📚দশম শ্রেণির ভৌতবিজ্ঞান:অধ্যায় ভিত্তিক প্রশ্নোত্তর: অধ্যায়-১: পরিবেশের জন্য ভাবনা(প্রশ্নের মান-১,২)📚
✍️ প্রশ্নের মান-১:
1. জেট বিমান বায়ুমণ্ডলের কোন স্তরে চলাচল করে?
উত্তর: স্ট্যাটোস্ফিয়ার।
2. ট্রপোস্ফিয়ারের সর্বনিম্ন অঞ্চলে বায়ুর চাপ কত?
উত্তর: ৭৬ সেন্টিমিটার পারদস্তম্ভের চাপের সমান।
3. বায়ুমণ্ডলের কোন স্তরে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ সর্বাধিক?
উত্তর: ট্রপোস্ফিয়ার।
4. আবহাওয়া মণ্ডল বলা হয় কোন স্তরকে?
উত্তর: ট্রপোস্ফিয়ার।
5. বায়ুমণ্ডলের সর্বনিম্ন স্তরটির নাম লেখ।
উত্তর: ট্রপোস্ফিয়ার।
6. বায়ুমণ্ডলের শীতলতম স্তর কোনটি?
উত্তর: মেসোস্ফিয়ার।
7. জেট স্ট্রিম কি?
উত্তর: প্রবল গতিপূর্ণ বায়ুর স্রোেত যা র্টপোপজ অঞ্চলে প্রবাহিত হয়।
৪. বায়ুমণ্ডলের কোন স্তরে ঝড় ও বৃষ্টি হয়?
উত্তর: ট্রপোস্ফিয়ার।
9. বায়ুমণ্ডলের কোন স্তরে এসে মহাকাশের উল্কাপিণ্ড পুড়ে ছাই হয়ে যায়?
উত্তর: মেসোস্ফিয়ার।
10. বায়ুমন্ডলের কোন স্তরের অপর নাম শান্তমন্ডল?
উত্তর: স্ট্যাটোস্ফিয়ার।
11. বায়ুমণ্ডলের প্রধান তিনটি গ্যাসীয় উপাদানের নাম লেখ।
উত্তর: নাইট্রোজেন, অক্সিজেন, আর্গন।
12. বায়ুমণ্ডলের কোন স্তরকে ক্রমহাসমান উষ্ণতা স্তর বলা হয়?
উত্তর: ট্রপোস্ফিয়ার।
13. ভূপৃষ্ঠ থেকে কত উচ্চতা পর্যন্ত বায়ুর অস্তিত্বের প্রমাণ পাওয়া যায়?
উত্তর: ১০০০ কিমি।
14. বৈপরীত্য উত্তাপ কোথায় লক্ষ্য করা যায়?
উত্তর : সাধারণত পার্বত্য উপত্যকার শান্ত আবহাওয়ায় দেখা যায়।
15. বায়ুমন্ডলের মোট ওজন গ্যাসের কত শতাংশ স্ট্রাপোস্ফিয়ারে অবস্থান করে?
উত্তর: ৯০%।
16. বায়ুর চাপকে কোন এককের সাহায্য মাপা হয়?
উত্তর: মিলিবার।
17. গ্রীনহাউস প্রভাব সৃষ্টিতে কোন গ্যাসের অবদান সবচেয়ে বেশি?
উত্তর: কার্বন ডাই অক্সাইড।
18. নাইট্রাস অক্সাইডের একটি অনুর তাপ আটকে দেওয়ার ক্ষমতা একটি কার্বন ডাই অক্সাইড অনুর তুলনায় কত গুণ?
উত্তর: প্রায় ২০০ গুন।
19. ওজোন স্তর বিনাশে সাহায্যকারী দুটি পদার্থের নাম লেখ।
উত্তর : ক্লোরোফ্লুরো কার্বন, নাইট্রাস অক্সাইড।
20. বায়ুমণ্ডলের কোন স্তরে ওজন রয়েছে?
উত্তর: স্টাটোস্ফিয়ার।
21. CFC এর পুরো নাম কি?
উত্তর : ক্লোরোফ্লুরো কার্বন।
22. বায়ুমন্ডলের যে বিক্রিয়ার মাধ্যমে ওজন সৃষ্টি হয় তার নাম কি?
