলোকরশ্মির সমবায় বা সমন্বয়কে বলা হয় রশ্মিগুচ্ছ।
3. আলোক রশ্মিগুচ্ছ কত প্রকার ও কি কি? প্রত্যেক প্রকারের সংজ্ঞা দাও।
উত্তর :আলোকরশ্মি গুচ্ছ তিন প্রকার। যথা - ১) সমান্তরাল আলোকরশ্মি গুচ্ছ।
২) অভিসারী আলোকরশ্মি গুচ্ছ।
৩) অপসারী আলোকরশ্মি গুচ্ছ।
১) সমান্তরাল আলোকরশ্মি গুচ্ছ :যে আলোক রশ্মিগুচ্ছের রশ্মিগুলি পরস্পর সমান্তরালে থাকে তাদের সমানতরাল রসের উৎস বলে।
২) অভিসারী আলোকরশ্মি গুচ্ছ :যে আলোক রশ্মিগুচ্ছের রশ্মি গুলি কোন একটি নির্দিষ্ট বিন্দুতে মিলিত হয় বা হওয়ার চেষ্টা করে তাদের অভিসারী আলোকরশ্মি গুচ্ছ বলে।
৩) অপসারী আলোক রশ্মিগুচ্ছ :যে আলোক রশ্মিগুচ্ছের রশ্মিগুলি কোন একটি বিন্দু থেকে ছড়িয়ে পড়ছে বলে মনে হয় বা রশ্মিগুলি পরস্পর থেকে ক্রমশ দূরে সরে যায় তাদের অপসারী আলোকরশ্মি গুচ্ছ বলে।
ছায়া ও উপচ্ছায়া
1. ছায়া বা প্রচ্ছায়া কাকে বলে?
উত্তর : আলোর গতিপথে কোন অস্বচ্ছ বস্তুুুু থাকলে বা রাখলে বস্তুুটির পেছনে একটি অন্ধকারাচ্ছন্ন অঞ্চলের সৃষ্টি হয়। এই অন্ধকারাচ্ছন্ন অঞ্চলটিকেে ছায়া বা প্রচ্ছায়া বলা হয়।
2. উপচ্ছায়া বলতে কী বোঝো?
উত্তর : বিস্তৃত আলোক উৎসের সামনে কোন অস্বচ্ছ বস্তু থাকলে যে ছায়া বা প্রচ্ছায়ার সৃষ্টি হয় তার চারপাশে একটি কম অন্ধকারাচ্ছন্ন স্থান থাকে, যেখানে আলোক উৎসের সব জায়গা থেকে আলো না আসতে পারলেও কিছু কিছু অংশ থেকে আলো পৌঁছায়, এই কম অন্ধকারাচ্ছন্ন অঞ্চলটিকে উপচ্ছায়া বলা হয়।
3. ছায়ার আকার বা প্রকৃতি কোন কোন বিষয়ের উপর নির্ভর করে?
উত্তর :ছায়া সৃষ্টির জন্য তিনটি বস্তুর উপস্থিতি একান্ত কাম্য। এগুলি হল- আলোক উৎস, অস্বচ্ছ বস্তু (যে বস্তুর ছায়া সৃষ্টি হয়) ও পর্দা (যার উপর ছায়া পড়ে)। তাই ছায়ার আকার বা প্রকৃতি নির্ভর করে এই তিনটে বস্তুর অবস্থান ও আকৃতির উপর। সহজ ভাবে ছায়ার আকার বা প্রকৃতি নির্ভর করে -
১) আলোক উৎসের আকারের উপর।
২) অস্বচ্ছ বস্তুর আকারের উপর।
৩) আলোক উৎস থেকে অস্বচ্ছ বস্তুর দূরত্বের উপর
৪) স্বচ্ছ বস্তু থেকে পর্দার দূরত্বের উপর।
সূচিছিদ্র ক্যামেরা
1. একটি সরল সূচিছিদ্র ক্যামেরার গঠন বর্ণনা করো বা সূচিছিদ্র ক্যামেরা কাকে বলে?
