📚উচ্চমাধ্যমিক সংস্কৃত: আর্যাবর্তবর্ণনম: প্রশ্ন উত্তর( mcq+ saq+daq)📚
আর্যাবর্তবর্ণনম্
MCQ প্রশ্নোত্তর [মান ১]
1. আর্যাবর্তবর্ণন-এর মূলগ্রন্থটি কী ধরনের কাব্য?
(a) গদ্য (b) পদ্য (c) চম্পু (d) নাটক
Ans. (c) চম্পু
2. আর্যাবর্তবর্ণনম্ গদ্যাংশটি নলচম্পুর কোন উচ্ছ্বাস ?
(a) প্রথম (b) তৃতীয় (c) চতুর্থ (d) ষষ্ঠ
Ans. (a) প্রথম
3. আর্যাবর্তবর্ণনম-এ গঙ্গা ছাড়া কোন নদীর নাম পাওয়া যায় ?
(a) চন্দ্রভাগা (b) কাবেরী (c) গোদাবরী (d) যমুনা
Ans. (a) চন্দ্রভাগা
4. নলচম্পু-এর রচনাকার —
(a) ত্রিবিক্রমভট্ট (b) গাগাভট্ট (c) কালিদাস (d) শঙ্করাচার্য
Ans. (a) ত্রিবিক্রমভট্ট
5. স্ফোটপ্রবাদ কোন শাস্ত্রের অন্তর্গত?
(a) আয়ুর্বেদ (b) বিজ্ঞান (c) বেদ (d) ব্যাকরণ
Ans. (d) ব্যাকরণ
6. নাকলোক পদের অর্থ –
(a) স্বর্গ (b) মৰ্ত (c) রসাতল (d) নাকের অগ্রভাগ
Ans. (a) স্বর্গ
7. ‘প্রভঞ্জন’ বলতে বোঝায় –
(a) ঝড় (b) দাতা (c) ভিক্ষুক (d) বদমাশ
Ans. (a) ঝড়
8. বৃক্ষশাখা কোন মাসে বিপল্লবা হয়?
(a) ফাল্গুন (b) বৈশাখ (c) চৈত্র (d) জ্যৈষ্ঠ
Ans. (a) ফাল্গুন
9. ‘আর্যাবর্তবর্ণন’-এর উৎস –
(a) ভাগবত চম্পু (b) রামায়ণ চম্পু (c) নলচম্পু (d) যশস্তিমূলক চম্পু
Ans. (c) নলচম্পু
10. ‘আর্যাবর্তবর্ণন’-এর রচনাকার—
(a) বিক্রমাদিত্য (b) কৃষ্ণমাচার্য (c) গোবিন্দকৃষ্ণ মোদক (d) ত্রিবিক্রমভট্ট
Ans. (d) ত্রিবিক্রমভট্ট
11. ভগীরথ কোন বংশের রাজা ?
(a) চন্দ্রবংশ (b) সূর্যবংশ (c) সগর বংশ (d) ইক্ষাকুবংশ
Ans. (d) ইক্ষাকুবংশ
12. “পদে পদে ধনদাঃ” – ধনদাঃ শব্দের দ্বারা কাকে বোঝানো হয়েছে ?
(a) কুবের (b) যক্ষ (c) শিব (d) রাক্ষস
Ans. (a) কুবের
13. আর্যাবর্তের দুই নদী হলো –
(b) গঙ্গা-যমুনা (c) সিন্ধু-কাবেরী (d) গোদাবরী-সরস্বতী
Ans. (a) গঙ্গা-চন্দ্রভাগা
14. ভূতবিকারবাদ-এর কথা কোন শাস্ত্রে বলা হয়েছে?
(a) জ্যোতিষশাস্ত্র (b) ব্যাকরণশাস্ত্র (c) আয়ুর্বেদশাস্ত্র (d) সাংখ্যদর্শন
Ans. (d) সাংখ্যদর্শন
15. “কথাবন্ধ ইব” বলতে কী বোঝো?
(a) কথাত্মক কাব্যের মতো (b) কথার মতো (c) কথা বন্ধ হয়েছে এমন (d) কথাগুলির মতো
Ans. (a) কথাত্মক কাব্যের মতো
অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর [মান ১]
1. চম্পুকাব্য কাকে বলে?
