📚 উচ্চমাধ্যমিক দর্শন লজিক: বাক্যকে বচনে পরিণত করার নিয়মাবলী 📚
● বাক্যকে বচনে পরিণত করার প্রথম নিয়ম –
সকল, সমুদয়, সদা, যে-সে, অবশ্যই, সমস্ত, সব, সবাই, সর্বত্র, সর্বদা, প্রত্যেক, প্রত্যেকেই, নিশ্চিতভাবে, অনিবার্যভাবে, আবশ্যিকভাবে, যে কেউ, যে কেহ ,যে কোনো, যা-তা, যেখানে-সেখানে, যখন-তখন ,যদি-তবে, চিরকাল, মাত্র, মাত্রই ,সর্বতোভাবে ইত্যাদি এই জাতীয় কোন শব্দ সদর্থক বাক্যে থাকলে, সেক্ষেত্রে বাক্যটি সামান্য সদর্থক "A"বচন হবে।
আর কোন নঞর্থক বাক্যে এই জাতীয় কোন শব্দ থাকলে বাক্যটি বিশেষ নঞর্থক "O"বচনে রূপান্তর করতে হবে ।
যেমন- প্রত্যেক শিশু সরল। (বাক্য)
L.F.- সকল শিশু হয় সরল।(A-বচন)
গুণ- সদর্থক
পরিমাণ- সামান্য
সব ফুল লাল নয়। (বাক্য)
L.F.- কোন কোন ফুল নয় লাল।(O-বচন)
গুন -নঞর্থক
পরিমাণ-বিশেষ
● বাক্যকে বচনে পরিণত করার দ্বিতীয় নিয়ম-
না, কাউকে নয়, নয়, নও, নন,নেই, কেউ নয়, কেউ না, কোন একজন ও নয়, কোন মতেই নয়, কখনোই নয়, হতে পারে না, কোন কিছুই নয়, একটিও নয়, একই সঙ্গে নয়, যুগপৎ নয় ইত্যাদি এই জাতীয় শব্দ দিয়ে কোন বাক্য থাকলে বাক্যটিকে সামান্য নঞর্থক "E" বচন করে নিতে হয়।
যেমন- একইসঙ্গে বৃত্ত চতুষ্কোণ হতে পারেনা। (বাক্য)
L.F.- কোন বৃত্ত নয় চতুষ্কোণ।(E-বচন)
গুন -নঞর্থক ।
পরিমাণ- সামান্য ।
একজন ছাত্র ও পাস করেনি। ( বাক্য )
L.F.-কোন ছাত্র নয় উত্তীর্ণ ।(E-বচন)
গুন- নঞর্থক ।
পরিমা- সামান্য।
● বাক্যকে বচনে পরিণত করার তৃতীয় নিয়ম-
প্রায়, প্রত্যেকেই, অধিকাংশ, বেশিরভাগ, মোটের উপর, কতিপয়, শতকরা, কিছু, কিছু সংখ্যক, কোন কোন, কখনো কখনো, সাধারণত, প্রায়, প্রায়ই, প্রায়শই, প্রায়শ, প্রায় সবাই, সচরাচর, কয়েকটি, অল্পসংখ্যক, অনেক, বহু, কম, একাধিক, একটি ছাড়া সব, অনেক সময়, হতে পারে, থাকতে পারে, সম্ভবত ইত্যাদি এই জাতীয় কোন শব্দ সদর্থক বাক্যে থাকলে বাক্যটি বিশেষ সদর্থক "I" বচন করতে হয়।
আর নঞর্থক বাক্যে এই জাতীয় কোন শব্দ থাকলে বাক্যটি বিশেষনঞর্থক "O" বচনে রূপান্তরিত করে নিতে হয় ।
যেমন- সাধারণত মানুষ স্বার্থপর। (বাক্য)
