📚অষ্টম শ্রেণির ইতিহাস:অধ্যায়ভিত্তিক প্রশ্নোত্তর:অধ্যায়-২: আঞ্চলিক শক্তির উত্থান(প্রশ্নের মান-১,২,৩,৫)📚
✍️ প্রশ্নের মান-১/২:
১. ১৭৫৬-৫৭ খ্রিস্টাব্দে কার আক্রমণে দিল্লি শহর ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল?
উঃ ১৭৫৬-৫৭ খ্রিস্টাব্দে আহমদ শাহ আবদালির নেতৃত্বে আফগান আক্রমণে দিল্লি শহর ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল।
২. আলিবর্দি খান কার সেনাপতি ছিলেন?
উঃ নবাব মুরশিদকুলি খানের সেনাপতি ছিলেন আলিবর্দি খান।
৩. কবে থেকে মুঘল শাসনে সমস্যা দেখা দেয়?
উঃ সম্রাট জাহাঙ্গির ও শাহজাহানের শাসনকাল থেকেই মুঘল শাসন কাঠামোয় ছোেটা বড়ো সমস্যা দেখা দেয়।
৪. মুরশিদকুলির পর সুবা বাংলার কার হাতে কীভাবে যায়?
উঃ ১৭২৭ খ্রিস্টাব্দে মুরশিদকুলির মৃত্যুর পর তাঁর উত্তরাধিকারীদের মধ্যে ক্ষমতা নিয়ে গোলযোেগ বাঁধে এবং সেই পরিস্থিতিতে জগৎ শেঠ ও কয়েকজন ক্ষমতাবান জমিদারের মদতে তাঁর সেনাপতি আলিবর্দি খান সুবা বাংলার ক্ষমতা দখল করেন।
৫. 'বণিক রাজা' কাদের বলা হয়?
উঃ আঠারো শতকে সুবা বাংলায় উমিচাঁদ, খোজা ওয়াজিদ, জগৎ শেঠ প্রমুখ বণিকগণকে 'বণিক রাজা' বলা হয়।
৬. জগৎ শেঠদের মূল ব্যাবসাটি কী ছিল?
উঃ জগৎ শেঠদের মূল ব্যাবসাটা ছিল মুদ্রা তৈরি ও মহাজনি ব্যাবসা।
৭. খোজা ওয়াজিদ কে ছিলেন?
উঃ খোজা ওয়াজিদ ছিলেন আঠারো শতকের মধ্যভাগে সুবা বাংলার একজন আর্মেনীয় ব্যবসায়ী।
৮. ঔরঙ্গজেবের মৃত্যু ও পলাশির যুদ্ধের মাধ্যমে ভারতীয় উপমহাদেশে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির উত্থান-এই দুইয়ের মধ্যে ব্যবধান ছিল কত বছর?
উঃ ঔরঙ্গজেবের মৃত্যু ও পলাশির যুদ্ধের মাধ্যমে ভারতীয় উপহাদেশে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির উত্থান -এই দুইয়ের মধ্যে ব্যবধান ছিল ৫০ বছর।
৯. ব্রিটিশ কোম্পানির বণিকরা কীভাবে ফারুকশিয়রের ফরমানে দেওয়া দত্তকের অপব্যবহার করে?
উঃ ফারুকশিয়রের ফরমান অনুযায়ী শুধু ব্রিটিশ কোম্পানি পণ্যের ওপর শুল্ক ছাড় পাবে, কিন্তু কোম্পানির বণিকরা ব্যক্তিগত ব্যাবসাতেও দস্তকের অপব্যবহার করে নবাবের শুল্ক ফাঁকি দিত।
১০. কেন বাংলায় দেওয়ান মুরশিদকুলির ফারুকশিয়রের ফরমান নাকচ করার অধিকার ছিল না?
উঃ মুরশিদকুলি সুবা বাংলায় প্রায় স্বাধীনভাবে শাসন করলেও তিনি মুঘল সম্রাটের অধীনে ছিলেন এবং তাই কোম্পানিকে দেওয়া ফারুকশিয়রের ফরমান মুরশিদকুলি নাকচ করতে পারতেন না।
১১. ফারুকশিয়র কাদের অনুকূলে ফরমান দিয়েছিলেন?