উত্তর : এটি একটি আয়তাকার কার্ডবোর্ডের বাক্স, যার সামনের দেওয়ালে মাঝ বরাবর একটি সূক্ষ্ম ছিদ্র থাকে এবং পিছনের দেয়ালে কার্ডবোর্ডের বদলে একটি ঘষা কাচ থাকে। পিছনের কাচ বাদ দিয়ে অন্যান্য অংশ কালো রং করা থাকে এতে আলোর প্রতিফলন বন্ধ করা যায় ও প্রতিকৃতি খুব উজ্জ্বল হয়। এবার সূক্ষ্ম ছিদ্রটি সামনে কোন স্বপ্রভ আলোক উৎস রাখলে ঘষা কাঁচের দেয়ালে তার উল্টো প্রতিকৃতি পাওয়া যায়। কিরকম প্রতিকৃতি সৃষ্টিকারী যন্ত্রকে সূচিছিদ্র ক্যামেরা বলা হয়।
2. সূচিছিদ্র ক্যামেরায় সৃষ্ট প্রতিকৃতির বৈশিষ্ট্য গুলি কি কি?
উত্তর :সূচিছিদ্র ক্যামেরায় সৃষ্ট প্রতিকৃতির বৈশিষ্ট্য গুলি হল -
১) বস্তুর সাপেক্ষে প্রতিকৃতি উল্টো দেখায়।
২) ক্যামেরার ছিদ্র ছোট (বা ক্ষুদ্র) হলে প্রতিকৃতি স্পষ্ট হয় আর ছিদ্র বড় হলে প্রতিকৃতি অস্পষ্ট দেখায়।
৩) ক্যামেরার ছিদ্র থেকে বস্তুকে দূরে সরালে প্রতিকৃতির আকার ছোট হয় এবং বস্তুকে ছিদ্রের কাছে আনলে প্রতিকৃতি আকার বড় হয়।
৪) ক্যামেরার ছিদ্র থেকে উৎসের দূরত্ব স্থির রেখে বক্স এর দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি করলে বা ঘষা কাচটিকে ছিদ্র থেকে দূরে সরিয়ে নিলে প্রতিকৃতির আকার বড় হয় এবং ছিদ্রের কাছে আনলে প্রকৃতির আকার ছোট হয়।
৫) ছিদ্রের আকৃতি যাই হোক না কেন, প্রতিকৃতির আকৃতি সবসময় বস্তুর মতো হয়।
3. সূচিছিদ্র ক্যামেরার ছিদ্র বড় হলে প্রতিকৃতি অস্পষ্ট হয় কেন?
উত্তর : সূচিছিদ্র ক্যামেরার ছিদ্র বড় হলে প্রতিকৃতি অস্পষ্ট হয় কারন- একটি বড় ছিদ্রকে অসংখ্য ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র একক ছিদ্রের সমষ্টি হিসেবে কল্পনা করা যায়। তাই প্রতিটি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র একক ছিদ্র এক একটি করে আলাদা আলাদা প্রতিকৃতির সৃষ্টি করে। কিন্তু ছিদ্র গুলি পাশাপাশি অবস্থান করায় প্রতিকৃতি গুলিও একে অপরের খুব কাছাকাছি থাকে ও একে অপরের উপর পড়ে মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়। ফলে প্রতিকৃতি অস্পষ্ট দেখায়।
4. শ্যাডো আর্ট কী ?
⦿শ্যাডো আর্ট (Shadow art) :সাধারণভাবে ছায়া থেকে বস্তুর আকার জানা গেলেও, কখনো কখনো তা বিভ্রান্তিও সৃষ্টি করে। 'Shadow art' হল এরকমের বিভ্রান্তি। একটি অন্ধকার ঘরে একটি টর্চ বা মোমবাতি জ্বালিয়ে তার সামনে দু-হাতের তালু ও আঙুল বিভিন্ন মুদ্রায় (Hand gestures) ব্যবহার করে পরিচিত বস্তু ও পশুপাখির আকৃতি তৈরি করলে দেয়ালে তার ছায়া গঠিত হয়। এভাবে ছায়া গঠনের মাধ্যমে দর্শকদের মনোরঞ্জনের যে কলাকৌশল, তাকে শ্যাডো আর্ট বলে।
5. সুচিছিদ্র ক্যামেরার মূলনীতি কী?
