📚 অষ্টম শ্রেণির পরিবেশ: অধ্যায় ভিত্তিক প্রশ্নোত্তর:অধ্যায়-২:স্পর্শ ছাড়া ক্রিয়াশীল বল(প্রশ্নের মান-১,২,৩)📚
✍️ প্রশ্নের মান-১:
১. কোন বলের প্রভাবে বৃষ্টি আকাশ থেকে পৃথিবীর দিকে নেমে আসে?
উত্তর: অভিকর্ষ বলের প্রভাবে।
২. পৃথিবীর সব বস্তুকেই বল দিয়ে টানে।
উত্তর: অভিকর্ষ।
৩. মহাকর্ষ টান কে কাজে লাগিয়ে কোন যন্ত্র তৈরি করা হয়েছে?
উত্তর : স্প্রিং তুলা যন্ত্র।
৪. কোন যন্ত্রের সাহায্যে বস্তুর ওজন বা ভার মাপা হয়?
উত্তর : স্প্রিং তুলা যন্ত্রের সাহায্যে বস্তুর ওজন বা ভার মাপা হয়।
৫. অভিকর্ষ ও মহাকর্ষ বল কি আলাদা?
উত্তর : না, অভিকর্ষ ও মহাকর্ষ বল আলাদা নয়।
৬. অভিকর্ষ একটি-------- বল।
উত্তর : মহাকর্ষ।
৭. পৃথিবীর মুক্তিবেগ কত?
উত্তর: পৃথিবীর মুক্তিবেগ 11.2 কিমি / সেকেন্ড।
৮. নূন্যতম কত বেগে কোন বস্তুকে পৃথিবী থেকে চলে তা পৃথিবীর মধ্যাকর্ষণ শক্তির বাইরে চলে যাবে?
উত্তর: 11.2 কিমি / সেকেন্ড বেগে।
৯. মহাকর্ষ বল কি কখনো শূন্য হতে পারে?
উত্তর : না, মহাকর্ষ বল শূন্য হতে পারে না। অর্থাৎ যে কোন বস্তুর মহাকর্ষীয় প্রভাব অসীম দূরত্ব পর্যন্ত বহাল থাকে।
১০. শূন্যস্থান পূরণ করো: ওজন=-------×ভর।
উত্তর: অভিকর্ষজ ত্বরণ।
১১. অভিকর্ষজ ত্বরণ কাকে বলে?
উত্তর : অভিকর্ষ বলের প্রভাবে অবাধে পতনশীল কোনো বস্তুর ত্বরণ সৃষ্টি হয় তাকে অভিকর্ষজ ত্বরণ বলে।
১২. একক ভরের বস্তুর ওপর প্রযুক্ত অভিকর্ষ বল অভিকর্ষজ ত্বরণের মান এর তফাৎ কত?
উত্তর : শূন্য। অর্থাৎ একক ভরের বস্তুর উপর অভিকর্ষ বলের মান ও অভিকর্ষজ ত্বরণের মান সমান।
১৩. এস আই পদ্ধতিতে g এর গড় মান কত?
উত্তর: এস আই পদ্ধতিতে g এর গড় মান 9.8 মিটার/সেকেন্ড2
১৪. কোন বস্তুর ভর 3 কেজি হলে তার ওজন কত?
উত্তর : কোন বস্তুর ভর 3 কেজি হলে তার ওজন 3×9.8 নিউটন = 29.4 নিউটন।
১৫. ওজনের এস আই পদ্ধতিতে একক কি?
উত্তর : ওজনের এস আই পদ্ধতিতে একক নিউটন।
১৬. ওজনের সিজিএস পদ্ধতিতে একক কি?
উত্তর : ওজনের সিজিএস পদ্ধতিতে একক ডাইন।
১৭. কে সর্বপ্রথম প্রমাণ করেন যে হালকা ও ভারী সব বস্তুকেই একাত্মতা থেকে ফেললে একই সাথে মাটি স্পর্শ করবে?
উত্তর: বিজ্ঞানী গ্যালিলিও গ্যালিলাই।
১৮. ঘর্ষণজাত ও তড়িৎ বা আধান কাকে বলে?