Ans. যে কাব্যে গদ্য ও পদ্যের আনুপাতিক হার প্রায় সমান তাকে বলা হয় চম্পুকাব্য।
2. আর্যাবর্ত বলতে কোন অঞ্চলকে বোঝায়?
Ans. হিমালয় থেকে দক্ষিণে এবং বিন্ধ্যপর্বত থেকে উত্তরে অবস্থিত যে অঞ্চলের পশ্চিম দিক সমুদ্র দ্বারা বেষ্টিত তাকে বলে আর্যাবর্ত।
3. স্ফোটবাদ কাদের অভিমত?
Ans. বৈয়াকরণগণের।
4. ত্রিবিক্রমভট্টের দুটি বিখ্যাত কৃতির নাম লেখো।
Ans. (ক) নলচম্পু (খ) মদালসা চম্পু
5. আর্যাবর্তকে কার সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে?
Ans. আর্যাবর্তকে স্বর্গের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে।
6. আর্যাবর্তের মানুষ কাকে উপহাস করে?
Ans. আর্যাবর্তের মানুষ স্বর্গে অবস্থিত দেবদেবতাদের উপহাস করে।
7. ত্রিবিক্রমভট্টের আর এক নাম কী ?
Ans. যমুনাত্রিবিক্রম।
8. বিপল্লবাঃ শব্দের অর্থ কী?
Ans. বিপল্লবাঃ শব্দের অর্থ গাছের পাতা ঝরে যাওয়া অর্থাৎ পত্রহীন অবস্থা। অন্য অর্থে, বিপল্লবাঃ -এর অর্থ বিপদের ঝুঁকি নেই এমন অবস্থা।
9. তুঙ্গসকলভাবনাঃ-এর অর্থ কী কী ?
Ans. উঁচু উঁচু পর্বত এবং উঁচু উঁচু বাড়িযুক্ত নগর প্রদেশগুলি।
10. “গ্রাম্য কবি কথাবন্থ ইব নীরসস্য মনোহরঃ” – এই বাক্যের অর্থ কী ?
Ans. গ্রাম্য কবিদের কথা কাব্যের মতো নীরসদের অর্থাৎ রসহীন ব্যক্তিদের কাছেও মনোহর।
11. আর্যাবর্তের বনগুলি কেমন?
Ans. এখানকার বাগানের উর্বর মাটি গাছের পক্ষে উপকারী।
12. ননাঃ পদটির সংস্কৃত প্রতিশব্দ কী?
Ans. পর্বতা ।
13. সাংখ্যের ভূতবিকারবাদ কী?
Ans. পৃথিবী, জল, আগুন, বায়ু ও আকাশ।
14. সশ্রীকাঃ হরয়ঃ কথাটির দুই অর্থ কী কী?
Ans. শোভাযুক্ত অশ্ব এবং স্বর্গের দেবতা হরি।
15. ভগীরথ ভূপাল-কীর্তি পতাকা বলতে কী বোঝো?
Ans. ভগীরথ গঙ্গাকে পৃথিবীতে এনেছেন। তাই তাঁর কীর্তির প্রসঙ্গে বলা হয়েছে।
16. কবি কার সম্পর্কে ‘ললাম-লীলায়মানঃ, বিশেষণ ব্যবহার করেছেন?
Ans. কবি আর্যাবর্ত সম্পর্কে এই বিশেষণ ব্যবহার করেছেন।
17. গুল্মবৃদ্ধিৰ্বণভূমিসু কথার দু'টি অর্থ লেখো।
Ans. আর্যাবর্ত দেশে গুল্ম বৃদ্ধির বনভূমি দেখা যায়, কিন্তু প্রাণীদের মধ্যে প্লীহা জাতীয় কোনো রোগ দেখা যায় না।
18. সদাচরণমণ্ডনানি নূপুরানীর পুরাণি’—পুরগুলি কেমনভাবে শোভা পাচ্ছে?
Ans. সৎব্যক্তিদের দ্বারা পুরগুলিও শোভিত।
19. নীরসস্য মনোহরঃ কথাটি কবি কী কী অর্থে প্রয়োগ করেছেন?
Ans. এর অর্থ হলো রসহীন লোকের কাছে মনোহর।
20. কবি আর্যাবর্ত দেশকে সমান সেব্যতয়া নাকলোকস্য বলেছেন কেন ?