⦿সুচিহ্নিড ক্যামেরা (Pinhole Camera)-এর মূলনীতি :আলো সরলরেখায় গমন করে - এই ধর্ম অবলম্বন করে ক্যামেরার সম্মুখে কোনো বস্তুকে রাখলে, অপর পাশে রাখা ঘষা কাচের পর্দায় বস্তুটির উলটো প্রতিকৃতি সৃষ্টি হয়।
6. সূচিছিদ্র ক্যামেরার বৈশিষ্ট্য কী?
উত্তর :সূচিচ্ছিদ্র ক্যামেরার বৈশিষ্ট্যগুলি হল -
আলো সরলরেখায় চলে— এই ধর্মকে কাজে লাগিয়ে সুচিছিদ্র ক্যামেরা তৈরি করা হয়। ও ছিদ্রের আকার খুব ছোটো হলে প্রতিকৃতি স্পষ্ট হবে, কিন্তু বড়ো হলে অস্পষ্ট হবে। ও আলোর অবাঞ্ছিত প্রতিফলন যাতে প্রতিকৃতিকে অস্পষ্ট করে দিতে না পারে, সেজন্য, ক্যামেরার ভিতর ও বাইরের দেয়াল কালো রং করা হয়। এটি বস্তুর অবশীর্ষ প্রতিকৃতি সৃষ্টি করে।
আলোর প্রতিফলন
1. আলোর প্রতিফলন কাকে বলে?
উত্তর : আলো যখন কোন স্বচ্ছ ও সমসত্ত্ব মাধ্যমের মধ্য দিয়ে গিয়ে অন্য কোনো মাধ্যমে আপতিত হয় তখন দুই মাধ্যমের বিভেদতল থেকে আপতিত আলোকরশ্মির কিছু অংশ অভিমুখ পরিবর্তন করে আবার প্রথম মাধ্যমে ফিরে আসে। আলোর এই ঘটনাকে আলোক প্রতিফলন বলে।
2. আলোর প্রতিফলন কত প্রকার ও কি কি?
উত্তর :আলোর প্রতিফলন দুই প্রকার -
১) নিয়মিত প্রতিফলন
২) বিক্ষিপ্ত প্রতিফলন
3. নিয়মিত প্রতিফলন কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
উত্তর :সমান্তরাল আলোক রশ্মিগুচ্ছ যখন কোন মসৃণ প্রতিফলক তলে আপতিত হয় তখন ওই আলোক রশ্মিগুচ্ছ সমান্তরাল রশ্মিগুচ্ছ রূপেই প্রতিফলিত হয়। আলোর এইরূপ প্রতিফলনকে নিয়মিত প্রতিফলন বলে।
⦿উদাহরণ :সমতল দর্পণ, মসৃণ ধাতব তল, স্থির জলের উপরিতল প্রভৃতি আলোর নিয়মিত প্রতিফলন ঘটায়।
4. বিক্ষিপ্ত প্রতিফলন কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
উত্তর :সমান্তরাল আলোক রশ্মিগুচ্ছ যখন কোন অমসৃণ প্রতিফলক তলে আপতিত হয় তখন ওই আলোক রশ্মিগুচ্ছ সমান্তরাল রশ্মিগুচ্ছ রূপে প্রতিফলিত না হয়ে , বিক্ষিপ্ত আকারে চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। আলোর এইরূপ প্রতিফলনকে বিক্ষিপ্ত প্রতিফলন বলে।
⦿উদাহরণ :ঘষা কাচ, সাদা কাগজ, ঘরের অমসৃণ দেওয়াল প্রভৃতি আলোর বিক্ষিপ্ত প্রতিফলন ঘটায়।
5. প্রতিফলক কাকে বলে?