উত্তর : ঘর্ষণের ফলে কোন বস্তুতে সৃষ্টি হওয়া তড়িৎ কে ঘর্ষণজাত তড়িৎ আধান বলে।
১৯. সমজাতীয় তড়িৎ পরস্পরকে করে।
উত্তর: বিকর্ষণ।
২০. ভিন্ন জাতীয় তড়িৎ পরস্পরকে করে।
উত্তর: আকর্ষণ।
২১. কে সর্বপ্রথম তড়িৎ এর প্রকৃতি সম্বন্ধে প্রাথমিক ধারণা দেন?
উত্তর : বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিন।
২২. কুলম্বের সূত্রটি লেখ।
উঃ দুইটি বিন্দু চার্জের মধ্যে আকর্ষণ বা বিকর্ষণ বল চার্জ দুইটির পরিমাণের গুণফলের সমানুপাতিক এবং এদের মধ্যে দূরত্বের বর্গের ব্যস্তানুপাতিক।
গাণিতিক রূপটি হলো-F=K.q1q2/r2
২৩. আধানের এস আই একক কি?
উত্তর : আধানের এস আই একক হল কুলম্ব।
২৪. আধানের সিজিএস একক কি?
উত্তর: আধানের সিজিএস একক হল ই.এস.ইউ বা স্ট্যাটকুলম্ব।
২৫. শূন্য মাধ্যমে K এর মান কত?
উত্তর: 9×10⁹নিউটন × মিটার² / কুলম্ব²
২৬. পরমাণুর নিউক্লিয়াস আর ইলেকট্রনের মধ্যে কি ধরনের বল ক্রিয়া করে?
উত্তর : আকর্ষণ বল।
✍️ প্রশ্নের মান-২/৩:
১. স্পর্শ ছাড়া ক্রিয়াশীল বল বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : পরস্পরের সংস্পর্শে না থাকা অবস্থায় দুটি বস্তুর মধ্যে ক্রিয়াশীল বলকে স্পর্শ ছাড়া ক্রিয়াশীল বল বলে। যেমন – অভিকর্ষ তথা মহাকর্ষ, চুম্বকীয় আকর্ষণ বা বিকর্ষণ, শিার তড়িৎবল ইত্যাদি।
২. অভিকর্ষ কাকে বলে?
উত্তর : ভূপৃষ্ঠে বা ভূপৃষ্ঠের কাছাকাছি অবস্থিত কোনো বস্তুকে পৃথিবী যে বল দ্বারা আকর্ষণ করে তাকে অভিকর্ষ বলা হয়।
এই অভিকর্ষের ফলেই ভূপৃষ্ঠের কিছুটা ওপর থেকে কোনো বস্তুকে ছেড়ে দিলে বস্তুটি ভূপৃষ্ঠের দিকে গতিশীল হয়। স্পষ্টতই অভিকর্ষ মহাকর্ষের একটি বিশেষ রূপমাত্র।
৩. নিউটনের মহাকর্ষীয় সূত্রটি লেখো।
উত্তর : নিউটনের মহাকর্ষ সূত্রটি হলো- মহাবিশ্বের প্রতিটি বস্তুকণা একে অপরকে নিজের দিকে আকর্ষণ করে এবং এ আকর্ষণ বলের মান বস্তুকণাদ্বয়ের ভরের গুণফলের সমানুপাতিক এবং এদের দূরত্বের বর্গের ব্যাস্তানুপাতিক এবং এ বল বস্তুকণাদ্বয়ের সংযোজক সরলরেখা বরাবর ক্রিয়া করে।
৪. মহাকর্ষ বল কোন্ কোন্ বিষয়ের ওপর নির্ভর করে?
উত্তর : দুটি বস্তুকণার মধ্যে ক্রিয়াশীল মহাকর্ষ বল নির্ভর করে -
1. বস্তুকণা দুটির ভরের ওপর এবং
2. বস্তুকণা দুটির মধ্যবর্ত সরলরেখা বরাবর দূরত্বের ওপর।
৫. মহাকর্ষীয় ধ্রুবককে সার্বজনীন ধ্রুবক বলা হয় কেন? অথবা, G কে সার্বজনীন মহাকর্ষ ধ্রুবক বলে কেন?
