📚 অষ্টম শ্রেণির ভূগোল:অধ্যায় ভিত্তিক প্রশ্নোত্তর:অধ্যায়-১: পৃথিবীর অন্দরমহল(প্রশ্নের মান-১,২,৩)📚
✍️প্রশ্নের মান-১:
১.ভূপৃষ্ঠ থেকে ভূকেন্দ্রের দূরত্ব কত কিমি?
উঃ 6370 কিমি।
২.প্রতি কত মিটার গভীরতায় প্রায় 1 °সে করে পৃথিবীর তাপমাত্রা বাড়ে?
উঃ 33 মিটার।
৩.পৃথিবীর ব্যাস কত কিমি?
উঃ 12,740 কিমি।
৪.পৃথিবীর গভীরতম খনি কোনটি?
উঃ রবিনসন ডিপ
৫.রবিনসন ডিপ কোথায় অবস্থিত?
উঃ দক্ষিণ আফ্রিকায়।
৬.ভূগর্ভের গলিত উত্তপ্ত ম্যাগমা ভূপৃষ্ঠের বাইরে বেরিয়ে এলে তাকে কী বলে?
উঃ লাভা।
৭.সৃষ্টির সময় পৃথিবী কেমন ছিল?
উঃ প্রচণ্ড উত্তপ্ত গ্যাসীয় পিণ্ড ছিল।
৮. পশ্চিমবঙ্গের কোথায় উষ্ণ প্রস্রবণ আছে?
উঃ বীরভূম জেলার বক্রেশ্বরে।
৯.ভূতাপ শক্তির সাহায্যে আইসল্যান্ড কত শতাংশ বিদ্যুৎ চাহিদা মেটায়?
উঃ 30 শতাংশ।
১০.পৃথিবীর বহু দেশে ভূতাপ শক্তি থেকে কোন শক্তি উৎপাদন করা হয়?
উঃ বিদ্যুৎ শক্তি।
১১.কৃত্রিম উপগ্রহের বিচারে সামগ্রিকভাবে পৃথিবীর গড় ঘনত্ব কত?
উঃ 5.5 গ্রাম/ঘন সেমি।
১২.পৃথিবীর একেবারে কেন্দ্রে পদার্থের ঘনত্ব কত?
উঃ 13-14 গ্রাম/ঘনসেমি।
১৩.ঘনত্ব কাকে বলে?
উঃ একক আয়তনের পদার্থের ভরকে তার ঘনত্ব বলে।
ভূপৃষ্ঠ থেকে কেন্দ্রের দিকে চাপ কিরূপ পরিবর্তিত হয়?
উঃ ক্রমশ বৃদ্ধি পায়।
১৪.ভূগর্ভে কী হারে উষ্ণতা বৃদ্ধি পায়?
উঃ প্রতি 33 মিটার গভীরতা বৃদ্ধিতে প্রায় 1°C হারে
১৫.পৃথিবীর গভীরতম খনি কোন্টি?
উঃ রবিনসন ডিপ।
১৬.ভূগর্ভের পদার্থ প্রচণ্ড চাপে ও তাপে গলিত অবস্থায় থাকলে তাকে কী বলে?
উঃ ম্যাগমা।
১৭.উষ্ণ প্রস্রবণ কী?
উঃ পৃথিবীপৃষ্ঠের ফাটলের মধ্য দিয়ে বাইরে বেরিয়ে আসা জলকে উষ্ণ প্রস্রবণ বলে।
১৮.পশ্চিমবঙ্গের কোথায় উষ্ণ প্রস্রবণ আছে?
উঃ বক্রেশ্বরে।
১৯.পৃথিবীর ভিতরের তাপশক্তিকে কী বলে?
উঃ ভূতাপ শক্তি।
২০.কোন্ দেশ পৃথিবীর মধ্যে সবথেকে বেশি ভূতাপ শক্তি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে?
উঃ আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র।
২১.ভারতের রাজ্যভিত্তিক দুটি উষ্ণ প্রস্রবণের উদাহরণ দাও।
উঃ হিমাচল প্রদেশের মনিকরণ এবং উত্তরাখণ্ডের তপোবন।
২২.ভূপৃষ্ঠ কাকে বলে?
উঃ পৃথিবীর কঠিন বহিরাবরণকে ভূপৃষ্ঠ বলে।
২৩.পৃথিবীর গভীরতম কৃত্রিম গর্ত কোনটি?