⦿প্রতিফলক (Reflector) :আলোকরশ্মি সমসত্ত্ব স্বচ্ছ মাধ্যমের মধ্য দিয়ে যেতে যেতে দ্বিতীয় কোনো মাধ্যমে আপতিত হলে দুটি মাধ্যমের যে তল থেকে আলোর কিছু অংশ পুনরায় প্রথম মাধ্যমে ফিরে আসে, সেই তলকে প্রতিফলক বলে।
6. আপতন কাকে বলে?
⦿আপতন বিন্দু (Point of Incidence) :প্রতিফলনের সময় প্রতিফলকের উপর যে বিন্দুতে আলোকরশ্মি আপতিত হয় এবং সেখান থেকে প্রতিফলিত হয়ে পুনরায় প্রথম মাধ্যমে ফিরে আসে, সেই বিন্দুটিকে বলা হয় আপতন বিন্দু।
7. সিনেমার পর্দা সাদা ও অমসৃণ করা হয় কেন?
উত্তর : সিনেমার পর্দা সাদা হওয়ার দরুন আপতিত আলোর কোন অংশই শোষিত হয় না হলে ছবির উজ্জ্বলতা বজায় থাকে। এবং অমসৃণ করা হয় কারণ পর্দার অমসৃণ তলে আলোর বিক্ষিপ্ত প্রতিফলন হয় ও প্রতিফলন আলো চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়ে ফলে সিনেমা হলের যেকোন আসনের দর্শক ছবিটি সহজেই দেখতে পায়।
8. বইয়ের পাতা সাদা ও খসখসে করা হয় কেন?
উত্তর : বইয়ের পাতা সাদা হওয়ার জন্য পাতা দ্বারা কোন আলো শোষিত হয় না ফলে লেখা গুলো স্পষ্ট দেখায়। এবং পাতা খসখসে করা হয় যাতে করে আলোর বিক্ষিপ্ত প্রতিফলন হয় ও যে কোনো দিক থেকেই লেখাগুলো পড়া যায়।
9. আলোর প্রতিফলনের সূত্র গুলি লেখ।
উত্তর :আলোর প্রতিফলন দুটি সূত্র মেনে চলে। এগুলি হল -
১) আলোর প্রতিফলনের প্রথম সূত্র :আপতিত রশ্মি, প্রতিফলিত রশ্মি ও আপাতন বিন্দুতে প্রতিফলকের উপর অঙ্কিত অভিলম্ব সর্বদা একই সমতলে থাকে।
২) আলোর প্রতিফলনের দ্বিতীয় সূত্র :প্রতিফলন কোণের মান সর্বদা আপাতন কোণের মানের সমান হয়।
10. পেরিস্কোপ কী?
উত্তর :সরাসরি কোনো বস্তুকে দেখার পথে বাধা থাকলে দুটি সমান্তরাল দর্পণে আলোর ক্রমিক প্রতিফলন ঘটিয়ে বস্তুটিকে দেখার যে বিশেষ আলোকীয় ব্যবস্থা গঠন করা হয়, তাকে পেরিস্কোপ বলে।
11. আলোর প্রতিফলনের জন্য আমরা কী সুবিধা পেতে পারি ?
উত্তর :প্রতিফলন দ্বারা আমরা যেসব সুবিধাগুলি (পাত পারি ← সমতল দর্পণ বা যে-কোনো মসৃণ প্রতিফলকে আলোর প্রতিফলন ঘটার ফলে প্রতিবিম্ব গঠিত হয়। এই ঘটনাকে কাজে লাগিয়ে পেরিস্কোপ, ক্যালাইডোস্কোপ ইত্যাদি যন্ত্রগুলিকে বিভিন্ন প্রয়োজনে ব্যবহার করা হয়। ও সমতল দর্পণে নিয়মিত প্রতিফলনের দ্বারা প্রতিবিম্ব গঠিত হওয়ায় আমরা আয়নায় নিজেদের প্রতিবিম্ব দেখতে পাই। যে-কোনো অমসৃণ ও অস্বচ্ছ বস্তু থেকে আলোর বিক্ষিপ্ত প্রতিফলন ঘটায় সেগুলি আমরা দেখতে পাই।
12. সিনেমা হলে পর্দার বদলে আয়না রাখলে কী হবে?