উত্তর : G এর মান বস্তুকণাদুটির মধ্যবর্তী মাধ্যমের উপর কিংবা বস্তু কণা দুটির ভৌত অবস্থার উপর নির্ভর করে না। পদার্থবিজ্ঞানে অনেক ধ্রুবক রয়েছে যাদের কোনটি মাধ্যমের প্রকৃতির উপর নির্ভর করে। বস্তুর অবস্থার উপর নির্ভর করে। বস্তুর অবস্থার উপর (যেমন - তাপমাত্রা, চাপ ইত্যাদি) নির্ভর করে, বস্তুর প্রকৃতির উপর নির্ভর করে। কিন্তু মহাকর্ষীয় ধ্রুবক এমন একটি ধ্রুবক যার মান সর্বত্র এবং সব অবস্থায় একই থাকে, কোনো পরিবর্তন হয় না। এই কারণেই এই ধ্রুবককে বিশ্বজনীন বা সর্বজনীন ধ্রুবক বলে।
৬. অভিকর্ষজ ত্বরণ বলতে কী বোঝ?
উত্তর : অভিকর্ষ বলের প্রভাবে কোনো বস্তু বিনা বাধায় নিচের দিকে নামতে থাকলে বস্তুটির বেগ নির্দিষ্ট হারে বাড়তে থাকে। বেগের এই বৃদ্ধির হারকে অভিকর্ষজ ত্বরণ বলা হয়।
S.I পদ্ধতিতে অভিকর্ষজ ত্বরণের মান 9.806m / s² বা 9.8m / s²
Cgs পদ্ধতিতে অভিকর্ষজ ত্বরণের মান 980.6 cm/s²
৭. পতনশীল বস্তু বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : ভূপৃষ্ঠ থেকে কোনো বস্তুকে নির্দিষ্ট উচ্চতা থেকে ছেড়ে দিলে বস্তুটি পৃথিবীর টানে নীচের দিকে পড়তে থাকে। পৃথিবীর এই টান বা অভিকর্ষ বলের প্রভাবে পৃথিবীর দিকে ওই বস্তু পড়তে থাকলে তাকে পতনশীল বস্তু বলে।
অভিকর্ষের প্রভাবে অবাধে পতনশীল, বস্তুর গতিবিধি পর্যালোচনা করে বিখ্যাত ইতালীয় পদার্থবিজ্ঞানী গ্যালিলিয়া গ্যালিলাই তিনটি বিখ্যাত সুত্রের অবতারণা করেন, যেগুলি সাধারণভাবে পতনশীল বস্তু র সূত্র বলে পরিচিত।
৮. স্থিরতড়িৎ সংক্রান্ত কুলম্বের সূত্রটি বিবৃত করো।
উত্তর: প্রদত্ত বস্তু দুটির তড়িদাধান q₁ ও q2। এদের মধ্যে ব্যবধান ।। কুলম্বের সূত্র অনুযায়ী, বস্তু দুটির মধ্যে ক্রিয়াশীল স্থির তড়িৎবলের মান, F = K×q1q2/r2
যেখানে K একটি ধ্রুবক, যার মান তড়িদাহিত বস্তু দুটির মধ্যবর্তী মাধ্যম এবং এককের ওপর নির্ভর করে।
৯. পরমাণুর নিউক্লিয়াস ধনাত্মক তড়িগ্রস্ত হয় কেন?
উত্তর : পরমাণুর নিউক্লিয়াসে নিস্তড়িৎ নিউট্রন কণা এবং ধনাত্মক তড়িগ্রস্ত প্রোটন কণা থাকে। নিউক্লিয়াসে প্রোটন কণার উপস্থিতির জন্যই নিউক্লিয়াস ধনাত্মক তড়িগ্রস্ত হয়।
১০. তড়িদাবেশ কাকে বলে?