উঃ ফারুকশিয়র ব্রিটিশ বণিক কোম্পানির অনুকূলে ফরমান দিয়েছিলেন।
১২. আনুষ্ঠানিকভাবে হায়দরাবাদ যে মুঘল কর্তৃত্ব স্বীকার করেছিলেন তার একটি প্রমাণ দাও।
উঃ আনুষ্ঠানিকভাবে হায়দরাবাদ যে মুঘল কর্তৃত্ব স্বীকার করেছিল, তার একটি প্রমাণ হল সেখানে মুঘল সম্রাটের নামে মুদ্রার প্রচলন।
১৩. চিন কুলিচ খান কে ছিলেন?
উঃ মির কামার উদ্দিন সিদ্দিকি একজন শক্তিশালী অভিজাত ছিলেন, এবং তার উপর সম্রাট ঔরঙ্গজেব তাকে "চিন কুলিচ খান" উপাধি দিয়েছেন।
১৪. ১৭২৪ খ্রিস্টাব্দে কে হায়দরাবাদ রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন?
উঃ চিন কুলিচ খান হায়দরাবাদ রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা হয়েছেন ১৭২৪ খ্রিস্টাব্দে, মুঘল সম্রাট ফারুকশিয়র এবং সম্রাট মহম্মদ শাহ আলম দ্বারা নিজামউল-মুলক এবং সম্রাট আসফ জা উপাধি নেয়।
১৫. আলিবর্দি খান কবে মারা যান?
উঃ ১৭৫৬ খ্রিস্টাব্দে আলিবর্দি খান মারা যান।
.১৬. বাংলায় বর্গি আক্রমণকালে বাংলার নবাব কে ছিলেন?
উঃ বাংলায় বর্গি আক্রমণকালে বাংলার নবাব ছিলেন আলিবর্দি খান।
১৭. 'মহারাষ্ট্র পুরাণ' গ্রন্থটি কে রচনা করেছিলেন?
উঃ'মহারাষ্ট্র পুরাণ' গ্রন্থটি রচনা করেছিলেন কবি গঙ্গারাম।
১৮. ১৭৪৪ খ্রিস্টাব্দে মারাঠা আক্রমণের সময় আলিবর্দি খান ব্রিটিশ কোম্পানির কাছ থেকে কত লক্ষ টাকা দাবি করেছিলেন?
উঃ ১৭৪৪ খ্রিস্টাব্দে মারাঠা আক্রমণের সময় আলিবর্দি খান ব্রিটিশ কোম্পানির কাছ থেকে ৩০ লক্ষ টাকা দাবি করেছিলেন।
.১৯. মিরকাশিম কে?
উঃ মিরকাশিম ছিলেন সুবা বাংলার শেষ স্বাধীনচেতা নবাব তথা মিরজাফর-এর জামাই।
২০. ঢাকা নগরটি কী নামে পরিচিত ছিল?
উঃ ঢাকা নগরটি জাহাঙ্গিরনগর নামে পরিচিত ছিল।
২১. বাংলায় ব্রিটিশ বণিক ও বাণিজ্য কোম্পানি ছাড়া দুটি বিদেশি বণিক ও কোম্পানির নাম লেখো।
উঃ বাংলায় ব্রিটিশ বণিক ও বাণিজ্য কোম্পানি ছাড়া দুটি বিদেশি বণিক কোম্পানির নাম হল- ফরাসি ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি এবং আর্মেনীয় বণিক কোম্পানি।
২২. পলাশির যুদ্ধের পর সিরাজের কলকাতা আক্রমণের অজুহাতে কোম্পানি কত টাকা ক্ষতিপূরণ নেয়?
উঃ পলাশির যুদ্ধের পর সিরাজের কলকাতা আক্রমণের অজুহাতে কোম্পানি ১ কোটি ৭৭ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ নেয়।
২৩. পলাশির যুদ্ধ করে হয়?
উঃ ১৭৫৭ খ্রিস্টাব্দের ২৩ জুন ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ও বাংলার নবাব সিরাজ-উদদৌলার মধ্যে পলাশির যুদ্ধ হয়েছিল।
২৪. বাংলার প্রথম গভর্নর জেনারেল কে ছিলেন?
উঃ বাংলার প্রথম গভর্নর জেনারেল ছিলেন রবার্ট ক্লাইভ।
২৫. বাংলার প্রথম স্বাধীন নবাব ছিলেন কে?