উত্তর :সিনেমা হলে পর্দার বদলে আয়না রাখলে নিয়মিত প্রতিফলনের জন্য প্রতিফলিত রশ্মিগুলি হলের একটি নির্দিষ্ট দিকের দর্শকদের চোখে গিয়ে পড়ত। ফলে, ওই স্থানের দর্শকরাই কেবল ছবি দেখতে পেত এবং চোখ ধাঁধিয়ে যেত। হলের অন্যান্য অংশ থেকে দর্শকরা কোনো ছবি দেখতে পেত না।
13. ক্যামেরার ভিতরের রং কালো হয় কেন?
উত্তর : ক্যামেরার ভিতরের রং কালো না করলে আলো যখন ক্যামেরার ভিতর প্রবেশ করবে তখন, প্রতিফলন ও শোষণের ফলে প্রতিচ্ছবি আবছা হবে। ভিতরে কালো রং করে দিলে প্রতিফলিত রশ্মিগুলি কালো রং দ্বারা শোষিত হবে এবং পর্দার প্রতিচ্ছবি স্পষ্ট হবে। তাই, আলোকরশ্মির অবাঞ্ছিত প্রতিফলন ও শোষণ দূর করার জন্য ক্যামেরার ভিতরের রং কালো করা হয়।
14. নিয়মিত প্রতিফলন ও বিক্ষিপ্ত প্রতিফলনের পার্থক্য লিখ।
উত্তর :
নিয়মিত প্রতিফলন
বিক্ষিপ্ত প্রতিফলন
1. নিয়মিত প্রতিফলনের জন্য মসৃণ ও চকচকে প্রতিফলক তলের প্রয়োজন
1. বিক্ষিপ্ত প্রতিফলনের জন্য অমসৃণ ও খসখসে প্রতিফলক তলের প্রয়োজন
2. নিয়মিত প্রতিফলনের ক্ষেত্রে প্রতিফলিত রশ্মি গুলি একটি নির্দিষ্ট দিকে প্রতিফলিত হয়
2. বিক্ষিপ্ত প্রতিফলনের ক্ষেত্রে প্রতিফলিত রশ্মি গুলি বিভিন্ন দিকে ছড়িয়ে পড়ে
3. নিয়মিত প্রতিফলনে প্রতিফলক বস্তুর প্রতিবিম্ব সৃষ্টি হয়
3. বিক্ষিপ্ত প্রতিফলনে বস্তুর প্রতিবিম্ব সৃষ্টি হয় না
4. প্রতিফলককে ঘুরিয়ে ইচ্ছেমতাে প্রতিফলিত রশ্মির দিক পরিবর্তন করা যায়
4. প্রতিফলককে ঘুরালেও প্রতিফলিত রশ্মির দিক পরিবর্তন বোঝা যায় না
আলোর প্রতিসরণ
1. আলোর প্রতিসরণ কাকে বলে?
উত্তর : আলোক রশ্মি যখন এক মাধ্যম থেকে অন্য আরেকটি ভিন্ন মাধ্যমে প্রবেশ করে, তখন দুই মাধ্যমের বিভেদ তল থেকে ওই আলোক রশ্মির অভিমুখ পরিবর্তন হয়। দ্বিতীয় মাধ্যমে আলোক রশ্মির এইরূপ অভিমুখ পরিবর্তনের ঘটনাকে আলোর প্রতিসরণ বলে।
2. বিভেদতল বলতে কী বোঝায়?