উত্তর: আলোক রাসায়নিক বিক্রিয়া।
23. পৃথিবীর কোথায় ওজোন স্তরের ক্ষয় সবথেকে বেশি?
উত্তর: আন্টার্কটিকা।
24. বায়ুমন্ডলে ওজোন গ্যাসের ঘনত্ব কোন এককের সাহায্যে মাপা হয়?
উত্তর: ডবসন।
25. ওজোনস্ফিয়ার কোন রশ্মিকে শোষণ করে?
উত্তর: অতি বেগুনি রশ্মি।
26. কোন স্তরে গ্যাসের অনুগুলি আয়নিত অবস্থায় থাকে?
উত্তর : আয়োনোস্ফিয়ার।
27. বায়ুমণ্ডলের কোন স্তর থেকে বেতার তরঙ্গ প্রতিফলিত হয়?
উত্তর : আয়োনোস্ফিয়ার।
28. কোন বিজ্ঞানী সর্বপ্রথম ওজন স্তরের ক্ষয় সম্পর্কে অবহিত করেন?
উত্তর : বিজ্ঞানী ডবসন।
29. বায়ুমণ্ডল কাকে বলে?
উত্তর : পৃথিবীকে ঘিরে বায়ুমণ্ডলের যে আস্তরণ রয়েছে তাকে বলে বায়ুমণ্ডল।
30. নিরক্ষীয় অঞ্চলের ভূপৃষ্ঠ থেকে কত উচ্চতা পর্যন্ত ট্রপোস্ফিয়ার বিস্তৃত থাকে?
উত্তর : প্রায় ১৫ থেকে ১৬ কিলোমিটার।
31. বায়ুমন্ডলে ওজনের পরিমাণ মাপার যন্ত্রের নাম কি?
উত্তর: ডবসন স্পেকট্রোমিটার।
32. ODP এর পুরো নাম কি? উত্তর: Ozone Depleting Potential
33. হ্যালন কি? উত্তর: ব্রমিন সমন্বিত এক ধরনের যৌগ।
34. গ্রীন হাউস গ্যাসগুলির প্রভাবে বায়ুমন্ডলের গড় উষ্ণতা কত থাকে?
উত্তর: প্রায় ১৫ ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড।
35. গ্রীন হাউস গ্যাসগুলি কোন রশ্মি শোষণ করে বায়ুমন্ডলের তাপ আবদ্ধ করে?
উত্তর : বিকিরিত দীর্ঘ তরঙ্গদৈর্ঘ্যের ইনফ্রারেড রশ্মি।
36. একটা সক্রিয় ক্লোরিন পরমাণু কতগুলি ওজন অনুর বিয়োজন ঘটাতে পারে?
উত্তর: লক্ষাধিক।
37. কার্যকরী সৌর বিকিরণ কি?
উত্তর : সূর্যরশ্মির যে ৬০ শতাংশ ভূপৃষ্ঠ ও বায়ুমণ্ডলকে উত্তপ্ত করে, তাকে কার্যকরী সৌর বিকিরণ বলে।
38. পৃথিবীর গড় উষ্ণতার বৃদ্ধির হার কত?
উত্তর : ০.০৫ ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড।
39. সূর্য রশ্মির তাপীয় ফল বা ইনসোলেশন কি?
উত্তর : আলো উত্তাপের মাধ্যমে সূর্য থেকে যে শক্তি বিচ্ছুরিত হয়, তাকে ইনসোলেশন বলে।
40. বিশ্ব উষ্ণায়নের সর্বোচ্চ মারাত্মক প্রভাব কোনটি?
উত্তর : সমুদ্রপৃষ্ঠের গড় উচ্চতা বৃদ্ধি এবং উপকূলবর্তী অঞ্চল প্লাবিত হওয়ার সম্ভাবনা।
41. ক্লোরোফ্লুরো কার্বন ও হ্যালোনের মধ্যে কোনটির ওজন ক্ষয়ের ক্ষমতা বেশি?
উত্তর : হ্যালোন যৌগের ব্রোমিন পরমাণুর ওজন ধ্বংসকারী ক্ষমতা ক্লোরোফ্লুরো কার্বনের ক্লোরিন পরমাণুর চেয়ে বেশি।
42. প্রকৃতিতে কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাস বৃদ্ধির জন্য প্রধান কারণ কি? উত্তর : জীবাশ্ম জ্বালানির দহন ও অনিয়ন্ত্রিত অরণ্য ধ্বংস।
43. মেথানোজেনিক ব্যাকটেরিয়া কাকে বলে?