Ans. আর্যাবর্ত দেশ স্বর্গের সঙ্গে তুলনীয়, তাই।
21. সবর্ণ-বিকার বলতে কবি কী বোঝাতে চেয়েছেন?
Ans. সবর্ণ-বিকার বলতে কবি বুঝিয়েছেন আর্যাবর্তে বর্ণাশ্রম প্রথার ভেদ নেই। সকলে সমানভাবে রীতি মেনে চলে।
22. যক্ষরা কার অনুচর ?
Ans. কুবেরের।
23. “কথং চ অসৌ স্বর্গান বিশিষ্যতে” – এখানে অসো বলতে কাকে বোঝানো হয়েছে?
Ans. আর্যাবর্ত দেশকে।
রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর [মান ৫]
1. আর্যাবর্ত ও স্বর্গের তুলনা যেভাবে ত্রিবিক্রমভট্ট করেছেন তা বর্ণনা করো।
অথবা, আর্যাবর্ত ও স্বর্গ একটি তুলনামূলক আলোচনা করো।
অথবা,কথং চাসৌ স্বর্গান বিশিষ্যতে”—এই অংশটির তাৎপর্য ব্যাখ্যা করো।
উঃ ভূমিকা: ত্রিবিক্রমভট্ট চম্পুকাব্য জগতের অন্যতম প্রতিভাবান মালাকার। 'নলচম্পু' কাব্যের প্রথম উচ্ছাস আর্যাবর্তবর্নম অংশে, ভগ্নশ্লেষ অলঙ্কারের মাধ্যমে তিনি প্রমাণ করেন যে আর্যাবর্ত নামক দেশটি স্বর্গের চেয়েও শ্রেষ্ঠ।
আর্যাবর্ত কেন কবির মতে শ্রেষ্ঠ দেশ তা নীচে আলোচনা করা হলো-
1. গৌর্য: স্ত্রীয়:
স্বর্গে একজনই গৌরী অর্থাৎ মহাদেবী পার্বতী। কিন্তু আর্যাবর্তের ঘরে ঘরে সুন্দরী নারী আছে।
2. মহেশ্বরো লোক:
স্বর্গে একজনই মহেশ্বর অর্থাৎ দেবাদিদেব মহাদেব। কিন্তু আর্যাবর্তের গৃহে আছে ‘মহেশ্বর লোকঃ’ অর্থাৎ মহান ও অত্যন্ত সমৃদ্ধ লেকজন।
3. সশ্রিকা হরয়:
স্বর্গে একজনই দেবতা, হরি। কিন্তু আর্যাবর্তের ঘরে ঘরে আছে ‘সশ্রিকা হরয়াৎ’ অর্থাৎ সুন্দর ঘোড়া।
4. ধনদা:
স্বর্গে একটিই ‘ধনদা:’ অর্থাৎ ধনপতি কুবের। কিন্তু আর্যাবর্তে অনেক ধনী ব্যক্তি আছেন যারা বিভিন্ন জায়গায় অর্থ দান করেন।
5. সুরাধিপ:
মেলোডি শব্দের অর্থ ঈশ্বর। তাই ‘গুরাধিপঃ’ বলতে মানে দেবরাজ ইন্দ্র। কিন্তু আর্যাবর্তে সুরধিপ অর্থাৎ মাতাল রাজা নেই।
6.বিনায়ক:
স্বর্গে আছে ‘বিনায়ক’ অর্থাৎ সিদ্ধিদাতা গণেশ কিন্তু আর্যাবর্তে বিনায়ক বা বিরোধী নায়ক (শত্রু) নেই।
মূল্যায়ন:
উপরের যুক্তিগুলো থেকে সহজেই বলা যায় আর্যাবর্ত হচ্ছে পবিত্রতম দেশ, সকলের প্রিয় এবং স্বর্গের চেয়েও শ্রেষ্ঠ স্থান।
...............
