📚আর্যাবর্তবর্ণনম: ত্রিবিক্রমভট্ট:উৎস, লেখক পরিচিতি, বিষয়বস্তু ও বঙ্গানুবাদ 📚
ভূমিকা:
দশম শতাব্দীর কবি ত্রিবিক্রম ভট্ট। তাঁর পিতা ছিলেন শাণ্ডিল্য গোত্রের নেমাদিত্য নামে একজন ব্রাহ্মণ। ত্রিবিক্রম ভট্ট 'যমুনাত্রিবিক্রম' নামেও পরিচিত ছিলেন। ‘নলচম্পু’ ও ‘মদলসাচম্পু’ তার শ্রেষ্ঠ সাহিত্যকর্ম।
‘চম্পু’ শব্দের অর্থ গদ্য ও পদ্যের মিশ্রণ- ‘চম্পায়তি যোজয়তি গদ্যপদে ইতি চম্পুঃ’। সাহিত্যদর্পণ বলেছেন ‘গদ্যপদময়ং কাব্যং চম্পারিত্যবিধিতে’। গুপ্ত যুগে প্রাপ্ত শিলালিপি থেকে জানা যায় যে চম্পুকাব্য চতুর্থ শতাব্দীতেও প্রচলিত ছিল। তবে এই কাব্য রচনার সূচনা দশম শতাব্দীতে এবং ‘নলচম্পু’ সেই অর্থে রচিত প্রথম চম্পুকাব্য। সংস্কৃত সাহিত্যে 'নলচম্পু' এবং 'মদলসাচম্পু' ছাড়াও আরও আঠারটি চম্পুকাব্য রয়েছে। অনুসন্ধান পাওয়া গেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল ‘রামায়ণ চম্পু’, ‘ভগবতচম্পু’, ‘যশস্তীলকচম্পু’, এবং ‘জীবান্ধরাচম্পু’।
বর্তমান লেখাটি 'নলচম্পু' কাব্যের প্রথম অধ্যায় থেকে নেওয়া হয়েছে। এই বিভাগে আমরা দশম শতাব্দীর ভারতে আর্যাবর্ত নামে বিখ্যাত অঞ্চলটির একটি সুন্দর, বাকপটু বর্ণনা পাই। বইটিতে মোট সাতটি অধ্যায় রয়েছে এবং মূল বিষয় নল ও দময়ন্তীর প্রেমের গল্প।
আর্যাবর্তবর্ণনাম পাঠ-প্রথম অংশ:
अस्ति समस्तविश्वम्भराभोगभास्वल्ललामलीलायमानः, समानः सेव्यतया नाकलोकस्य, ग्राम्यकविकथाबन्ध इव नीरसस्य मनोहर:, भीम इव भारतालङ्कारभूतः अग्रणी: सर्वविषयाणाम्, अनधीतव्याकरण इवादृष्टप्र कृतिनिपातोपसर्गलोपसवर्णविकारः, पशुपतिजटाबन्ध इव विकसितकनककमलकुवलयोच्छलितरजः पुञ्जपिञ्जरितहंसावतंसया प्रचुरचलच्चकोरचक्रवाककार ण्डवमण्डलीमव्डिततीरया भगीरथभूपालकीर्तिपताकया स्वर्गगमनसोपानवीथीयमानरिङ्गत्तरङ्गया गङ्गया पुण्यसलिलैः, प्लावितश्चन्द्रभागालंकृतैकदेशश्च, शरण्य: पुण्यकारिणाम्, आरामोरामणीयककदली वनस्य, धाम-धर्मस्य, आस्पदं सम्पदाम् , आश्रयः श्रेयसाम्, आकरः साधुव्यहाररत्नानाम, आचार्यभवनमार्यमयी-दोपदेशानामार्यावर्तो नाम देशः।
বাংলা উচ্চারণ:
অস্তি সমস্ত বিশ্বম্ভরা ভোগ ভাস্বল ললাম্ লীলায়মানঃ সমানঃ সেব্যতয়া নাকলোকস্য।
গ্রাম্যকবি কথাবন্ধ ইব নীরসস্য মনোহরঃ ভীম ইব ভারত অলঙ্গার ভূতঃ,অগ্রণীঃ সর্ববিষয়ানাম্।