উত্তর: মিথেন গ্যাস উৎপাদনকারী ব্যাকটেরিয়াকে মেথানোজেনিক ব্যাকটেরিয়া বলে।
44. একটি মেথানোজেনিক ব্যাকটেরিয়ার নাম লেখো।
উত্তর : মিথানকক্কাস
45. সুইট গ্যাস কাকে বলে?
উত্তর: কোল বেড মিথেনকে সুইট গ্যাস বলে। কারণ এর মধ্যে H2S গ্যাস থাকে না।
46. ফায়ার আইস কাকে বলা হয়?
উত্তর: মিথেন হাইড্রেটকে ফায়ার আইস বলা হয়।
47. মিথেন হাইড্রেট-এর রাসায়নিক সংকেত লেখো।
উত্তর: 4CH4, 23H2O
48. ক্ষুদ্ধমণ্ডল কোন স্তরকে বলা হয়?
উত্তর: ট্রপোস্ফিয়ারকে।
49. তাপন মূল্যের একক কী?
উত্তর: কিলো জুল / গ্রাম।
50. ম্যাগনেটোস্ফিয়ার-এর এরূপ নামকরণের কারণ কী?
উত্তর : চৌম্বক ক্ষেত্রের উপস্থিতির জন্য এই অঞ্চলকে ম্যাগনেটোস্ফিয়ার বলা হয়।
51. CFC-এর পুরো নাম কী?
উত্তর : ক্লোরোফ্লোরো কার্বন।
52. গ্রিনহাউস কথাটির অর্থ কী?
উত্তর : এর অর্থ হলো গাছপালা পরিচর্যার কাচের ঘর।
53. পৃথিবীর ছাতা বলা হয় বায়ুমণ্ডলের------- স্তরকে।
উত্তর : ওজোন।
54. তাপ সঞ্চালনের ফলে বায়ুর মধ্যে যে চক্রাকার স্রোতের সৃষ্টি হয় তাকে বলে----------।
উত্তর: পরিচলন স্রোত।
55. ------------হলো কারণ, বিশ্ব উষ্ণায়ন হলো তার ফল।
উত্তর: গ্রিনহাউস এফেক্ট।
56. গুজেন গ্যাসের ঘনত্ব ---------একক-এর কম হলে তাকেই ওজোন গহ্বর বলে।
উত্তর: 200
57. সুপারসনিক বিমান নির্গত যে গ্যাস ওজোন স্তরকে ভেঙে দেয় সেই গ্যাসটি হলো-----------।
উত্তর : নাইট্রিক অক্সাইড।
58. সোলার প্যানেলে সৌরকোশগুলি ------সমবায়ে যুক্ত থাকে।
উত্তর: শ্রেণি।
59. বায়োমাসে অন্তর্নিহিত শক্তি আসলে--------।
উত্তর: সৌরশক্তি।
60.---------- শক্তি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সূর্য থেকে পাওয়া যায় না।
উত্তর: ভূতাপীয়।
61. অতিবেগুনি রশ্মির প্রভাবে ত্বকের---------- হতে পারে।
উত্তর: ক্যানসার।
62.---------- গাছের তেল বায়োডিজেল উৎপাদনে ব্যবহৃত হয়।
উত্তর : মহুয়া/জ্যাট্রোফা।
63. -------------যৌগে মিথেন বহুসংখ্যক জল অণু দিয়ে গঠিত খাচায় আবদ্ধ থাকে।
উত্তর: মিথেন হাইড্রেট।
64. প্রাকৃতিক সৌরপর্দা হলো---------------।
উত্তর: ওজোন স্তর।
65. একটি অপ্রচলিত শক্তির উৎস হলো---------------।
উত্তর: বায়োগ্যাস।
66. CFC-এর পুরো নাম--------।
উত্তর: ক্লোরোফ্লোরো-কার্বন
67. বায়োগ্যাসের প্রধান উপাদান---------।
উত্তর: মিথেন।
68. শক্তির প্রধান উৎস-------।
উত্তর: সূর্য।
69. একটি জীবাশ্ম জ্বালানি হলো--------।
উত্তর : কয়লা।
70. মেরুজ্যোতি কোন বায়ুস্তরে দেখা যায়?