L.F.- কোন কোন মানুষ হয় স্বার্থপর।(I-বচন)
গুণ- সদর্থক।
পরিমাণ- বিশেষ।
কম ছাত্র বিনয়ী নয়। (বাক্য)
L.F.-কোন কোন ছাত্র নয় বিনয়ী ।(O-বচন)
গুন- নঞর্থক ।
পরিমাণ- বিশেষ ।
● বাক্যকে বচনে পরিণত করার চতুর্থ নিয়ম-
কদাপি,কদাচিৎ, কদাচ, কচিৎ, খুব কম, স্বল্প সংখ্যক, প্রায়শই না, নেই বললেই চলে, খুব বড় একটা না, দুএকটি বাদে ইত্যাদি এই জাতীয় শব্দের অর্থ হলো নঞর্থক অর্থাৎ "Somenot"। যার অর্থ "কোন কোন নয়"।তাই এই জাতীয় শব্দ কোন সদর্থক বাক্যে থাকলে বাক্যটি বিশেষ নঞর্থক "O" বচন হয়।
আর নঙর্থক বাক্যে এই জাতীয় কোন শব্দ থাকলে বাক্যটি বিশেষ সদর্থক "I" বচন হয়।
যেমন- ধনীরা কদাপি সুখী। (বাক্য)
L.F.- কোন কোন ধনী নয় সুখী ।(O-বচন)
গুন- নঞর্থক।
পরিমাণ- বিশেষ।
ছাত্ররা কদাচিৎ সৎ নয় (বাক্য)
L.F.- কোন কোন ছাত্র হয় সৎ।(I-বচন)
গুণ- সদর্থক।
পরিমাণ- বিশেষ।
● বাক্যকে বচনে পরিণত করার পঞ্চম নিয়ম-
কেবলমাত্র, কেবল, একমাত্র, শুধু, শুধুমাত্র এই জাতীয় শব্দগুলো সদর্থক বাক্যে উদ্দেশ্য পদ এর আগে থাকলে সে ক্ষেত্রে বাক্যের উদ্দেশ্য কে বচনে বিধেয় এবং বাক্যের বিধেয় কে সিদ্ধান্তে উদ্দেশ্য স্থানে বসিয়ে "A" বচনে রূপান্তরিত করতে হয়।
আর নঞর্থক বাক্যে এই জাতীয় কোন শব্দ থাকলে সেক্ষেত্রে বাক্যের উদ্দেশ্য- বিধেয় একই রেখে "E" বচন করতে হয় ।
যেমন -একমাত্র শিশুরাই সরল। (বাক্য)
L.F.- সকল সরল প্রাণী হয় শিশু।(A-বচন)
গুণ- সদর্থক ।
পরিমাণ- সামান্য ।
কেবল শিশুরা মিথ্যা কথা বলে না। (বাক্য)
L.F.- কোন শিশু নয় মিথ্যাবাদী।(E-বচন)
গুণ- নঞর্থক।
পরিমাণ- সামান্য।
*ব্যতিক্রম - তবে কেবল, কেবলমাত্র, একমাত্র এই জাতীয় শব্দ বাক্যে বিধেয় অংশে থাকলে সেক্ষেত্রে বাক্যের উদ্দেশ্য-বিধেয় একই রেখে "A" কিংবা "E" বচন করতে হয়।
যেমন- বন্ধুরাই কেবল উপকার করে। (বাক্য)
L.F.- সকল বন্ধু হয় উপকারী।(A-বচন)
গুণ- সদর্থক।
পরিমাণ- সামান্য।
বন্ধুরা শুধু ক্ষতি করেনা। (বাক্য)
L.F.- কোনো বন্ধু নয় ক্ষতিকারী।(E-বচন)
গুন -নঞর্থক।
পরিমাণ- সামান্য।
● বাক্যকে বচনে পরিণত করার ষষ্ঠ নিয়ম-