2. ত্রিবিক্রমভট্ট বিরচিত আর্যাবর্তবৰ্ণন গল্প অনুযায়ী আর্যাবর্ত দেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের একটি চিত্র অঙ্কন করো।
অথবা, আর্যবর্তের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের বর্ণনা দাও।
উঃকবি ত্রিবিক্রম ভট্ট নলচম্পু কাব্যের প্রথমোচ্ছ্বাসে আর্যাবর্ত নামে আর্যদের শ্রেষ্ঠ জনপদের বর্ণনা অপূর্ব শ্লেষাত্মক, বুদ্ধিদীপ্ত ভাষায় বর্ণনা করেছেন।
মনুসংহিতায় এই দেশের ভৌগালিক অবস্থান এই ভাবে বলা হয়েছে—
“আসমুদ্ৰাৎ তু বৈ পূর্বাদাসমুদ্ৰাৎ তু পশ্চিমাৎ।
তয়োরেবান্তরং গির্যোরার্যাবর্তং বিদুর্বুধাঃ।।
মনুসংহিতা
অর্থাৎ হিমালয় থেকে দক্ষিণে এবং বিন্ধ্যাচল থেকে উত্তরে এবং যে অঞ্চলের পূর্বে ও পশ্চিমে সমুদ্র আছে সেই অঞ্চলকে আর্যাবর্ত বলা হয়।
কবির বর্ণনার মধ্য দিয়ে এই আর্যাবর্তের অসাধারণ কয়েকটি বৈশিষ্ট্য ধরা পড়েছে। সংক্ষেপে সেগুলি এই ভাবে উপস্থাপিত করা যায়—
‘আর্যাবর্ত, একটি আশ্চর্য ভারত ভূমন্ডল, যা সমগ্র পৃথিবীর মধ্যে শ্রেষ্ট, স্বর্গের তুল্য অত্যন্ত মনোহর ও সমৃদ্ধ।
ধনমান শৌর্যে সে সর্বাপেক্ষা অগ্রণী, সেখানে বর্ণাশ্রমধর্মের বিকার ঘটে না, বংশলোপ হয় না, অনর্থক উৎপাত নেই, ভাগীরথী গঙ্গার সুশীতল স্পর্শে পবিত্র ও সুন্দর আর্যবাস ভূমি। পুণ্যবান জনেদের বাসভূমি সম্পদের আশ্রয়, সাধুলোকেদের শোভন ব্যবহারে, শিক্ষিত জনেদের প্রাচুর্যে স্বর্গতুল্য এই বাসভূমি।
এখানে সদা ধর্মকর্মের অনুষ্ঠান চলে, রোগব্যাধি এখানে প্রাণক্ষয় করে না, মানুষ শতবর্ষ পরিমাণ পূর্ণ আয় নিয়ে বেঁচে থাকে। এখানে বৈয়াকরণরা স্ফোটবাদতত্ত্বে নিমগ্ন, কিন্তু প্রজারা ফোঁড়াব্যাধিতে যন্ত্রনা পায় না, এখানে সংগীতবাদ্যে মুখরিত হয়, জ্যোতিষশাস্ত্রের আলোচনা হয় কিন্তু গ্রহদোষ নেই। বৃক্ষ লতাগুল্ম শস্য বেড়ে চলে। পর্বতে পশুদের উল্লম্ফন, কিন্তু গন্ডরোগের কোনো চিহ্ন নেই।
নানা সুউচ্চ বৃক্ষশোভিত জন্মস্থান, উদ্যান, বাটিকা, বিটপি—সবই আছে কিন্তু বিট, চেট ইত্যাদি দুশ্চরিত্র নেই। এখানে নারীরা সতীব্রত করে—তারা নিষ্কলঙ্ক কুলবধূ। এখানে স্বর্গাপেক্ষাও বেশি সম্পদ, ইন্দ্রতুল্য রাজার শাসন—অথচ সেই সুরশ্রেষ্ঠ রাজা সুরাপান করেন না ইন্দ্রের মতে।
তাই তা স্বর্গপেক্ষাও বিশিষ্ট কবি বলেন—
“কথংচাসৌ স্বর্গান্ন বিশিষ্যতে?”
তাই বলা চলে কবি ত্রিবিক্রম ভট্ট আর্যাবর্তের বর্ণনায় যে কল্পনার জাল বিস্তার করে আর্যাবর্তের অপূর্ব ছবি, সমৃদ্ধ আর্যাবর্তের বর্ণনা করেছেন তাতে আছে কল্পনা, আে আর্যাবর্তের প্রতি গভীর দেশাত্মবোধের ভাবনা।
.........................