উত্তর : আয়োনোস্ফিয়ার।
71. নিরক্ষীয় অঞ্চলে ভূপৃষ্ঠ থেকে কত উচ্চতা পর্যন্ত ট্রপোস্ফিয়ার বিস্তৃত থাকে?
উত্তর : প্রায় পাঁচ থেকে ছয় কিলোমিটার পর্যন্ত।
✍️ প্রশ্নের মান-২:
1. স্থিতিশীল উন্নয়নের প্রধান শর্তগুলি কী কী?
উত্তর: ⅰ. দূষণ কমানো ii. জীবাশ্ম জ্বালানি তথা অনবীকরণযোগ্য শক্তির ব্যবহার কমানো iii. নবীকরণযোগ্য এবং অপ্রচলিত শক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি করা iv. বর্জ্য পদার্থের পুনঃব্যবহার করা v. সর্বোপরি সকল যন্ত্রের কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি করা।
2. সুইট গ্যাস কি?
উত্তর : কয়লা খনি থেকে প্রাপ্ত মিথেন এর মধ্যে সাধারণত বিষাক্ত হাইড্রোজেন সালফাইড গ্যাস থাকে না এবং হাইড্রোজেন সালফাইড বিহীন মিথেন গ্যাসকেই সুইট গ্যাস বলে।
3. বায়োমাস থেকে প্রাপ্ত শক্তি ব্যবহার-এর সুবিধা ও অসুবিধা লেখো।
সুবিধা: i. পুনঃনবীকরণযোগ্য। ii. সার রূপে ব্যবহারযোগ্য। iii. পরিবেশবান্ধব।
অসুবিধা: i . দুর্গদুর্গন্ধযুক্ত। ii. চাহিদা অনুযায়ী জোগান কম।
4. উপযুক্ত জ্বালানি নির্বাচনের ক্ষেত্রে শর্তগুলি লেখো।
উত্তর: i. তাপন মূল্য বেশি হতে হবে। ii. পরিবেশ বান্ধব হতে হবে। iii. জলনাঙ্ক কম হতে হবে। iv. সস্তা ও সুলভ হতে হবে।
5. জীবাশ্ম জ্বালানি কী? উদাহরণ দাও।
উত্তর : লক্ষ লক্ষ বছর ধরে পাললিক শিলার বিভিন্ন স্তরে আবদ্ধ হয়ে থাকা, উদ্ভিদ ও প্রাণীর দেহাবশেষ ভূগর্ভের চাপ এবং তাতে ও অন্যান্য রাসায়নিক বিক্রিয়ার ফলে, বিভিন্ন ভাবে পরিবর্তিত হয়ে যে জ্বালানি সৃষ্টি করে, তাকে জীবাশ্ম জ্বালানি বলে।
উদাহরণ: পেট্রোল, ডিজেল, কয়লা ইত্যাদি।
6. বিশ্ব উষ্ণায়নের সম্ভাব্য প্রভাবগুলি কী কী?
উত্তর:a. আবহাওয়ার পরিবর্তন হতে হতে ধীরে ধীরে চরমভাবাপন্ন হয়ে যাবে।
b. মেরু অঞ্চলের প্রচুর বরফ গলে যাবে, যার ফলে সমুদ্রতলের উচ্চতা বৃদ্ধি পাবে এবং উপকূলবর্তী অঞ্চল সমুদ্রগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে।
C. সমুদ্রের জলের উন্নতা বৃদ্ধি পাওয়ায়, প্রায়শই নিম্নচাপ সৃষ্টি হবে, পূর্বাভাষ ছাড়াই সুনামি হবে।
d. বিভিন্ন ধরনের জীবাণুঘটিত রোগের প্রকোপ দেখা দেবে।
7. গ্রিন হাউস প্রভাব তথা বিশ্ব উষ্ণায়ন কমানোর উপায়গুলি লেখো।
উত্তর :ⅰ. জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমাতে হবে যাতে কার্বন ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ কমে যায়।
ii. বনভূমি রক্ষা করতে হবে এবং বনসৃজনের ওপর জোর দিতে হবে।
iii. গ্রিন হাউস গ্যাসগুলির ক্ষতিকারক প্রভাব সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। iv. জনসংখ্যা কমাতে হবে।
9. স্থিতিশীল উন্নয়ন বলতে কী বোঝ?