ব্যতীত, ছাড়া এই জাতীয় শব্দগুলো কোন বাক্যে থাকলে এবং ব্যতীত, বা ছাড়া বিষয়টি বাক্যে নির্দিষ্ট অর্থে বোঝালে সে ক্ষেত্রে বাক্যটি "A" কিংবা "E" বচন করতে হবে। যেমন -পারদ ছাড়া সব ধাতু কঠিন।
L.F.- সকল ধাতু পারদ ছাড়া হয় কঠিন।(A-বচন)
L.F.- পারদ নয় কঠিন ধাতু।(E-বচন)
তবে ব্যতীত, ছাড়া বিষয়টি অনির্দিষ্ট অর্থে বোঝালে বাক্যটি "I" কিংবা "O" বচন করতে হবে।
যেমন- একটি ছাড়া সব ধাতু কঠিন। (বাক্য)
L.F.- কোন কোন ধাতু হয় কঠিন।(I-বচন)
L.F.- কোন কোন ধাতু নয় কঠিন।(O-বচন)
● বাক্যকে বচনে পরিণত করার সপ্তম নিয়ম-
কোন নির্দিষ্ট বিশিষ্ট পদ, সর্বনাম পদ, নাম পদ, গুণবাচক পদ, একব্যক্তিক পদ বিমূর্ত পদ ইত্যাদি এই জাতীয় পদ যুক্ত সদর্থক বাক্যটিকে "A" বচন করতে হয়।
আর নঞর্থক বাক্যে এই জাতীয় শব্দ থাকলে বাক্যটিকে "E" বচন করে নিতে হয়।
যেমন- হিমালয় সর্বোচ্চ পর্বত শৃঙ্গ। (বাক্য)
L.F.- হিমালয় হয়ে সর্বোচ্চ পর্বত শৃঙ্গ।(A-বচন)
সততা মহৎ গুণ। (বাক্য)
L.F.-সততা হয় মহৎ গুণ।(A-বচন)
তার সাহস নেই। (বাক্য)
L.F.-সে নয় সাহসী।(E-বচন)
● বাক্যকে বচনে পরিণত করার অষ্টম নিয়ম-
এক বাচক পদ কোন সদর্থক বাক্যে নির্দিষ্ট অর্থে বোঝালে বাক্যটি "A" বচন আর নঞর্থক বাক্যে থাকলে বাক্যটি "E" বচন করতে হয়।
তবে এক বাচক পদটি বাক্যে অনির্দিষ্ট অর্থে বোঝালে, সদর্থক বাক্যে "I" বচন এবং নঞর্থক বাক্যে "O" বচন করতে হয়।
যেমন -রাম এসেছে। (বাক্য)
L.F.-রাম হয় উপস্থিত।(A-বচন)
রাম আসেনি। (বাক্য)
L.F.- রাম নয় উপস্থিত।(E-বচন)
একজন এসেছে। (বাক্য)
L.F.- কোন কোন ব্যক্তি হয় উপস্থিত।(I-বচন)
একজন অতিথি আসেনি। (বাক্য)
L.F.- কোন কোন অতিথি নয় উপস্থিত ।(O-বচন)
● বাক্যকে বচনে পরিণত করার নবম নিয়ম-
ইচ্ছা, আদেশ, অনুরোধ ও বিস্ময় মূলক বাক্য গুলি সদর্থক হলে "A" বচন এবং নঞর্থক হলে "E" বচন করতে হয়।
যেমন- তুমি দীর্ঘজীবী হও। (বাক্য)
L.F.- তুমি দীর্ঘজীবী হও হয় আমার কামনা।(A-বচন)
বেরিয়ে যাও। (বাক্য)
L.F.- তোমার বেরিয়ে যাওয়া হয় আমার আদেশ।(A-বচন)
কি সুন্দর দৃশ্য! ( বাক্য )
L.F.- দৃশ্যটি হয় সুন্দর।(A-বচন)
বাইরে যেও না। (বাক্য)