অনধীতব্যকরন ইব অদৃষ্ট প্রকৃতি-নিপাত-উপসর্গ-লোপ- বর্ণবিকার।
পশুপতি জটাবন্ধ ইব বিকশিত কনককমলকুবলয় উচ্ছলিরজঃ পুঞ্জপিঞ্জরিত হংস অবতংসয়া প্রচুর চলচ্ চকোর চক্রবাককারন্ডবমন্ডলিমন্ডিততীরয়া।
ভগীরথভূপালকীর্তিপতাকয়া স্বর্গগমনসোপানবীথীয়মানরিঙ্গত্ত-তরঙ্গায়া গঙ্গয়া পুণ্যসলিলঃ প্লাবিত চন্দ্রভাগা অলঙ্কৃতে এক দেশশ্চ।
শরণ্যঃ পুণ্যকারিণাম্ আরামো রমণীয় কদলীবনস্য,ধাম ধর্মস্য আস্পাদং সম্পদাম্ আশ্রয়াঃ শ্রেয়সাম,আকর,সাধ্যুবহাররত্নাণাম্ আচার্যভবণম্ আর্যমর্যাদা উপদেশণাম্ আর্যাবর্তো নাম দেশ।
বঙ্গানুবাদঃ- সমগ্র পৃথিবীর ভোগ্য বস্তুর উপস্থিতিতে এবং উজ্জ্বল সৌন্দর্যে বিরাজমান এই দেশ স্বর্গের মতো উপভোগ্য।
নিরস মানুষের কাছে গ্রাম কবির রচনা যেমন মনোহর, তেমনই দেশও নীর ও শষ্যে মনোহর অর্থাৎ জল ও শষ্যে পরিপূর্ণ। ভীম যেমন মহাভারতের অলংকার। এই দেশও ভারতবর্ষের অলংকার। এই দেশ সমস্ত দেশের মধ্যে অগ্রগণ্য।
ব্যাকরণে মূর্খ ব্যক্তি যেমন প্রকৃতি -নিপাত – উপসর্গ- বর্ণবিকার জানে না, তেমনই এই দেশের প্রজাদের মধ্যে বংশচ্যুতি, চুরি প্রভৃতি উপদ্রব, নিয়মের অবলুপ্তি, বর্ণ ব্যবস্থার বিচ্যুতি দেখা যায় না।
মহাদেবের মস্তকের জটাজালের মতো প্রস্ফুটিত স্বর্ণ পদ্ম ও নীল পদ্ম থেকে ঝরে পড়া পরাগরাশিতে পীতবর্ণে রঞ্জিত হংসরূপ অলংকার দ্বারা শোভিত অনেক চঞ্চল -চকোর-চক্রবাক- সারসের দলে যার তীর শোভিত ছিল।
রাজা ভগিরথের কীর্তি পতাকা স্বরূপ। স্বর্গ গমনের সিঁড়ির ধাপের মতো আন্দোলিত তরঙ্গে ভরা পবিত্র গঙ্গার জলে যে দেশ পূর্ণ ছিল। যার একটি অংশ প্রবাহমান চন্দ্রভাগা নদীর ধারা অলংকৃত ছিল।
যে দেশ ছিল পূর্ণ মানুষদের আশ্রয় স্বরূপ, যে দেশ সুন্দর কলার বাগান দিয়ে ঘেরা,ধর্ম-কর্মের পুণ্য ক্ষেত্র, সম্পদের আধার,সকল মঙ্গলের আশ্রয়, সৎ আচরনরূপ রত্নসমূহের ভাণ্ডার, আচার্যদের বাসভূমি এবং সৎ উপদেশের পীঠস্থান – দেশটির নাম আর্যাবর্ত।
আর্যাবর্তবর্ণনম – দ্বিতীয় অংশ:
यस्मिन्ननवरतधर्मकर्मोपदेशशान्तसमस्तव्याधि व्यतिकराः पुरुषायुषजीविन्यः सकलसंसारसुखभाजः प्रजाः । तथा हि, स्फोटप्रवादो वैयाकरणेषु, ग्रहसंक्रान्तिर्ज्योतिः शास्त्रेषु, भूतविकारवादः सांख्येषु, गुल्मवृद्धिर्वनभूमिषु, गण्डकोत्थानं पर्वतवनभूमिषु दृश्यते न प्रजासु।
বাংলা উচ্চারণ:
যস্মিন্ অনবরত ধর্ম কর্ম উপদেশ শান্ত সমস্ত ব্যাধি ব্যাতি করাঃ। পুরুষ আয়ুষ জীবন্যঃ। সকল সংসার সুখভাজঃ প্রজাঃ।
তথা হি স্ফোটপ্রবাদো বৈয়াকরণেষু,গ্রহসংক্রান্তি জ্যোতির্শাস্ত্রেষু,ভূতবিকারবাদঃ সাংখ্যেষু,গুল্মবৃদ্ধিবনভূমিষু,
গন্ডকোথ্থানং পর্বতবনভূমিষু,দৃশ্যতে ন প্রজাসু।
বঙ্গানুবাদঃ- এই আর্যাবর্ত দেশে সব সময় ধর্ম-কর্মের উপদেশের ফলে প্রজাদের সমস্ত রোগ দূর হয়েছে। এখানে প্রজারা মানুষের সর্বোচ্চ আয়ু পর্যন্ত জীবন ধারন করে। প্রজারা সংসারের সমস্ত প্রকার সুখ ভোগ করে।
স্ফোটতত্ত্ব ব্যাকরণ শাস্ত্রে আলোচিত হতে দেখা যায়, কিন্তু প্রজাদের মধ্যে ফোঁড়া,ঘা ইত্যাদি দেখা যায়না। জ্যোতিষ শাস্ত্রে গ্রহ সংক্রান্ত আলোচনা দেখা যায়, কিন্তু প্রজাদের গ্রহের দ্বারা আক্রান্ত হতে হয়না। পঞ্চভূতের বিকার সংক্রান্ত তত্ত্ব সাংখ্য দর্শনে দেখা যায় কিন্তু তাদের মধ্যে ভূত প্রেতের উপদ্রব দেখা দেয় না। লতাগুল্মের বৃদ্ধি বনভূমিতে দেখা যায়, কিন্তু এখানকার মানুষদের মধ্যে প্লীহা রোগের প্রকোপ দেখা যায় না। পাহাড়ি বনাঞ্চলে গন্ডারের লাফালাফি দেখা যায়। কিন্তু প্রজাদের মধ্যে কোনো চর্মরোগ দেখা যায় না।
আর্যাবর্তবর্ণনম্ – তৃতীয় অংশ:
यत्र चतुरगोपशोभिताः संग्रामा इव ग्रामाः, तुझसकलभवनाः सर्वत्र नगा इव नगरप्रदेशाः, सदाचरणमण्डनानि नूपुराणीव पुराणि, सदानभोगाः प्रभञ्जना इव जनाः, प्रियालपनसाराणि यौवनानीव वनानि, विटपिहिताश्चेटिका इव वाटिकाः, निर्वृतिस्थानानि सुकलत्राणीवेक्षुक्षेत्रसत्राणि, कुपितकपिकु लाकु लिता लङ्केश्वरकिंकरा इव भग्न-कुम्भकर्ण-घनस्वापाः सूर्यद्युतय इव कुलस्त्रियः। : कूपाः, सतीव्रतापदोषाः
বাংলা উচ্চারণ:
যত্র চতুরগোপশোভিতাঃ সংগ্রামা ইব গ্রামাঃ তুঙ্গসকলভবণাঃ সর্বত্র নগা ইব নগর প্রদেশাঃ সদাচরণমন্ডনানি নুপুরানীবপুরাণি সদানভোগাঃ প্রভঞ্জনা ইব জনাঃ। প্রিয়ালপলসারানি যৌবনানীব বনানি, বিটপিহিতাশ্চেটিকা ইব কটিকাঃ, নির্বৃতিস্থানানি সুকলত্রাণীবেক্ষুক্ষেত্রসত্রানী। কুপিতকপিকুলাকুলিতা লঙ্গেশ্বরকিংকরা ইব ভগ্নকুম্ভকর্ণধনস্বাপাঃ কূপাঃ সতীব্রতাপদোষাঃ সূর্যদ্যুতয় ইব কুলস্ত্রিয়ঃ।
বঙ্গানুবাদঃ- যে দেশ যুদ্ধক্ষেত্র বহু অশ্ব দ্বারা শোভিত ছিল। যে দেশের নগরগুলি সর্বত্র পর্বততুণ্য উঁচু প্রাসাদে পরিপূর্ণ ছিল। যেখানে বর্ণগুলি হস্তশাবকে পূর্ণ ছিল। যে দেশে রমণীগণ সৎ আচরণ রূপ শোভিত ছিল। যেখানে রমনীগন নুপুর নামক অলংকারের দ্বারা সর্বদা অলংকৃত ছিল। জনগণও দান ও ভোগের দ্বারা সুখে জীবন কাটাত। কখনোই ঝড়ঝঞ্জার প্রকব ছিল না।
