📚শ্রীগঙ্গাস্তোত্রম্: কবি পরিচিতি, বিষয়বস্তু ও বঙ্গানুবাদ 📚
👉কবি পরিচিতি:
শ্রীশঙ্করাচার্য্য, যিনি আদি শঙ্করাচার্য্য নামে অধিক পরিচিত, ছিলেন অষ্টম শতাব্দীর একজন বিখ্যাত হিন্দু দার্শনিক ও অদ্বৈত বেদান্ত মতবাদের প্রধান প্রবক্তা। তাঁর মন্মসময় নিয়ে ঐতিহাসিকদের মধ্যে মতভেদ থাকলেও মোটামুটিভাবে অষ্টম শতকটিকেই তাঁর জন্মসময় হিসাবে মান্যতা দেওয়া হয়। বর্তমান কেরালা রাজ্যের এর্ণাকুলাম জেলার কলদি গ্রামে তাঁর জন্ম। শঙ্করাচার্য্যের পিতা ছিলেন শিবগুরু; আর মাতা শিবতারকা।
শ্রীশঙ্করাচার্য্যের রচনাবলীকে সাধারণত তিন ভাগে ভাগ কর হয়–ভাষ্য (সাহিত্যের ব্যাখ্যা); প্রকরণ গ্রন্থ (দার্শনিক রচনা) এব স্তোত্র (ভক্তিমূলক রচনা)। এই সংকলনে শ্রীশঙ্করাচার্য্যের গঙ্গাস্তোত্রটি নির্বাচিত করার প্রধান উদ্দেশ্য হল এটির ছন্দমাধুর্য। ভারতবর্ষের প্রধান নদী গঙ্গা আর এই নদীর উৎপত্তি সম্পরে অনেক পৌরানিক কাহিনি প্রচলিত আছে। গঙ্গানদীকে আমর দেবীজ্ঞানে পূজা করি গঙ্গাজলে আমরা পবিত্র হই। সৌ পুণ্যসলিলা নদীর প্রতি কবির ভক্তিনম্র প্রণাম।
👉 বিষয়বস্তু:
প্রসিদ্ধ দার্শনিক ও কবি শঙ্করাচার্য বিরচিত ‘গঙ্গাস্ত্রোত্রম্’ এ প্রথমেই
‘‘দেবি সুরেশ্ররি ভগবতি গঙ্গে’’
-গঙ্গাস্ত্রোত্রম্
ইত্যাদি উক্তির মাধ্যমে গঙ্গাদেবীর স্তুতি বা মাহাত্ম্য কীর্তন করা হয়েছে। সেই স্তুতিবাক্যগুলিকে নিম্ন সংক্ষেপে আলোচনা করা হল।
গঙ্গাদেবী দেবতার ঈশ্বরী, ষড়ৈশ্বর্যগুণের অধিকারিণী, ত্রিভুবনের রক্ষাকর্ত্রী, চঞ্চলতরঙ্গময়ী, শঙ্করমৌলিবিহারিণি অর্থাত মহাদেবের মাথায় বিচরণকারিণি। ভাগীরথীর মাহাত্ম্য কীর্তন করে বলা হয়েছে
‘‘তব জলমহিমা নিগমে খ্যাত:। নাহং জানে তব মহিমানং পাহি কৃপাময়ি মামজ্ঞানম্’’।
-গঙ্গাস্ত্রোত্রম্
অর্থাত তোমার জলের মহিমা বেদ ইত্যাদিতে প্রসিদ্ধ। কিন্তু শঙ্করাচার্য তা জানেন না। তাই জ্ঞানহীন শঙ্করকে রক্ষা করুন।
শ্রীহরির চরণপদ্ম থেকে নির্গতা শুভ্রতারঙ্গিনি দেবীর নিকট কবি আকৃতি জানিয়েছেন যে, তিনি যেন তার দুষ্কর্মের ভার দুর করেন ও সংসার সমুদ্র পার করে দেন।
‘‘দুরীকুরু মম দুস্কৃতিভারং কুরু কৃপায়া ভবসাগরপারম্।’’
-গঙ্গাস্ত্রোত্রম্
গঙ্গার নির্মল জল যিনি পান করেন তিনি সর্বশ্রেষ্ঠ স্থান লাভ করেন। গঙ্গাদেবীর ভক্তকেও যম কখনও স্পর্শ করতে পারে না। তিনি কখনও শোকগ্রস্ত হন না। কারণ তিনি কল্পলতার মতো ফল প্রদায়িনী।