L.F. - তোমার বাইরে যাওয়া নয় আমার কামনা।(E-বচন)
● বাক্যকে বচনে পরিণত করার দশম নিয়ম-
প্রশ্ন মূলক বাক্য থাকলে সেক্ষেত্রে প্রশ্নের উত্তর বাক্য যেটি হবে, সেটি সদর্থক"A" বচন এবং নঞর্থক "E" বচন করতে হবে।
যেমন- কে নিজের দেশকে ভালোবাসে না? (বাক্য)
উত্তর- সবাই নিজের দেশকে ভালোবাসে।
L.F.- সকল ব্যক্তি হয় স্বদেশপ্রেমী।(A-বচন)
আমরা কি সর্বজ্ঞ? (বাক্য)
উত্তর- আমরা সর্বজ্ঞ নই।
L.F.- আমরা নই সর্বজ্ঞ।(E-বচন)
● বাক্যকে বচনে পরিণত করার একাদশ নিয়ম-
অনেক বাক্যে পরিমাণের উল্লেখ থাকে না, সে ক্ষেত্রে বাক্যের অর্থ বুঝে বচন করতে হয়।
যেমন- ফুল সুন্দর। (বাক্য)
L.F.- সকল ফুল হয় সুন্দর।(A-বচন)
ফুল সুগন্ধি। (বাক্য )
L.F.-কোন কোন ফুল হয় সুগন্ধি।(I-বচন)
ধনীরা সৎ নয়। (বাক্য)
L.F.-কোন কোন ধনী নয় সৎ।(O-বচন)
● বাক্যকে বচনে পরিণত করার দ্বাদশ নিয়ম-
"আছে"-গুণটি জাতিবাচক উদ্দেশ্যের আবশ্যিক গুন বোঝালে বাক্যটি সদর্থকে "A" বচন এবং নঞর্থকে "E"বচন হয়।
আর "আছে" গুণটি জাতি বাচক উদ্দেশ্যের আকস্মিক গুন বোঝালে, বাক্যটি সদর্থকে "I" বচন এবং নঞর্থকে "O" বচন হয়।
যেমন- মানুষের বুদ্ধি আছে। (বাক্য)
L.F.- সকল মানুষ হয় বুদ্ধিশীল জীব।
সাদা হাতি আছে। (বাক্য)
L.F.- কোন কোন হাতি হয় সাদা।(I-বচন)
সাদা বাঘ নেই। (বাক্য)
L.F.-কোন বাঘ নয় সাদা।(E-বচন)
● বাক্যকে বচনে পরিণত করার ত্রয়োদশ নিয়ম-
কোন বাক্যে উদ্দেশ্য পদ স্পষ্ট না থাকলে সে ক্ষেত্রে বাক্যের অর্থ বুঝে বচনে উদ্দেশ্য পদটি উল্লেখ করতে হয়।
যেমন -বৃষ্টি পড়ছে। (বাক্য)
L.F.- আবহাওয়া হয় বৃষ্টি যুক্ত। (A-বচন)
এখন দিন। (বাক্য)
L.F.- বর্তমান সময় টি হয় দিন।(A-বচন)
● বাক্যকে বচনে পরিণত করার চতুর্দশ নিয়ম-
ব্যতীত কেউ নয়, ছাড়া আর কেউ নয়- এই জাতীয় শব্দ কোন বাক্যে থাকলে সে ক্ষেত্রে বাক্যের উদ্দেশ্য ও বিধেয় কে স্থান পরিবর্তন ঘটিয়ে "A" বচন করতে হয়।
যেমন- বন্ধু ছাড়া আর কেউ ক্ষতি করে না।
L.F.- সকল ক্ষতি কারী ব্যক্তি হয় বন্ধু।(A-বচন)
স্নাতক ছাড়া আর কেউ এ পদের যোগ্য নয়।
L.F.- সকল এই পদের যোগ্য ব্যক্তি হয় স্নাতক।(A-বচন)