উঃ রাশিয়ার কোলা উপদ্বীপের 12 কিমি গভীর গর্ত।
২৪.পৃথিবীর গভীরতম খনি রবিনসন ডিপের গভীরতা কত?
উঃ 3-4 কিমি।
২৫.পৃথিবীপৃষ্ঠের গড় তাপমাত্রা 15° সে হলে রবিনসন ডিপের তাপমাত্রা আনুমানিক কত হবে?
উঃ 106° সে-136° সে।
২৬.ভূত্বক ও গুরুমণ্ডলের মাঝে কোন বিযুক্তিরেখা আছে?
উঃ মোহোরোভিসিক।
২৭.গুরুমণ্ডল ও কেন্দ্রমণ্ডলের মাঝে কোন বিযুক্তিরেখা রয়েছে?
উঃ গুটেনবার্গ বিযুক্তিরেখা।
২৮.শিলামণ্ডলের নীচে গুরুমণ্ডলের ওপরের অংশে বিশেষ স্তরটির নাম কি?
উঃ অ্যাস্থেনোস্ফিয়ার।
২৯.ভূত্বকের তলদেশে অশ্মমণ্ডল বা শিলামণ্ডলের বিস্তার কত?
উঃ 100 কিমি।
৩০.অ্যাস্থেনোস্ফিয়ারে শিলা কি অবস্থায় রয়েছে?
উঃ সান্দ্র অবস্থায়।
৩১.কেন্দ্রমণ্ডল কোন কোন উপাদান দিয়ে তৈরি?
উঃ নিকেল ও লোহা দিয়ে।
৩২.বহিঃকেন্দ্রমণ্ডল কি অবস্থায় রয়েছে?
উঃ সান্দ্র/অর্ধকঠিন অবস্থায়।
৩৩.গুটেনবার্গ বিযুক্তি ও লেহম্যান বিযুক্তির মধ্যবর্তী স্তরটির নাম কি?
উঃ বহিঃকেন্দ্রমণ্ডল।
৩৪.ভূ-অভ্যন্তরের কোন অংশটিকে ক্ষুদ্ধমণ্ডল বলে?
উঃ ঊর্ধ্ব গুরুমণ্ডল।
৩৫.গুটেনবার্গ বিযুক্তিরেখা কত গভীরতায় অবস্থিত?
উঃ 2900 কিমি।
৩৬.পৃথিবীর একেবারে কেন্দ্রে ঘনত্ব কত?
উঃপ্রায় 13.1 গ্রাম/ঘনসেমি।
৩৭.ভূ-অভ্যন্তরের গলিত, সান্দ্র পদার্থকে কি বলে?
উঃ ম্যাগমা।
৩৮.S তরঙ্গ কোন মাধ্যমের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে না?
উঃ তরল বা অর্ধতরল।
৩৯.কেবল তরল বা গ্যাসীয় মাধ্যম দিয়ে যেতে পারে কোন তরঙ্গ?
উঃ P তরঙ্গ।
৪০.জুল ভার্নের লেখা পৃথিবীবিখ্যাত কল্পবিজ্ঞানের গল্পটির নাম কি?
উঃ Journey to the Centre of the Earth
৪১.ভূত্বকের গড় গভীরতা কত কিমি?
উঃ প্রায় 30 কিমি।
৪২.সিমা স্তরটি কোন শিলা দিয়ে গঠিত?
উঃ ব্যাসল্ট শিলা।
৪৩.গুরুমণ্ডল স্তরটি ভূপৃষ্ঠ থেকে কত কিমি পর্যন্ত বিস্তৃত?
উঃ 2900 কিমি।
৪৪.গুরুমণ্ডলের অপর নাম কি?
উঃ ম্যান্টল।
৪৫.গুরুমণ্ডলের বাইরের অংশকে কি বলে?
উঃ ক্রোফেসিমা।
৪৬.মোহোরোভিসিক বিযুক্তিরেখা ও গুটেনবার্গ বিযুক্তিরেখার মাঝের স্তরটির নাম কি?
উঃ গুরুমণ্ডল।
৪৭.অ্যাস্থেনোস্ফিয়ারের অপর নাম কী?
উঃ বিক্ষুদ্ধমণ্ডল।
৪৮.কী থেকে ভূ-অভ্যন্তর সম্পর্কে সঠিক ধারণা পাওয়া যায়?
উঃ ভূকম্পন তরঙ্গ থেকে।
৪৯.ভূত্বকের ওপরের স্তরটির নাম কী?