গঙ্গাদেবী জহ্নমুনির কন্যা ও ভীষ্মদেবের মাতা এবং ত্রিভুবন শ্রেষ্ঠা। দেবরাজ ইন্দ্রও তাঁকে প্রণাম করেন। কবি গঙ্গাদেবীর কাছে নিজের রোগ, শোক, তাপ, পাপ সমস্ত দুর্মতি দুর করার প্রার্থনা করেছেন।
‘‘রোগং শোকং তাপং পাপং হর মে ভববতি কুমতিকলাপম্।’’
-গঙ্গাস্ত্রোত্রম্
আরও বলা হয়েছে আনন্দরূপিনি গঙ্গার তীরে যিনি বাস করেন তিনি বৈকুষ্ঠপুরীতে বাস করার আনন্দ অনুভব করেন।
👉 সম্পূর্ণ টেক্সট:
देवि सुरेश्वरि भगवति गङ्गे त्रिभुवनतारिणि तरलतरङ्गे ।
शङ्करमौलिविहारिणि विमले मम मतिरास्तां तव पदकमले ॥१॥
গঙ্গাস্তোত্রম্ পদ্যাংশ শ্লোক -১(বাংলা উচ্চারণ):
দেবি সুরেশ্বরি ভগবতি গঙ্গে ত্রিভুবনতারিণি তরলতরঙ্গে।
শঙ্করমৌলিবিহারিণি বিমলে মম মতিরাস্তাং তব পদ কমলে।
অন্বয় ও শব্দার্থঃ-
দেবি (হে দেবি) সুরেশ্বরি (হে দেবতাদেরর দেবী) ভগবতি (হে ভগবতি) গঙ্গে (গঙ্গা) ত্রিভুতারিণি (ত্রিভুবনের ত্রাণকর্ত্রী) তরলতরঙ্গে (চঞ্চল তরঙ্গা যুক্তা)। শঙ্কর (শিবের) মৌলি (মস্তকে) বিহারিণি (বিচরণ কারিণি) বিমলে (নির্মলা) মম (আমার) মতি: (মন) আস্তাং (থাকুক) তব (তোমার) পদকমলে (পদকমলে)।
বঙ্গানুবাদ:
भागीरथि सुखदायिनि मातस्तव जलमहिमा निगमे ख्यातः ।
नाहं जाने तव महिमानं पाहि कृपामयि मामज्ञानम् ॥२॥
গঙ্গাস্তোত্রম্ পদ্যাংশ শ্লোক -২(বাংলা উচ্চারণ):
ভাগীরথি সুখদায়িনি মাত: তব জলমহিমা নিগমে খ্যাত:।
নাহং জানে তব মহিমানং পাহি কৃপাময়ি মামজ্ঞানম্।
অন্বয় ও শব্দার্থঃ-
ভাগীরথি (হে ভাগীরথি) সুখদায়িনি (হে সুখদাত্রী) মাত: (মা) তব (তোমার) জলমহিমা (জলের মহিমা) নিগমে (বেদাদি শাস্ত্রে) খ্যাত: (বিখ্যাত)। ন (না) অহং (আমি) জানে (জানি) তব (তোমার) মহিমানং (মহিমা) পাহি (রক্ষা করো) কৃপাময়ি (হে কৃপাময়ি) মাম্ (আমাকে) অজ্ঞানম্ (জ্ঞাহীনকে)।
বঙ্গানুবাদ:
হে ভাগীরথি, সুখদাত্রী মা, তোমার (গঙ্গা) জলের মহিমা বেদাদি শাস্ত্রে বিখ্যাত। আমি (শঙ্করাচার্য) তোমার মহিমা জানি না, হে কৃপাময়ি, আমার (শঙ্করাচার্য) মতো জ্ঞাহীনকে রক্ষা করো।
हरिपदपाद्यतरङ्गिणि गङ्गे हिमविधुमुक्ताधवलतरङ्गे ।
दूरीकुरु मम दुष्कृतिभारं कुरु कृपया भवसागरपारम् ॥३॥
গঙ্গাস্তোত্রম্ পদ্যাংশ শ্লোক-৩(বাংলা উচ্চারণ):
হরিপাদপদ্মতরঙ্গিনি গঙ্গে হিমবিধুমুক্তা ধবলতরঙ্গে।