এখানে পুরুষেরা প্রিয়তমাদের সঙ্গে হাস্য পরিহাস যৌবনকালে অতিবাহিত করত, আর বনগুলি প্রিয়াল ও কাঁঠাল বৃক্ষ দ্বারা সমন্বিত ছিল।গৃহে দাসীগন লম্পট ব্যক্তিদের দ্বারা বেষ্টিত ছিল। আবার গাছের দ্বারা উপকারী অনেক বাগান ছিল। এখানে সুখের আশ্রয় স্বরূপ মনময় রমনীর মতো পরম আনন্দকারী আঁখের ক্ষেতের অনেক বন ছিল।
ক্রুদ্ধ বানরদের অত্যাচারে পিড়ীত হয়ে কুম্ভকর্ণের নিদ্রা ভঙ্গকারী রাবণের অনুচরদের মতো যেখানে কূপগুলি কাণা ভাঙ্গা কলসিতে পূর্ণ ছিল এবং নিজ জলে পূর্ণ ছিল। বংশের রমনিগন পতিপ্রেম প্রভৃতি গুনের দ্বারা কলঙ্ক মুক্ত ছিল। কিন্তু সূর্য তীব্র দহন দোষে দুষ্ট ছিল।
আর্যাবর্তবর্ণনম – চতুর্থ অংশ:
अपि च
भवन्ति फाल्गुने मासि वृक्षशाखा विपल्लवाः ।
जायन्ते न तु लोकस्य कदापि च विपल्लवाः ।।
বাংলা উচ্চারণ:
অপি চ – ভবন্তি ফাল্গুনে মাসি বৃক্ষশাখা বিপল্লবাঃ।
জায়ন্তে ন তু লোকস্য কদাপি চ বিপল্লবাঃ।।
বঙ্গানুবাদঃ- এছাড়াও ফাগুন মাসে বৃক্ষগুলির পাতা ঝরে পড়ে, কিন্তু এই দেশে মানুষের কখনো বিপদ ছিল না।
আর্যাবর্তবর্ণনম্ – পঞ্চম অংশ:
यत्र सौराज्यरञ्जितमनसः सकलसमृद्धिव – र्धितमहोत्सवपरम्परारम्भनिर्भराः सततमकुलीनं कुलीनाः, प्राप्तविमानमप्राप्तविमानभङ्गाः कतिपय वसुविराजितमनेकवसवः समुपहसन्ति स्वर्गवासिनं जनं जनाः ।
বাংলা উচ্চারণ:
যত্র সৌরাজ্যরঞ্জিতমনসঃ সকলসমৃদ্ধিবর্ধিতমহোৎসব পরম্পরানির্ভরাঃ, সততমকুলীনং কুলীনাঃ, প্রাপ্তবিমানমপ্রাপ্তবিমানভঙ্গাঃ, কতিপয়বসুবিরাজিতমনেকবসবঃ, সমুপঅন্তি স্বর্গবাসিনং জনং জনাঃ।
বঙ্গানুবাদঃ- যেখানে সুশাসন প্রতিষ্ঠার ফলে আনন্দিত মনে সমস্ত সমৃদ্ধিতে মহোৎসবের প্রথা মেনে কাজকর্ম অনুষ্ঠিত হত। ধনশালী জনগণ পৃথিবীতে কখনোই বিলীন হয় না। যেখানে আটজন বসু বিরাজ করেন। যাদের দেবযান নামক রথ রয়েছে, এইরূপ স্বর্গবাসী দেবতাদের আর্যাবর্তের জনগণ উপহাস করেন।
আর্যাবর্তবর্ণনম – ষষ্ঠ অংশ:
कथं चासौ स्वर्गान्न विशिष्यते । यत्र गृहे गृहे गौर्यः स्त्रियः, महेश्वरो लोकः, सश्रीका हरयः, पदे पदे धनदाः सन्ति लोकपालाः। केवलं न सुराधिपो राजा न च विनायकः कश्चित् ।