📚সপ্তম শ্রেণির ভূগোল:অধ্যায়ভিত্তিক প্রশ্নোত্তর:অধ্যায়-১: পৃথিবীর পরিক্রমণ(প্রশ্নের মান-১,২,৩)📚
✍️প্রশ্নের মান-১:
1. আমরা পৃথিবী থেকে ছিটকে যায় না, পৃথিবীর উপরই থাকি। পৃথিবীর আকর্ষণ বল হল--------।
উত্তর: মধ্যাকর্ষণ বল।
2. মহাকর্ষ বল কাকে বলে?
উত্তর : মহাবিশ্বে সব বস্তুই পরস্পরকে আকর্ষণ করে বা নিজের দিকে টানে। এইটাকেই মহাকর্ষ বল বলে।
3. সূর্য পৃথিবীর তুলনায় কত গুন বড়?
উত্তর: ১৩ লক্ষ গুন বড়।
4. পৃথিবীর সবচেয়ে কাছের নক্ষত্র বা তারা কোনটি?
উত্তর: সূর্য হলো পৃথিবীর সবচেয়ে কাছের নক্ষত্র বা তারা।
5. আমাদের ছায়াপথের নাম কি?
উত্তর: আমাদের ছায়াপথের নাম আকাশগঙ্গা।
6. পৃথিবীর কয়টি গতি ও কি কি?
উত্তর: পৃথিবীর দুটি গতি। যথা: (i) আহ্নিক গতি বা আবর্তন গতি। ও (ⅱ) বার্ষিক গতি বা পরিক্রমণ গতি।
7. পৃথিবীর অক্ষ কাকে বলে?
উত্তর: পৃথিবীর যে কাল্পনিক রেখার চারি দিকে আবর্তন করে তাকেই পৃথিবীর অক্ষ বা Earth's Axis বলে।
৪. পৃথিবীর কয়েকটি মেরু ও কি কি?
উত্তর: পৃথিবীর দুটি মেরু। যথা: উত্তর মেরু বা সুমেরু ও দক্ষিণ মেরু বা কুমেরু।
9. নিরক্ষরেখার আরেক নাম কি?
উত্তর: নিরক্ষরেখার আরেক নাম বিষুবরেখা।
10. আমাদের দেশ ভারত বর্ষ কোন গোলার্ধে অবস্থিত?
উত্তর: আমাদের দেশ ভারত বর্ষ উত্তর গোলার্ধে অবস্থিত।
11. পৃথিবী কোন দিক থেকে কোন দিকে সূর্যকে পরিক্রমণ করে?
উত্তর: পৃথিবী পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে অর্থাৎ ঘড়ির কাঁটার বিপরীত দিকে সূর্যকে পরিক্রমণ করে।
12. পৃথিবী কোন দিক থেকে কোন দিকে নিজের অক্ষের চারদিকে আবর্তন করে?
উত্তর: পৃথিবী নিজের অক্ষের চারদিকে পশ্চিম থেকে পূর্বে অর্থাৎ ঘড়ির কাঁটার বিপরীতে আবর্তন করে।
13. পৃথিবীর বার্ষিক গতি বা পরিক্রমণ গতির বেগ কত?
উত্তর: পৃথিবীর বার্ষিক গতি বা পরিক্রমণ গতির বেগ প্রতি সেকেন্ডে প্রায় 30 কিলোমিটার।
14. মুক্তি বেগ কাকে বলে?
উত্তর: কোন বস্তুকে ন্যূনতম যে বেগে আকাশের দিকে ছুড়ে দিলে তা সেই গ্রহের মধ্যাকর্ষণ আকর্ষণ কাটিয়ে বাইরে চলে যেতে পারে, সেই ব্যাংকেই কই গ্রহের মুক্তিবেগ বলে।
15. পৃথিবীর মুক্তিবেগ বা escape velocity কত?
উত্তর: পৃথিবীর মুক্তি বেগ প্রতি সেকেন্ডে ১১.২ কিমি।
16. কৃত্রিম উপগ্রহ কে নূন্যতম কত বেগে উৎক্ষেপণ করা হয়?
উত্তর: কৃত্রিম উপগ্রহ কে ন্যূনতম ১১.২ কিমি/ সেকেন্ড অর্থাৎ মুক্তিবেগে এর উৎক্ষেপণ করা হয়।
17. পৃথিবীর কক্ষপথ কাকে বলে?
উত্তর: পৃথিবী যে পথে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে সেটাই হলো পৃথিবীর কক্ষপথ।
18. পৃথিবীর কক্ষতল কাকে বলে?