দুরীকুরু মম দুষ্কৃতিভারং কুরু কৃপয়া ভবসাগরপারম্।
অন্বয় ও শব্দার্থঃ-
হরিপাদপদ্ম (শ্রী হরির চরনপদ্মে),তরঙ্গিনি(তরঙ্গযুক্তা),গঙ্গে(হে গঙ্গা),হিমবিধুমুক্তা(বরফ, চন্দ্র ও মুক্তা),ধবলতরঙ্গে(শুভ্র তরঙ্গযুক্ত) মম(আমার),দুঃস্কৃতিভারম (অপকর্মের ভার),দূরীকুরু(দূর কর) কুরু কৃপয়া(কৃপা করে ) ভবসাগরপারম্(সংসার সমুদ্র পার)।
বঙ্গানুবাদঃ-
শ্রী হরির চরণপদ্ম থেকে নির্গত হে মা গঙ্গা, তুমি বরফ,চন্দ্র ও মুক্তার মতো শুভ্র তরঙ্গযুক্তা। তুমি আমার সমস্ত অপকর্ম দূর করো। দয়া করে আমাকে সংসার সমুদ্র থেকে পার করো।
तव जलममलं येन निपीतं परमपदं खलु तेन गृहीतम् ।
मातर्गङ्गे त्वयि यो भक्तः किल तं द्रष्टुं न यमः शक्तः ॥४॥
গঙ্গাস্তোত্রম্ পদ্যাংশ শ্লোক-৪(বাংলা উচ্চারণ):
তব জলমমলং যেন নিপীতং পরমপদং খলু তেন গৃহীতম্।
মাতর্গঙ্গে ত্বয়ি যো ভক্তঃ কিল তং দ্রষ্টুং ন যমঃ শক্তঃ।
অন্বয় ও শব্দার্থঃ-
তব(তোমার), জলম্(জল) অমলম্(পবিত্রজল) যেন(যার দ্বারা) নিপীতং(পান করা হয়েছে) পরমপদং(শ্রেষ্ঠ স্থান ) খলু(নিশ্চিৎভাবে),তেন(তার দ্বারা) গৃহিতভ(গ্রহন করা হয়েছে) মাতঃ(হে মা) গঙ্গে(হে গঙ্গা) ত্বয়ি(তোমাকে) যো(যে) ভক্ত (ভক্তি করে) ত্বং(তাকে) কিল(অবশ্যই) যমঃ(যমরাজ) দ্রষ্টুং(দেখতে) ন শক্তঃ( পারে না)।
বঙ্গানুবাদ-
তোমার পবিত্র জল যে পান করেছে নিশ্চিতভাবে সেই ব্যক্তি শ্রেষ্ঠ স্থান লাভ করেছে। হে মা গঙ্গা যে তোমাকে ভক্তি করে যমরাজও তাকে স্পর্শ করতে পারে না।
पतितोद्धारिणि जाह्नवि गङ्गे खण्डितगिरिवरमण्डितभङ्गे ।
भीष्मजननि हे मुनिवरकन्ये पतितनिवारिणि त्रिभुवनधन्ये ॥५॥
গঙ্গাস্তোত্রম্ পদ্যাংশ শ্লোক-৫(বাংলা উচ্চারণ):
পতিতোদ্ধারিনী জাহ্নবি গঙ্গে খন্ডিত গিরিবরমন্ডিত ভঙ্গে।
ভীষ্মজননী হে মুনিবরকন্যে পতিতনিবারিনী ত্রিভুবনধন্যে।।
অন্বয় ও শব্দার্থঃ-
পতিত উদ্ধারিনী(পতিতদের উদ্ধারকারিনী) জাহ্নবি(জাহ্নবি) গঙ্গে(হে গঙ্গা) খন্ডিত(খন্ড খন্ড) গিরিবর(হিমালয়) মন্ডিত(শোভিত) ভঙ্গে(চলার ভঙ্গিমায়/ তরঙ্গ) ভীষ্মজননী(ভীষ্মদেবের মাতা) হে মুনিবর কন্যে(হে মুনি শ্রেষ্ঠ জহ্নুর কন্যা) পতিতনিবারিনী(পতিতদের পারকারিনী) ত্রিভুবন ধন্যে (তিন ভুবনের প্রশংসীতা)।
বঙ্গানুবাদঃ-
হে গঙ্গা! তুমি পতিতদের উদ্ধারকারিণী হে জাহ্নবি হিমালয়কে খন্ড খন্ড করে তুমি তরঙ্গ আকারে শোভিত। ভীষ্মমাতা, হে মুনি শ্রেষ্ঠ জহ্নুর কন্যা তুমি পতিতদের পারকারিনী। তুমি ত্রিভুবনের প্রশংসিতা।