উঃ বাংলার প্রথম স্বাধীন নবাব ছিলেন সিরাজ-উদদৌলা।
২৬. বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব কে?
উঃ বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব ছিলেন সিরাজ-উদদৌলা।
২৭. অন্ধকূপ হত্যাকে কে অতিরঞ্জন বলে প্রমাণ করেছিলেন?
উঃ অন্ধকূপ হত্যাকে অক্ষয় কুমার মৈত্র অতিরঞ্জন বলে প্রমাণ করেছিলেন।
২৮. কোন্ সম্বির ফলে ইংরেজ কোম্পানি তার বাণিজ্যিক অধিকারগুলি ফিরে পায়?
উঃ আলিনগর সন্ধি (১৭৫৭ খ্রি.)-র ফলে ইংরেজ কোম্পানি বাংলায় তার বাণিজ্যিক অধিকারগুলি ফিরে পায়।
২৯. কোন্ মুঘল সম্রাট মুরশিদকুলি খানকে 'বাংলার দেওয়ান' হিসেবে পাঠিয়েছিলেন?
উঃ মুঘল সম্রাট ঔরঙ্গজেব মুরশিদকুলি খানকে 'বাংলার দেওয়ান' হিসেবে পাঠিয়েছিলেন।
✍️প্রশ্নের মান-৩/৫:
১. 'পলাশির লুণ্ঠন' কাকে বলে?***
উঃ ১৭৫৭ খ্রিস্টাব্দে পলাশির যুদ্ধে ব্রিটিশ কোম্পানি জয়লাভ করে। ইংরেজরা সিরাজ উদ-দৌলাকে সরিয়ে মির জাফরকে বাংলার নবাব পদে বসান।
পলাশির যুদ্ধের পর ব্রিটিশ কোম্পানি নবাব মির জাফরের কাছ থেকে বিভিন্নভাবে প্রচুর অর্থ আদায় করে। রবার্ট ক্লাইভ এবং কোম্পানির উচ্চপদস্থ কর্মচারীরাও প্রচুর অর্থ আদায় করে। এবং এটি ব্রিটেনে পাঠানো হয় কোম্পানির পক্ষ থেকে প্রচুর অর্থ লুণ্ঠন করে।
সব মিলিয়ে প্রায় ৩ কোটি টাকার সম্পদ ইংরেজরা আদায় করে। পলাশির যুদ্ধের পর মির জাফরের কাছ থেকে ইংরেজদের অর্থ আত্মসাৎকে পলাশির লুণ্ঠন বলা হয়।
২. অন্ধকূপ হত্যা' বলতে কী বোঝায়?*
উঃ অন্ধকূপ হত্যা: ইংরেজ কর্মচারী হলওয়েলের বিবরণ থেকে জানা যায় যে, নবাবের ফোর্ট উইলিয়মে প্রবেশের পর ১৪৬ জন ব্রিটিশ কোম্পানির কর্মচারী নবাব-বাহিনীর হাতে বন্দি হয়েছিলেন। এদের রাখার জন্য একটি ১৮ ফুট লম্বা এবং ১৪ ফুট ১০ ইঞ্চি চওড়া কক্ষে ব্যবস্থা হয়েছিল। পরদিন সকালে, এই কক্ষের মধ্যে ১২৩ জন মৃত্যু হয়। এই ঘটনাটি অন্ধকূপ হত্যা নামে পরিচিত। তবে, এই ঘটনার সত্যতা সম্পর্কে ঐতিহাসিকগণ সন্দেহ প্রকাশ করেন।
৩. ছিয়াত্তরের মন্বন্তর' বলতে কী বোঝায়? এই মন্বন্তরের ফলাফল কী হয়েছিল?*
উঃ ছিয়াত্তরের মন্বন্তর: ১১৭৬ বঙ্গাব্দে (ইংরেজি ১৭৭০ খ্রিস্টাব্দে) বাংলাদেশে একটি মর্মান্তিক মন্বন্তর ঘটে। এই ঘটনাটি ইতিহাসে "ছিয়াত্তরের মন্বন্তর" নামে পরিচিত।
• ফলাফল: প্রথমত, দুর্ভিক্ষের সময় অখাদ্যকুখাদ্য খাওয়ার ফলে বাংলায় একটি মহামারির প্রাদুর্ভাব ঘটে. এবং এতে বাংলার এক-তৃতীয়াংশ মানুষের মৃত্যু হয়।
দ্বিতীয়ত, মন্বন্তরে অসংখ্য কৃষক, তাঁতি, শিল্পী, কারিগর, কুম্ভকার ইত্যাদি শ্রমজীবীর মৃত্যু হওয়ার ফলে বাংলার কৃষি ও শিল্প খুব ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
৪. 'রেসিডেন্ট' কাদের বলা হত? ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি কেন রেসিডেন্ট নিয়োগ করত?