উত্তর : স্থিতিশীল উন্নয়ন হল এমন একটি পরিকল্পনা, যে পরিকল্পনার মাধ্যমে সম্পদকে এমন ভাবে ব্যবহার করা হয় যা বর্তমান প্রজন্মের চাহিদা মেটানোর সঙ্গে সঙ্গে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের চাহিদা মেটাতে সক্ষম হবে। সুতরাং ভবিষ্যতকে সুরক্ষিত রেখে বর্তমানের উন্নতি করাই। হলো এই পরিকল্পনার মূল উদ্দেশ্য। এবং এই পরিকল্পনাই হল স্থিতিশীল উন্নয়ন।
10. গ্রিনহাউস এফেক্ট কী?
উত্তর: শীতপ্রধান অঞ্চলে প্রবল ঠান্ডার হাত থেকে
উদ্ভিদকে রক্ষা করার জন্য কাচ বা পলিথিনের ঘর তৈরি করে গাছপালা লাগানো হয়। এই কাচ বা পলিথিন ভেদ করে ক্ষুদ্র তরঙ্গদৈর্ঘ্যবিশিষ্ট আলোকরশ্মি প্রবেশ করে কিন্তু উদ্ভিদ কর্তৃক শোষণের পর বড়ো তরঙ্গদৈর্ঘ্য বিশিষ্ট ইনফ্রারেড রশ্মিতে পরিণত হয় যা ঐ কাচ বা পলিথিন ভেদ করে বাইরে বেরিয়ে আসতে পারে না। ফলে গ্রিনহাউসের ভেতরটা গরম থাকে।
11. বায়ুমণ্ডলে ওজোন স্তরের গুরুত্ব কী? অথবা,
ওজোন স্তরকে প্রাকৃতিক সৌরপর্দা বা পৃথিবীর ছাদ বলা হয় কেন?
উত্তর : সূর্য থেকে আগত অতিবেগুনি রশ্মি পৃথিবীর
জীবকুলের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকর। যদি সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি আমাদের শরীরে এসে পৌঁছায় তাহলে আমাদের তো ক্ষতি হবেই, তার সাথে সাথে আমাদের সমস্ত পরিবেশ এবং জীবকুলেরও ক্ষতি হবে। কিন্তু এই মারাত্মক ক্ষতিকর অতিবেগুনি রশ্মি ভূপৃষ্ঠে পৌঁছানোর আগেই স্ট্রাটোস্ফিয়ার এর অন্তর্গত ওজোন স্তর সূর্যরশ্মির ক্ষতিকর UV-B, UV-V অতিবেগুনি রশ্মিকে শোষণ করে এবং পৃথিবীকে অতিবেগুনি রশ্মির হাত থেকে রক্ষা করে তাই ওজোন স্তরকে প্রাকৃতিক সৌর পর্দা বা পৃথিবীর ছাদ বলা হয়।
12. বায়োফুয়েল কী?
উত্তর : কাঠ, গাছের শুকনো ডালপালা, কৃষিজ বর্জ্য, গোবর, মৃত প্রাণীর দেহাবশেষ ইত্যাদি কার্বনঘটিত পদার্থকে একত্রে বলা হয় বায়োমাস। এই বায়োমাসকে সরাসরি জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করে বা এই বায়োমাসকে পচিয়ে তা থেকে বায়োগ্যাস উৎপন্ন করে সেটাকে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হয়। বায়োমাসের এই রাসায়নিক শক্তিকে বলা হয় বায়োফুয়েল।
13. ওজোন মণ্ডল কী?
উত্তর : ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রায় 20-50 কিমি উচ্চতায় স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে পৃথিবীকে ঘিরে বায়ুমণ্ডলের ওজোন গ্যাস (03) সমৃদ্ধ যে স্তর থাকে তাকে ওজোন মণ্ডল বলে।
14. বায়ুমণ্ডলের কোন স্তরকে ক্ষুব্ধমণ্ডল বলা হয়? এবং কেন?