कल्पलतामिव फलदां लोके प्रणमति यस्त्वां न पतति शोके ।
पारावारविहारिणि गङ्गे विमुखयुवतिकृततरलापाङ्गे ॥६॥
গঙ্গাস্তোত্রম্ পদ্যাংশ শ্লোক-6(বাংলা উচ্চারণ):
কল্পলতামিব ফলদাং লোকে প্রণমতি যস্ত্বাং ন পততি শোকে
পারাবারবিহারিনি গঙ্গে বিমুখযুবতিকৃততরলাপাঙ্গে।
অন্বয় ও শব্দার্থঃ-
কল্পলতামিব(কল্প বৃক্ষের মতো) ফলদাং (ফলদান করো) লোকে(পৃথিবীতে)। প্রণমতি(প্রণাম করে)। যঃ(যে) ত্বাম্(তোমাকে) ন পততি(পতিত হয়না) শোকে(শোকে) পারাবার বিহারিনি(সমুদ্রে ভ্রমণকারিনী) গঙ্গে(হে গঙ্গা) বিমুখ যুবতি(যুবতিগন মুখ ফিরিয়ে) তরলা অপাঙ্গে(চঞ্চল দৃষ্টি নিক্ষেপ) কৃত(করে)।
বঙ্গানুবাদঃ-
হে গঙ্গা! তুমি কল্পলতার মতো পৃথিবীতে ফল দান করো। তোমাকে যে প্রণাম করে সেই ব্যক্তি কখনও শোক গ্রস্ত হয় না। হে দেবি! সমুদ্রে ভ্রমণ কারী তোমার প্রতি যুবতিগন চঞ্চল দৃষ্টি নিক্ষেপ করে।
तव चेन्मातः स्रोतःस्नातः पुनरपि जठरे सोऽपि न जातः ।
नरकनिवारिणि जाह्नवि गङ्गे कलुषविनाशिनि महिमोत्तुङ्गे ॥७॥
গঙ্গাস্তোত্রম্ পদ্যাংশ শ্লোক-৭(বাংলা উচ্চারণ):
তব কৃপয়া চেন্মাতঃ স্রোতঃ স্নাতঃ পুনরপি জঠরে সঃ-অপি ন জাতঃ।
নরকনিবারিনি জাহ্নবি গঙ্গে কলুষবিনাশিনি মহিমোতুঙ্গে।।৭
অন্বয় ও শব্দার্থঃ-
মাতঃ( হে মা) তব কৃপয়া(তোমার কৃপায়) স্রোত(স্রোতে/জলে) চেৎ(যদি) স্নাতঃ (স্নান করে)। পুনরপি(পুনরায়) সোঅপি(সেই ব্যাক্তি) জঠরে(মাতৃগর্ভে) ন জাতঃ( জন্মগ্রহন করে না) জাহ্নবি(হে জাহ্নবি) গঙ্গে (হে গঙ্গা) নরক নিবারিনি(নরক থেকে নিবারন কারিনী) কলুষবিনাশিনি(পাপ বিনাশ কারিনী) মহিমা-উত্তুঙ্গে(মহিমাতে উচ্চস্থানে প্রতিষ্ঠাতা)।
বঙ্গানুবাদঃ-
হে মা গঙ্গা! কেও যদি তোমার স্রোতে স্নান করে সেই ব্যক্তি পুনরায় মাতৃগর্ভে জন্মগ্রহণ করেন না। হে জাহ্নবি তুমি নরক নিবারণী। হে গঙ্গা তুমি পাপ বিনাশিনী। মহিমাতে তুমি উচ্চস্থানে প্রতিষ্ঠাতা।
पुनरसदङ्गे पुण्यतरङ्गे जय जय जाह्नवि करुणापाङ्गे ।
इन्द्रमुकुटमणिराजितचरणे सुखदे शुभदे भृत्यशरण्ये ॥८॥
গঙ্গাস্তোত্রম্ পদ্যাংশ শ্লোক-৮(বাংলা উচ্চারণ):
পুনরসদঙ্গেঃ পুণ্যতরঙ্গে জয় জয় জাহ্নবি করুণাপাঙ্গে।
ইন্দ্রমুকুটমনিরাজিত চরনে সুখদে শুভদে ভৃত্যশরণ্যে।।৮
অন্বয় ও শব্দার্থঃ-