উঃ রেসিডেন্ট: ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি তাদের পরোক্ষ শাসনাধীন রাজ্যে যে প্রতিনিধি রাখত, তাকে রেসিডেন্ট বলা হত।
• রেসিডেন্ট নিয়োগের কারণ: অনেক অঞ্চলে ব্রিটিশ কোম্পানি সরাসরি শাসন না করে পরোক্ষভাবে শাসন করত, এই পরোক্ষ শাসনাধীন রাজ্যে একজন রেসিডেন্ট নিয়োেগ করত। ১৭৬৪ খ্রিস্টাব্দে বক্সারের যুদ্ধের পর ব্রিটিশ কোম্পানি বাংলা, হায়দরাবাদ ও অযোধ্যায় নিজেদের প্রতিনিধি নিয়োগ করেছে, যারা ব্রিটিশ কোম্পানির প্রতি নজরদারি চালাতে এবং নিরাপত্তার জন্য কাজ করে।
৫. ব্রিটিশ রেসিডেন্টদের কাজ কী ছিল?*
উঃ ব্রিটিশ কোম্পানি তাদের পরোেক্ষ শাসনাধীন রাজ্যে যে প্রতিনিধি রাখত, তাকে রেসিডেন্ট বলা হয়।
ব্রিটিশ রেসিডেন্টদের কাজ: ব্রিটিশ রেসিডেন্টদের কাজ ছিল-
১. নজরদারি করা: কোম্পানির পরোক্ষ শাসনাধীন রাজ্যের রাজা কোম্পানির নজর এড়িয়ে যাতে স্বাধীনভাবে কাজ করতে না পারে তার জন্য নজরদারি করা।
২. কোম্পানিকে রাজ্যদখলে উৎসাহ দেওয়া: লর্ড ওয়েলেসলির আমল থেকে রেসিডেন্টরা আগ্রাসী নীতি অনুসরণ করত। তারা কোম্পানিকে সরাসরি এলাকা দখলের জন্য উসকানি দিত।
৬. ফাররুখশিয়র ফরমান' বলতে কী বোঝায়?*
উঃ'ফাররুখশিয়র ফরমান' বোেঝায় যে, মুঘল সম্রাট ফাররুখশিয়র (আবু মুজাফফর মুহাম্মদ ফাররুখশিয়র) দ্বারা ১৭১৭ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিকে বাংলাদেশে ব্যাবসাবাণিজ্য করার অধিকার দেওয়ার জন্য জারি করা একটি আদেশ বা ফরমান। এই ফরমানে উল্লিখিত হয় যে, ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বছরে মাত্র তিন হাজার টাকার বিনিময়ে বাংলায় ব্যাবসাবাণিজ্য করার অধিকার লাভ করতে পারত। এই ফরমান ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কাছে ব্যাবসায়িক সুযোগ এবং সুবিধা প্রদান করেছিল এবং এটি বাংলাদেশে তাদের ব্যবসার প্রভাব এবং নিয়ন্ত্রণ বাড়ানোর উদ্দেশ্যে জারি করা হয়েছিল।
৭. ফাররুখশিয়রের ফরমানের গুরুত্ব কী ছিল?*
উঃ ১৭১৭ খ্রিস্টাব্দে মুঘল সম্রাট ফাররুখশিয়র ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির জন্য জারি করেছিলেন একটি আদেশ বা ফরমান, যা ভারতের ইতিহাসে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
• ফাররুখশিয়রের ফরমানের গুরুত্ব :
১. বাংলায় অবাধে বাণিজ্য করা: ফাররুখশিয়রের ফরমানের মাধ্যমে ব্রিটিশ কোম্পানির বাংলায় অবাধে বাণিজ্য করার পথ খুলে গিয়েছিল।