উত্তর : কোনো তড়িদাহিত বস্তুর উপস্থিতির কারণে একটি নিস্তড়িৎ বস্তুর দুই প্রান্তে বিপরীত তড়িদাধানের সমাবেশ ঘটে। এই ঘটনাকেই তড়িদাবেশ বলা হয়।
১১. আকর্ষণ অপেক্ষা বিকর্ষণই তড়িদগ্রস্ততার নিশ্চিততর প্রমাণ - ব্যাখ্যা করো।
উত্তর : একটি তড়িদাহিত বস্তু বিপরীত আধানে আহিত অপর একটি বস্তুকে আকর্ষণ করে। আবার একটি তড়িদাহিত বস্তু একটি অনাহিত বস্তুকেও আকর্ষণ করে। সুতরাং, দুটি বস্তু পরস্পরকে আকর্ষণ করলে পরীক্ষাধীন বস্তুটি তড়িগ্রস্ত কি না সে সম্পর্কে নিশ্চিত সিদ্ধান্তে পৌঁছােনা যায় না। কিন্তু পরীক্ষাধীন বস্তু এবং একটি আহিত বস্তু পরস্পরকে বিকর্ষণ করলে আমরা নিশ্চিত সিদ্ধান্তে পৌঁছোতে পারি যে, পরীক্ষাধীন বস্তুটি তড়িগ্রস্ত কারণ বিকর্ষণ কেবলমাত্র দুটি সমজাতীয় আধানের মধ্যে হয়। সুতরাং, আকর্ষণ অপেক্ষা বিকর্ষণই তড়িগ্রস্ততার নিশ্চিততর প্রমাণ।
১২. স্থির তড়িৎ বল কাকে বলে?
উত্তর : বিপরীত ধর্মী তড়িৎ আধান পরস্পরকে আকর্ষণ করে এবং সমধর্মী তড়িৎ পরস্পরকে বিকর্ষণ করে। এই প্রকার আকর্ষণ বা বিকর্ষণ বল দুটি কে স্থির তড়িৎ বল বলে।
১৩. একটি নিস্তড়িত বস্তুর কাছে একটি তড়িৎ গ্রস্ত বস্তু আনলে আকর্ষণ করে কেন?
উত্তর: একটি নিস্তড়িত বস্তু কাছে একটি তড়িৎগ্রস্ত বস্তুর আনলে, নিস্তড়িত বস্তু যে অংশটি তড়িৎ গ্রস্ত বস্তুর কাছে থাকে সেখানে বিপরীত ধর্মী তড়িৎ সৃষ্টি হয়। এই ঘটনাকে তড়িৎ আবেশ বলা হয়। এই কারণে তড়িৎ গ্রস্ত বস্তু দ্বারা নিস্তড়িত বস্তুকে আকর্ষণ সম্ভব।
১৪. শীতকালে প্লাস্টিকের চিরুনি দিয়ে চুল আঁচড়ালে পটপট শব্দ হয় কেন?
উত্তর : শীতকালে প্লাস্টিকের চিরুনি দিয়ে চুল আচরালে চুলও প্লাস্টিকের চিরুনিতে বিপরীতধর্মী তড়িৎ সৃষ্টি হয়। তাই তড়িৎ সৃষ্টি হওয়ার পরে পুনরায় আরেকবার আঁচড়াতে গেলে বিপরীতধর্মী তড়িৎ পরস্পরকে আকর্ষণ করে ও তড়িৎ স্ফুলিঙ্গের সৃষ্টি হয়, এই কারণেই শব্দ উৎপন্ন হয়।
১৫. আমাদের চারপাশের বস্তুগুলি নিস্তড়িত হয় কেন? অথবা,
পরমাণু নিস্তড়িত হয় কেন?
উত্তর : পরমাণুর মধ্যে ধনাত্মক আধানযুক্ত প্রোটন কণা ও ঋণাত্মক আধানযুক্ত ইলেকট্রন কণা পরিমাণ সমান থাকে। সমান পরিমাপের বিপরীত আধান পরস্পরকে প্রশমিত করার পরমাণু নিস্তড়িত হয়। আর পরমাণু নিস্তড়িত হওয়ার জন্য পরমাণু দ্বারা গঠিত আমাদের চারপাশের বস্তুগুলিও নিস্তড়িত হয়।
১৬. স্থির অবস্থান থেকে বাধাহীনভাবে পতনশীল বস্তুর ক্ষেত্রে গ্যালিলিওর সূত্র তিনটি লেখ।
উত্তর : অবাধে পতনশীল বস্তুর ক্ষেত্রে সূত্র তিনটি হলো-
(i) প্রথম সূত্র: একই উচ্চতা অস্থির অবস্থা থেকে অবাধে পতনশীল বস্তু সমান দ্রুততায় নিচে নামে।
(ii) দ্বিতীয় সূত্র : সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পতনশীল বস্তুর বেগও বাড়ে।
(iii) তৃতীয় সূত্র: সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পতনশীল বস্তুর অতিক্রান্ত দূরত্বও বাড়ে।
.....….......