পুনরসদঙ্গে (উজ্জ্বল অঙ্গযুক্তা) পুণ্যতরঙ্গে(পবিত্র তরঙ্গাযুক্তা)। করুণা অপাঙ্গে(কৃপাদৃষ্টিময়ি)।ইন্দ্র মুকুটমনি( ইন্দ্রের মুকুটের মনি) রাজিত(শোভিত) চরণ(পায়ে) সুমদে(সুখদাত্রী) শুভদে(মঙ্গলকারিনী) ভৃত্যশরন্যে(ভৃত্যের আশ্রয় রুপিনী) জাহ্নবি(হে জাহ্নবী) জয় জয় (জয় হোক,জয় হোক)।
বঙ্গানুবাদঃ-
উজ্জল অঙ্গযুক্তা, পবিত্র তরঙ্গ যুক্তা, হে জাহ্নবী! তুমি কৃপা দৃষ্টি ময়ি। ইন্দ্রের মুকুটমণি তোমার চরণে শোভিত। তুমি সুখ দায়িনী,তুমি মঙ্গলকারিণী। তুমি ভৃত্যের আশ্রয়রূপিনী।তোমার জয় হোক, জয় হোক।
रोगं शोकं तापं पापं हर मे भगवति कुमतिकलापम् ।
त्रिभुवनसारे वसुधाहारे त्वमसि गतिर्मम खलु संसारे ॥९॥
গঙ্গাস্তোত্রম্ পদ্যাংশ শ্লোক-৯(বাংলা উচ্চারণ):
রোগং শোকং তাপং পাপং হর মে ভগবতি কুমতিকলাপম্।
ত্রিভুবনসারে বসুধাহারে ত্বমসি গতির্মম খলু সংসারে।।৯
অন্বয় ও শব্দার্থঃ-
ভগবতি(হে ভগবতি) মে(আমার) রোগং(রোগ) শোকং(শোক) তাপং(মনস্তাপ) পাপং(পাপ) কুমতিকলাপম্(সমস্ত দুর্মতি) হর(দুর কর) ত্রিভুবনসারে(তিন ভুবনের শ্রেষ্ঠা) বসুধাহারে( পৃথিবীর মালা স্বরূপ) সংসারে(জগৎ সংসারে) ত্বম্(তুমি) খলু(নিশ্চিতভাবে) মম(আমার) গতি(আশ্রয়) অসি(হয়)।
বঙ্গানুবাদঃ-
হে ভগবতি! তুমি আমার রোগ,শোক, তাপ, পাপ সমস্ত দুর্মতি দূর কর। হে ত্রিভুবন শ্রেষ্ঠী পৃথিবীর কন্ঠমালা স্বরূপা হে দেবী গঙ্গা! এই জগত সংসারে তুমি আমার একমাত্র আশ্রয়।
अलकानन्दे परमानन्दे कुरु करुणामयि कातरवन्द्ये ।
तव तटनिकटे यस्य निवासः खलु वैकुण्ठे तस्य निवासः ॥१०॥
গঙ্গাস্তোত্রম্ পদ্যাংশ শ্লোক-১০(বাংলা উচ্চারণ):
অলকানন্দে পরমানন্দে কুরু করুণাময়ি কাতরবন্দে।
তব তটনিকটে যস্য নিবাসঃ খলু বৈকুন্ঠ্যে তস্য নিবাসঃ।।১০
অন্বয় ও শব্দার্থঃ-
অলকানন্দে(হে অলকানন্দ) পরমানন্দে(পরম আনন্দরূপিনী) কাতর বন্দে(কাতর ব্যাক্তিদের দ্বারা বন্দিতা) ময়ি(আমার প্রতি) করুনাম্(করুনা) কুরু(কর) তব(তোমার) তটনিকটে(তীরের কাছে) যস্য (যার) নিবাস(বাসভূমি)খলু(নিশ্চিতভাবে) তস্যা(তার)বৈকুন্ঠে( স্বর্গে ) নিবাস( বসবাস)।
বঙ্গানুবাদঃ-
হে অলকানন্দা, হে পরমানন্দা, তুমি দীন-দরিদ্রদের দ্বারা বন্দিতা। তুমি আমার প্রতি কৃপা করো। তোমার তীরের কাছে যার বসবাস সেই ব্যক্তি নিশ্চিতভাবে স্বর্গ সুখ লাভ করে।
..............................