⦿বিভেদত্তল (Interface) :দুটি ভিন্ন আলোকীয় মাধ্যমকে পৃথক করে যে তল, তাকেই বিভেদতল বলে।
অথবা, ভিন্ন আলোকীয় ঘনত্ব বিশিষ্ট দুটি মাধ্যমের সংযোগস্থলের তলটিকে ওই দুই মাধ্যমের বিভেদতল বলে।
⦿উদাহরণ :একটি কাচের গ্লাসে কিছুটা জল নিয়ে উপর থেকে দেখলে যে তলটি চোখে পড়ে, তা হল ‘বায়ু ও জলের বিভেদতল'। আবার, গ্লাসটির গা বেয়ে অল্প পরিমাণ নীল কেরোসিন তেল ঢেলে পাশ থেকে দেখলে যে নীলরঙের গোলতলটি চোখে পড়ে, তা হল ‘কেরোসিন ও জলের বিভেতল’।
3. প্রতিসরাঙ্ক কাকে বলে?
⦿প্রতিসরাঙ্ক (Refractive Index) :প্রতিসরাঙ্ক হল কোনো আলোকীয় মাধ্যমের উপাদানের এমন একটি ধর্ম, যার মানের ওপর ওই মাধ্যমে প্রবেশ করা আলোকরশ্মির গতির অভিমুখ এবং ওই মাধ্যমে আলোর বেগের মান নির্ভর করে।
কোনো আলোকীয় মাধ্যমের পরম প্রতিসরাঙ্ক,
u = শূন্য মাধ্যমে আলোর বেগ/ওই মাধ্যমে আলোর বেগ
4. আলোর প্রতিসরণের সূত্র দুটি লেখ।
⦿প্রথম সূত্র :আপতিত রশ্মি, প্রতিসৃত রশ্মি এবং আপতন বিন্দুতে বিভেদতলের উপর অঙ্কিত অভিলম্ব সর্বদা একই সমতলে অবস্থান করে
⦿দ্বিতীয় সূত্র :নির্দিষ্ট মাধ্যমদ্বয় ও নির্দিষ্ট বর্ণের আলোর ক্ষেত্রে, আপতন কোণের সাইন (sin) এবং প্রতিসরণ কোণের সাইনের (sin) অণুপাত সর্বদা ধ্রুবক থাকে।
প্রতিবিম্ব
1. প্রতিবিম্ব কাকে বলে?
উত্তর : কোন বিন্দুউৎস থেকে আগত অপসারী আলোকরশ্মি গুচ্ছ প্রতিফলিত বা প্রতিসৃত হয়ে যদি অন্য কোন বিন্দুতে মিলিত হয় অথবা অন্য কোন বিন্দু থেকে অপসৃত হচ্ছে বলে মনে হয়, তবে ওই দ্বিতীয় বিন্দুকে প্রথম বিন্দুউৎসের প্রতিবিম্ব বলে।
2. সদবিম্ব কাকে বলে?
উত্তর :কোন বিন্দুউৎস থেকে আগত অপসারী আলোকরশ্মি গুচ্ছ প্রতিফলিত বা প্রতিসৃত হয়ে যদি অন্য কোন বিন্দুতে মিলিত হয়, তবে ওই দ্বিতীয় বিন্দুকে প্রথম বিন্দুর সদবিম্ব বলে।
⦿উদাহরণ :সিনেমার পর্দায় ও ক্যামেরায় গঠিত প্রতিবিম্ব সদবিম্ব।
3. অসদবিম্ব কাকে বলে?
উত্তর :কোন বিন্দুউৎস থেকে আগত অপসারী আলোকরশ্মি গুচ্ছ প্রতিফলিত বা প্রতিসৃত হয়ে যদি অন্য কোন বিন্দু থেকে অপসৃত হচ্ছে বলে মনে হয়, তবে ওই দ্বিতীয় বিন্দুকে প্রথম বিন্দুর অসদবিম্ব বলে।
⦿উদাহরণ :সমতল দর্পণ বা আয়নায় গঠিত প্রতিবিম্ব, স্থির জলে সৃষ্ট প্রতিবিম্ব, মরুভূমির মরীচিকা প্রভৃতি অসদবিম্বের উদাহরণ। অসদবিম্ব চোখে দেখা যায় কিন্তু পর্দায় ধরা যায় না।
4. পার্শ্বীয় পরিবর্তন কাকে বলে?