উত্তর: ট্রপোস্ফিয়ারকে ক্ষুব্ধমণ্ডল বলা হয়। কেননা ট্রপোস্ফিয়ারে ধূলিকণা, জলীয় বাষ্প, মেঘ ইত্যাদি থাকে। এখানে আবহাওয়ার প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হয় এবং ঝড় বৃষ্টিপাত ও বজ্রপাত ঘটে থাকে। তাই এই অঞ্চলকে ক্ষুব্ধমণ্ডল বলা হয়।
15. স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারকে শান্তমণ্ডল কেন বলা হয়?
অথবা,
স্ট্রাটোস্ফিয়ার অঞ্চলে জেট বিমান চলাচল করতে পারে কেন?
উত্তর : স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার অঞ্চলে খুব কম পরিমাণে বায়ু, ধুলিকণা ও জলকণা থাকায় ঝড়-বৃষ্টি প্রায় কিছুই হয় না। তাই জেট বিমানগুলি ঝড়-বৃষ্টি এড়িয়ে চলার জন্য এই স্তরে চলাচল করে। তাই একে শান্তমণ্ডল বলা হয়।
16. ওজোনস্তর সৃষ্টি হয় কীভাবে?
প্রথম ধাপ : বায়ুমণ্ডলের স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে দ্বিপরমাণুক অতিবেগুনি রশ্মির ফোটোন কণার দ্বারা বিয়োজিত হয়ে অক্সিজেন UV-রশ্মি N অক্সিজেন অণুপরমাণুতে পরিণত হয়।
দ্বিতীয় ধাপ : একইভাবে উৎপন্ন অক্সিজেন পরমাণু অনুঘটকের উপস্থিতিতে অক্সিজেন অণুর সঙ্গে যুক্ত হয়ে ওজোন গ্যাস ও তাপ উৎপন্ন করে।
17. ওজোনস্তর ধ্বংসের ক্ষতিকারক প্রভাবগুলি লেখো।
উত্তর : ওজোনস্তর প্রধানত UV-রশ্মি শোষণ করে, কিন্তু এর ঘনত্ব কমতে থাকায় UV-রশ্মি পৃথিবীতে এসে পৌঁছায়। এর ফলে
1. পৃথিবীর গড় উষ্ণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
2. স্কিন ক্যানসার, সান বার্ন, চোখের ছানি পড়া ইত্যাদি রোগের প্রকোপ বাড়ছে।
3. সালোকসংশ্লেষ ব্যবহৃত হওয়ায় উদ্ভিদের ক্ষতি হচ্ছে।
4. সামুদ্রিক অণুজীবের সংখ্যা কমে যাওয়ায় সামুদ্রিক প্রাণীর খাদ্যের অভাব পড়ছে, ফলত এদের বিনাশ ঘটছে।
18. মিথেন হাইড্রেটকে ফায়ার আইস বলে কেন? এটি কোথায় পাওয়া যায়?
উত্তর: মিথেন হাইড্রেট হলো একপ্রকার কেলাসাকার কঠিন পদার্থ। জলের অণর সমন্বয়ে গঠিত বরফ সদৃশ এই কেলাসের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে মিথেন গ্যাস আবহ অবস্থায় থাকে। এই গ্যাস দাহ্য প্রকৃতির হওয়ায় এটি আগুনের সংস্পর্শে এলেই জ্বলতে থাকে, তাই একে ফায়ার আইস বলে।
সমুদ্রের তলদেশে 100 মিটার গভীরে পাললিক শিলাস্তর-এর নীচে মিথেন হাইড্রেট পাওয়া যায়।
19. ক্লোরোফ্লোরো কার্বন কীভাবে ওজোন স্তরকে ধ্বংস করে? অথবা, ওজোন স্তর ধ্বংসের কারণগুলি লেখো।
উত্তর : রেফ্রিজারেটর, বাতানুকূল যন্ত্র, এরোসল স্প্রে-তে CFC ব্যবহৃত হয়। এই CFC গ্যাস স্ট্রাটোস্ফিয়ারে পৌঁছায় এবং অতিবেগুনি রশ্মির প্রভাবে ক্লোরিন পরমাণু গঠন করে। এই সক্রিয় ক্লোরিন পরমাণু লক্ষ লক্ষ ওজোন অণুকে অক্সিজেনে পরিণত করে।
20. গ্লোবাল ওয়ার্মিং বা বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রভাব কমানোর দুটি গুরুত্বপূর্ণ উপায় লেখো?