উঃ সিয়াল (SIAL)।
৫০.সিয়াল ও সিমা স্তরের মাঝে কোন্ বিযুক্তিরেখা অবস্থিত?
উঃ কনরাড বিযুক্তিরেখা।
৫১.সিয়াল স্তরটি কোন্ জাতীয় আগ্নেয় শিলা দ্বারা গঠিত?
উঃ গ্রানাইট।
৫২.মহাদেশীয় ভূত্বক কোন্ শিলায় গঠিত?
উঃ গ্রানাইট শিলায়।
৫৩.কোন্ শিলায় প্রধানত মহাদেশীয় ভূত্বক তৈরি হয়?
উঃ গ্রানাইট শিলায়।
৫৪.গুরুমণ্ডল কোন্ কোন্ উপাদান দিয়ে তৈরি?
উঃ লোহা, নিকেল, ম্যাগনেশিয়াম এবং সিলিকন।
৫৫.গুরুমণ্ডলের ক-টি অংশ ও কী কী?
উঃ দুটি অংশ-[i] নিফেসিমা ও [ii] ক্রোফেসিমা।
৫৬.আপেলের কোন্ অংশ গুরুমণ্ডলের সাথে তুলনীয়?
উঃ আপেলের মাঝখানের সাদা অংশ বা শাঁসের অংশ।
৫৭.রেপিত্তি বিযুক্তিরেখা কোন্ দুটি স্তরকে পৃথক করেছে?
উঃ ক্রোফেসিমা ও নিফেসিমা।
৫৮.ভূ-অভ্যন্তরের কোন্ স্তরে ভূকম্পন তরঙ্গের গতিবেগ সর্বাপেক্ষা কম হয়?
উঃ অ্যাস্থেনোস্ফিয়ার স্তরে।
৫৯.অ্যাস্থেনোস্ফিয়ারের একটি গুরুত্ব লেখো।
উঃ পরিচলন তাপস্রোতের সৃষ্টি।
৬০.শিলামণ্ডলের গভীরতা কত?
উঃ 100 কিমি।
৬১.আপেলের কোন্ অংশটি কেন্দ্রমণ্ডলের মতো?
উঃ আপেলের একেবারে মাঝখানের অংশটি।
৬২.ভূগর্ভের 5100 কিমি থেকে 6370 কিমি পর্যন্ত বিস্তৃত স্তরটির নাম কী?
উঃ অন্তঃকেন্দ্রমণ্ডল।
৬৩.ভূ-অভ্যন্তরে যে স্তরের চাপ, তাপ ও ঘনত্ব সবচেয়ে বেশি তার নাম কী?
উঃ অন্তঃকেন্দ্রমণ্ডল।
৬৪.পৃথিবীর চৌম্বকত্ব সৃষ্টিকারী ভূ-অভ্যন্তরের স্তর কোন্টি?
উঃ বহিঃকেন্দ্রমণ্ডল।
৬৫.কোন্ স্তর ভূ-অভ্যন্তরের বেশিরভাগ জায়গা জুড়ে আছে?
উঃ গুরুমণ্ডল (প্রায় 84%)।
৬৬.পৃথিবীর অভ্যন্তরে চাপ ও তাপ দুটিই বেশি। তাহলে সেখানে পদার্থ কী অবস্থায় আছে?
উঃ সান্দ্র অবস্থায়।
৬৭.ভূপৃষ্ঠ থেকে পৃথিবীর কেন্দ্র পর্যন্ত অঞ্চলকে ক-টি স্তরে ভাগ করা হয়েছে?
উঃ তিনটি।
৬৮.'L' তরঙ্গের অপর নাম কী?
উঃ পৃষ্ঠ তরঙ্গ বা পার্শ্ব তরঙ্গ
✍️ প্রশ্নের মান-২/৩:
১. ম্যাগমা কাকে বলে? ইহার বৈশিষ্ট্য লিখ।
সংজ্ঞা: ভূগর্ভের মধ্যে প্রচণ্ড চাপ ও তাপে ভূ-অভ্যন্তরের সকল পদার্থসমূহ গলিত বা অর্ধগলিত অবস্থায় আছে। এই গলিত বা অর্ধগলিত পদার্থসমূহকে ম্যাগমা বলে।
বৈশিষ্ট্য: ম্যাগমার মধ্যে বিভিন্ন গ্যাস বাষ্প মিশ্রিত হয়ে গলিত অবস্থায় থাকে।
২. লাভা কাকে বলে? ইহার বৈশিষ্ট্য লেখ।
⇒ সংজ্ঞা: ভূগর্ভের গলিত উত্তপ্ত অর্ধতরল ম্যাগমা যখন ভূপৃষ্ঠের দুর্বল অংশ বা ফাটল দিয়ে বাইরে বেরিয়ে আসে, তখন তাকে লাভা (lava) বলে।
⇒ বৈশিষ্ট্য: লাভা সঞ্চিত হয়ে ভূপৃষ্ঠে পর্বত, মালভূমি প্রভৃতি ভূমিরূপ গঠিত হয়।
৩. আগ্নেয়গিরির মুখ বা জ্বালামুখ বলতে কী বোঝ?