২. বাংলায় ক্ষমতা দখলের পটভূমি রচনা : ফাররুখশিয়রের ফরমান লাভ করার ফলে বাংলার নবাবদের সঙ্গে ব্রিটিশ কোম্পানির অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংঘাত শুরু হয়। ব্রিটিশ কোম্পানি এই সুযোগটি ব্যবহার করে ভারতে তাদের প্রভাব বৃদ্ধি করতে শুরু করে।
৮. 'দস্তক' কী? ইংরেজরা কবে, কার কাছ থেকে দস্তক ব্যবহারের অধিকার লাভ করে?*
উঃ দস্তক: "দস্তক" শব্দটি বাণিজ্যিক ছাড়পত্রকে বোঝায়। ১৭১৭ খ্রিস্টাব্দে মুঘল সম্রাট ফাররুখশিয়র ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিকে একটি ফরমান প্রদান করেন, যেখানে ইংরেজ কোম্পানিকে বাংলার বাণিজ্যে দস্তক ব্যবহারের অধিকার প্রদান করা হয়েছে।
• ইংরেজরা ১৭১৭ খ্রিস্টাব্দে দস্তক লাভ করেছিল।
• মুঘল সম্রাট ফাররুখশিয়রের কাছ থেকে ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি দস্তক লাভ করেছিল।
৯. বর্গি' কারা? *
উঃ বর্গি: 'বর্গি' হল মারাঠা দস্যু বা লোেকদের জন্য ব্যবহৃত একটি শব্দ। এই শব্দটি এসেছে মারাঠি ভাষা থেকে, যার মূল শব্দ হল 'বরছা' বা 'বরছি', যার অর্থ হল 'বল্লম' (মূলত ভালুক মারার জন্য ব্যবহৃত হত)। মহারাষ্ট্রের হাটকার নামক যোদ্ধা জনজাতি, যারা সাত হাত লম্বা কম্বল এবং বরছি ব্যবহার করত, এদের বর্গি বলা হত। বাংলাদেশে মারাঠি সাম্রাজ্যের কাছ থেকে তাদের যুদ্ধের জন্য ঘোড়া এবং অস্ত্রশস্ত্র পেত।
১৭৪২ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৭৫১ খ্রিস্টাব্দের মধ্যবর্তীকালে বাংলা-উড়িষ্যায় মারাঠা সেনাদের লুঠতরাজের ঘটনা সাধারণভাবে বর্গি আক্রমণ নামে পরিচিত। বিভিন্ন আঞ্চলিক শক্তি বর্গিদের নজরানা দিয়ে সন্তুষ্ট রাখতে চেষ্টা করত। নবাব আলিবর্দি খানের আমলে তারা বারংবার বাংলা আক্রমণ করেছিল। বাংলার মানুষের উপর তারা ভয়ংকর অত্যাচার চালাত।
১০. মুঘল সাম্রাজ্যে কেন কৃষক বিদ্রোেহ ঘটে?
উঃ মুঘল সাম্রাজ্যের আয়ের প্রধান উৎস ছিল ভূমিরাজস্ব। কৃষকদের থেকে জোর করে রাজস্ব আদায় করা হত।
• কৃষক বিদ্রোহের কারণ :
১. চড়া রাজস্বহার: টোডরমলের আইন-ই-দহশালা এবং কোরানের নির্দেশ অনুযায়ী মুঘল যুগের প্রথমদিকে উৎপাদনের 1/3 ভাগ রাজস্ব ধার্য ছিল। পরে উৎপাদনের ১/২ ভাগ রাজস্ব ধার্য হয়।
২. বাড়তি আদায়: 'বাড়তি আদায়' হল এমন একটি প্রথা যার মাধ্যমে অভিজাতদের বিলাসিতার জন্য তাদের কৃষকদের কাছ থেকে বাড়তি টাকা আদায় করা হতো। এটির ফলে কৃষকদের মধ্যে অসন্তোষ বৃদ্ধি পেত। এই প্রথার ফলে মুঘল সাম্রাজ্যের অর্থনৈতিক ভিত্তি দুর্বল হয়ে আসে।
এই অত্যাচার ও শোষণের প্রতিক্রিয়ায় মুঘল আমলে কৃষক বিদ্রোহ ঘটে।
.....................