উত্তর: গ্লোবাল ওয়ার্মিং-এর প্রভাব থেকে পথিবীকে
রক্ষা করতে নিম্নলিখিত কাজ দু'টি করা আবশ্যক।
(ক) কার্বন ডাই-অক্সাইড উৎপাদনকারী জীবাশ্ম
জ্বালানির ব্যবহার কমাতে হবে, যথা- কাঠকয়লা,
ডিজেল-পেট্রোল ইত্যাদির ব্যবহার কমাতে হবে।
(খ) প্রচুর বনসৃজন ও বন সংরক্ষণ করতে হবে, এতে বায়ুমণ্ডলের অতিরিক্ত কাবন ডাই-অক্সাইড গ্যাস গাছপালা দ্বারা শোষিত হবে।
21. কয়লাখনির মিথেন গ্যাস [Coal Bed Methane বা CBM] কী?
উত্তর : ভূ-গর্ভের কয়লা খনিতে সঞ্চিত কয়লার পাশাপাশি অধিঃশোষিত অবস্থায় পর্যাপ্ত পরিমাণে মিথেন গ্যাস মজুত থাকে, একেই CBM বলে। এই CBM-কেই কয়লাখনি থেকে প্রাপ্ত এক বিশেষ প্রকার প্রাকৃতিক গ্যাস রূপে আখ্যায়িত করা হয়, যা শক্তির বিকল্প উৎস রূপে ব্যবহৃত হয়।
22. গ্যাসহোল কী? এর ব্যবহার কী?
উত্তর : পেট্রোল বা গ্যাসোলিনের সঙ্গে 10% ইথানল মিশিয়ে গ্যাসোহোল প্রস্তুত হয়। উন্নতমানের জ্বালানি হিসাবে বিভিন্ন যানবাহনে ব্যবহৃত হয়।
23. বায়ুমণ্ডলের স্তরগুলির মধ্যে কোনটিতে চাপ সব থেকে বেশি কারণসহ লেখো।
উত্তর : ট্রপোস্ফিয়ারে চাপ সর্বাধিক। কারণ বায়ুমণ্ডলের উপাদানগুলির ঘনত্ব ট্রপোস্ফিয়ারে সর্বাধিক।
24. জ্বালানি কী?
উত্তর : যে সকল পদার্থের দহনের ফলে প্রচুর তাপশক্তির মুক্তি ঘটে, তাদের জ্বালানি বলে।
25. জ্বালানির তাপনমূল্য বলতে কী বোঝ?
উত্তর : কোনো জ্বালানির একক ভরের দহনের ফলে যে পরিমাণ তাপশক্তি উৎপন্ন হয়, তাকেই তাপনমূল্য বলে।
26. অপ্রচলিত শক্তি বা নবীকরণযোগ্য শক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি প্রয়োজন কেন?
উত্তর: প্রচলিত শক্তি তথা জীবাশ্ম জ্বালানির ভাণ্ডার সীমিত এবং বর্তমান বিশ্বে এর যথেচ্ছ ব্যবহারের ফলে এর পরিমাণ ক্রমশ কমে যাচ্ছে।
নবীকরণযোগ্য শক্তি যথা: সৌরশক্তি, বায়ুশক্তি ইত্যাদি পরিবেশ দূষণ ঘটায় না, অর্থাৎ এই শক্তি পরিবেশবান্ধব।
27. নাইট্রোজেনের অক্সাইডসমূহ কীভাবে ওজোন স্তরের ক্ষতি করে?
উত্তর : নাইট্রোজেনের অক্সাইড যথা – নাইট্রিক অক্সাইড ওজোন স্তরের অণুর সঙ্গে বিক্রিয়া করে নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড এবং অক্সিজেন উৎপন্ন করে। উৎপন্ন এই নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড পুনরায় অক্সিজেন পরমাণুর সঙ্গে বিক্রিয়া করে নাইট্রিক অক্সাইড ও ওজোনে পরিণত হয়। এভাবে উৎপন্ন নাইট্রিক অক্সাইড পুনরায় আরেকটি ওজোনকে ভেঙে দেয়। এই পদ্ধতি ক্রমাগত চলে এবং ওজন স্তরের বিনাশ ঘটে।
28. মেরুপ্রভা কাকে বলে এবং কোন স্তরে এটি দেখা যায়?