→ সংজ্ঞা: আগ্নেয়গিরির সর্বোচ্চ অংশ যেখান থেকে লাভা বের হয় সেটিকে আগ্নেয়গিরির মুখ বা জ্বালামুখ বলা হয়।
⇒ বৈশিষ্ট্য : সাধারণত সব আগ্নেয়গিরিতে একটি প্রধান জ্বালামুখ এবং একাধিক গৌণ জ্বালামুখ থাকে।
৪. সিয়াল সম্পর্কে টীকা লেখ।
সংজ্ঞা: সিয়াল (সিয়াল) বা মহাদেশীয় ভূত্বক হলো ভূত্বকের ওপরের অংশ, যা প্রধানত সিলিকন এবং অ্যালুমিনিয়াম দ্বারা গঠিত। ভূত্বকের এই অংশটিই সিয়াল (SIAL) নামে পরিচিত।
এই ভূত্বককে সাধারণভাবে মহাদেশগুলির নিচের অংশ বলা হয়, এবং অন্য নাম হল "মহাদেশীয় ভূত্বক"।
উপাদান: এই স্তরটি হালকা এবং প্রধানত গ্রানাইট-জাতীয় শিলা দ্বারা গঠিত।
> গভীরতা :সিয়াল ভূত্বক কোনো কোনো এলাকায় প্রায় 60 কিমি পর্যন্ত বিস্তৃত হয়।
ঘনত্ব : আম্লিক শিলা দ্বারা গঠিত হওয়ায় এই স্তরের ঘনত্ব 2.6-2.9 গ্রাম/ঘনসেমি।
৫. সিমা সম্পর্কে টীকা লেখ।
→ সংজ্ঞা: সিমা (SIMA) বা মহাসাগরীয় ভূত্বক হলো ভূত্বকের নীচের অপেক্ষাকৃত ভারী অংশ, যা প্রধানত সিলিকন এবং ম্যাগনেশিয়াম দ্বারা গঠিত। সিমা ভূত্বক সামুদ্রের তলদেশের সামান্য পলিস্তর বাদ দিয়ে বাকি এলাকা দ্বারা গঠিত হয়।
→ গভীরতা : এই স্তরটি মাত্র ৫ কিমি গভীর।
→ ঘনত্ব : এই স্তরের ঘনত্ব ২.৯ গ্রাম/ঘনসেমি।
→ উপাদান: এই স্তর ভারী এবং প্রধানত ব্যাসল্ট জাতীয় আগ্নেয় শিলা দ্বারা গঠিত।
৬. অ্যাস্থেনোস্ফিয়ার সম্পর্কে টীকা লেখো।
→ সংজ্ঞা: Asthenosphere একটি গ্রিক শব্দ, যার অর্থ দুর্বল স্তর। শিলামণ্ডলের নীচে ও গুরুমণ্ডলের ওপরের সান্দ্র ও নমনীয় স্তরটি হল অ্যাস্থেনোস্ফিয়ার। মনে করা হয় 100 কিমি থেকে 250 কিমি গভীরতা পর্যন্ত অঞ্চলটি বিস্তৃত।
- বৈশিষ্ট্য: এই স্তরের বৈশিষ্ট্য গুলি হল -
১. অত্যধিক তাপ ও চাপে অ্যাস্থেনােস্ফিয়ারের শিলা অর্ধতরল বা সান্দ্র অবস্থায় রয়েছে।
২. এই স্তরের পদার্থ গলিত ও নরম প্রকৃতির।
৩. এই স্তরেই পরিচলন স্রোতের সৃষ্টি হয়। এই স্রোতের ফলে ভূগর্ভের তাপ ওপরে উঠে আসে।
৪. ভূকম্প তরঙ্গ এই স্তরের মধ্য দিয়ে ধীর গতিতে প্রবাহিত হয়।
...............….