উত্তর :পার্শ্বীয় পরিবর্তন (Lateral Inversion) : সমতল দৰ্গণে গঠিত কোনো বস্তুর পুরো প্রতিবিম্বটি বস্তুর সাপেক্ষে পাশাপাশি উলটে যাওয়ার ঘটনাকে পার্শ্বীয় পরিবর্তন বলে।
5.সদবিম্ব ও সদবিম্ব পার্থক্য লিখ।
উত্তর :
সদবিম্ব
অসদবিম্ব
1. প্রতিফলিত বা প্রতিসৃত আলোকরশ্মি গুচ্ছ অন্য কোন বিন্দু থেকে অপসৃত হচ্ছে বলে মনে হলে, যে প্রতিবিম্ব গঠিত হয় তা অসদবিম্ব।
1. প্রতিফলিত বা প্রতিসৃত আলোকরশ্মি গুচ্ছ অন্য কোন বিন্দুতে মিলিত হলে, যে প্রতিবিম্ব গঠিত হয় তা সদবিম্ব।
2. সদবিম্বকে চোখে দেখা যায় ও পর্দায় ফেলা যায়।
2. অসদবিম্বকে চোখে দেখা গেলেও ও পর্দায় ফেলা যায় না।
3. সদবিম্ব বস্তুর সাপেক্ষে অবশীর্ষ বা উল্টো দেখায়
3. অসদবিম্ব বস্তুর সাপেক্ষে সমশীর্ষ বা সোজা দেখায়
4. সমতল দর্পণ বা আয়নায় গঠিত প্রতিবিম্ব ও স্থির জলে সৃষ্ট প্রতিবিম্ব অসদবিম্ব
4. সিনেমার পর্দায় ও ক্যামেরায় গঠিত প্রতিবিম্ব সদবিম্ব।
আলোর বিচ্ছুরণ
1. আলোর বিচ্ছুরণ কাকে বলে?
উত্তর :⦿আলোর বিচ্ছুরণ (Dispersion of Light):প্রিজম বা উপযুক্ত স্বচ্ছ প্রতিসারক মাধ্যমের ভিতর দিয়ে প্রতিসৃত হওয়ার ফলে, সাদা বা অন্য কোনো যৌগিক বর্ণের আলোর একবর্ণী বা মৌলিক বর্ণে বিশ্লিষ্ট বা আলাদা হয়ে যাওয়ার ঘটনাকে বিচ্ছুরণ বলে।
2. বর্ণালি কাকে বলে?
⦿বর্ণালি (Spectrum) :সাদা বা বহুবর্ণী আলো উপযুক্ত বিচ্ছুরক মাধ্যমের মধ্য দিয়ে যাওয়ার ফলে, উপাদান বর্ণে বিশ্লিষ্ট হয়ে যে রঙিন আলোকপটি গঠন করে, তাকে বর্ণালি বলে।
3. বিশুদ্ধ বর্ণালি কাকে বলে?
⦿বিশুদ্ধ বর্ণালি (Pure Spectrum) : যে বর্ণালিতে প্রত্যেকটি বর্ণ আলাদা আলাদাভাবে স্পষ্ট দেখা যায় এবং এক বর্ণের আলো অন্য বর্ণের আলোর ওপর পড়ে না, তাকে বিশুদ্ধ বা শুদ্ধ বর্ণালি বলে।
⦿উদাহরণ :আলোকীয় গ্রেটিং, কম্প্যাক্ট ডিস্ক দ্বারা গঠিত বর্ণালি।
4. অশুদ্ধ বর্ণালি কাকে বলে?
⦿অশুদ্ধ বর্ণালি (Impure Spectrum) :যে বর্ণালিতে আলোর বর্ণগুলির একটির ওপর আর একটি এসে পড়ে এবং বর্ণালির সাতটি রং পরিষ্কারভাবে দেখা যায় না, তাকে অশুদ্ধ বর্ণালি বলে।
⦿উদাহরণ :রংধনু, প্রিজম দ্বারা গঠিত বর্ণালি।
......................