উত্তর : আয়নোস্ফিয়ার স্তরে বায়ু থাকে না। এখানে তড়িদাহত কণা থাকে। এই তড়িদাহত কণার চৌম্বক বিক্ষেপের কারণে সুমের ও কুমেরু অঞ্চলে এক ধরনের আলোর বিচ্ছুরণ দেখা যায়। এই ঘটনাকে মেরুজ্যোতি বা মেরুপ্রভা বলে।
☆ বায়ুমণ্ডলের আয়নোস্ফিয়ারে মেরুপ্রভা দেখা যায়।
29. সৌরশক্তি ও বায়ুশক্তির একটি করে অসুবিধা লেখো।
সৌরশক্তির অসুবিধা : রৌদ্রোজ্জ্বল দিন না হলে অর্থাৎ মেঘলা দিনে বা রাতের বেলা সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন অসম্ভব।
বায়ুশক্তির অসুবিধা: বায়ুশক্তির একটি অসুবিধা হলো কেবলমাত্র উপকুল ও মরু অঞ্চলে যেখানে বাতাসের বেগ বেশি সেখানে বায়ুকল স্থাপন করে বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব।
30. জীবাশ্ম জ্বালানি সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা কী?
উত্তর : জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও সভ্যতার উন্নতির ফলে কয়লা, প্রাকৃতিক গ্যাস ও পেট্রোলিয়াম জাতীয় বিভিন্ন অনবীকরণযোগ্য চিরাচরিত শক্তির ব্যবহার বেড়ে গেছে। তাই এদের পরিমাণ ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে। বিজ্ঞানীদের ধারণা, একবিংশ শতাব্দীর শেষের দিকে এই শক্তির উৎসগুলি একদম শেষ হয়ে যাবে। এর ফলে শক্তি সংকটের সৃষ্টি হবে। তাই এই জ্বালানির প্রয়োজনীয়তার দিকে লক্ষ রেখে এদের সংরক্ষণের প্রয়োজন।
31. অতিবেগুনি রশ্মির দুটি ক্ষতিকারক প্রভাব লেখো।
উত্তর: ১) মানুষের চামড়ায় ক্যানসার, সানবার্ন ও বিভিন্ন চর্মরোগ সৃষ্টি করে।
২) প্রজনন ক্ষমতা ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস পায়।
32. ফটোভোল্টিক কোশ কী?
উত্তর : এই কোশের সাহায্যে সৌরশক্তিকে তড়িৎশক্তিতে রূপান্তরিত করা হয়। এই কোশ অর্ধপরিবাহী সিলিকন (Si) দিয়ে তৈরি করা হয়। এতে সিলিকন-বোরনের একটি স্তর এবং সিলিকন-আর্সেনিকের একটি স্তরকে পাশাপাশি রেখে তার দিয়ে যুক্ত করা হয়। এর ওপর সূর্যালোক পড়লে অর্ধ-পরিবাহী সিলিকনের ইলেকট্রনগুলি উত্তেজিত হয়ে গতিশীল হয়। এই কোশকে ফটোভোল্টিক কোশ বা সৌরকোশ বলে।
33. পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি বা নবীকরণযোগ্য শক্তি বা অচিরাচরিত শক্তি বলতে কী বোঝো?
উত্তর: শক্তির উৎস গুলির ব্যবহার সাম্প্রতিককালে শুরু হয়েছে এবং যে শক্তিগুলি দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহার করার ফলেও সেগুলাে কখনোই শেষ হয়ে যাবে না বা শেষ হওয়ার ভয় থাকে না, সেই শক্তিগুলিকে পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি বা নবীকরণযোগ্য শক্তি বা
অচিরাচরিত শক্তি বলে। উদাহরণ : সৌরশক্তি, বায়ুশক্তি, জোয়ার ভাঁটা শক্তি।
34. জৈব গ্যাস বা বায়োেগ্যাস কাকে বলে?
উত্তর : মানুষ ও অন্যান্য প্রাণীদের মলমূত্র, রান্নাঘরের শাক সবজির খোসা এবং অন্যান্য পচনশীল বস্তু একটি বড় আবদ্ধ প্রকোষ্ঠে দেখে মিথানোজেনিক ব্যাকটেরিয়া সাহায্যে জৈব রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটিয়ে যে দাহ্য গ্যাস উৎপন্ন করা হয়, তাকে জৈব গ্যাস বায়োগ্যাস বলে।
.….….….....