উত্তর: পৃথিবীর কক্ষপথ মহাশূন্যে যে কাল্পনিক সমতলে অবস্থিত তাকেই পৃথিবীর কক্ষতল বলে।
19. পৃথিবীর কক্ষপথের আকৃতি কেমন?
উত্তর: পৃথিবীর কক্ষপথ উপবৃত্তাকার।
20. সূর্য পৃথিবীর কক্ষতলের কোথায় অবস্থিত?
উত্তর: সূর্য পৃথিবীর কক্ষতল এর ফোকাস বা নাভিতে অবস্থিত।
21. কে সর্বপ্রথম গ্রহদের গতি সংক্রান্ত সূত্র প্রণয়ন করেন?
উত্তর: বিজ্ঞানী কেপলার।
22. কেপলারের প্রথম সূত্রটি লেখ কি?
উত্তর: কেপলারের প্রথম সূত্র: প্রতিটি গ্রহ উপবৃত্তাকার কক্ষপথে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে এবং সূর্য ওই উপবৃত্তের একটি ফোকাসে থাকে।
23. পৃথিবী সূর্য প্রদক্ষিণের সময় সূর্য থেকে পৃথিবীর দূরত্ব সবসময়
উত্তর: সমান থাকে না।
24. অপসূর অবস্থান বা Aphelion কাকে বলে?
উত্তর: 4 জুলাই সূর্য থেকে পৃথিবীর দূরত্ব সবচেয়ে বেশি হয়, প্রায় 15 কোটি কুড়ি লক্ষ কিমি। একে পৃথিবীর অপসূর অবস্থান বলা হয়।
25. অনুসুর অবস্থান বা perihelion কাকে বলে?
উত্তর: ৪ জানুয়ারি সূর্য থেকে পৃথিবীর দূরত্ব সবচেয়ে কম হয়, প্রায় 14 কোটি 70 লক্ষ কিমি। একে পৃথিবীর অনুসুর অবস্থান বলা হয়।
26. হল প্রাকৃতিক ঘড়ি।
উত্তর: সূর্য হলো প্রাকৃতিক ঘড়ি।
27. নিজের অক্ষকে আবর্তন করতে পৃথিবীর কত সময় লাগে?
উত্তর : নিজের অক্ষ কে আবর্তন করতে পৃথিবীর 23 ঘন্টা 46 মিনিট 4 সেকেন্ড অর্থাৎ প্রায় 24 ঘন্টা সময় লাগে।
28. সূর্যকে একবার প্রদক্ষিণ করতে পৃথিবীর কত সময় লাগে?
উত্তর: সূর্যকে একবার প্রদক্ষিণ করতে পৃথিবীর 365 দিন 5 ঘন্টা 48 মিনিট 46 সেকেন্ড অর্থাৎ প্রায় 365 দিন 6 ঘন্টা সময় লাগে।
29. চান্দ্রমাস কাকে বলে?
উত্তর: পৃথিবীর উপগ্রহ চাঁদ পৃথিবীতে প্রায় 28 দিনে প্রদক্ষিণ করে। এই সময়টাকে চান্দ্রমাস বলে।
30. সৌর বছর কাকে বলে?
উত্তর: পৃথিবী সূর্যকে প্রায় 365 দিনে একবার প্রদক্ষিণ করে। এই সময়টাকে সৌর বছর বলে।
31. পরিক্রম গতির আরেক নাম বার্ষিক গতি কেন?
উত্তর : সূর্যকে একবার পরিক্রমণ করতে পৃথিবীর 365 দিন সময় লাগে। 365 দিন সময়কে এক বছর (বর্ষ) বলে। তাই পরিক্রম গতির আরেক নাম বার্ষিক গতি।
32. কখন ছায়ার দৈর্ঘ্য সবচেয়ে ছোট হয়?
উত্তর: দুপুরে ছায়ার দৈর্ঘ্য সবচেয়ে ছোট হয়।
33. কখন ছায়ার দৈর্ঘ্য সবচেয়ে লম্বা হয়?
উত্তর: সকালে ও বিকালে ছায়ার দৈর্ঘ্য সবচেয়ে লম্বা হয়।
34. কোন তারিখটা প্রতিবছর ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় না?
উত্তর: 29 ফেব্রুয়ারি তারিখটা প্রতিবছর ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় না।
37. সূর্যে প্রতি মুহূর্তে কোন গ্যাস কোন গ্যাসে রূপান্তরিত হয়।
উত্তর : সূর্যে প্রতি মুহূর্তে হাইড্রোজেন গ্যাস হিলিয়াম গ্যাসে রূপান্তরিত হয়।
38. সূর্যের শক্তির কত অংশ আলো উত্তাপ রূপে প্রতি মুহূর্তে পৃথিবীতে এসে পৌঁছায়?
উত্তর: সূর্যের শক্তির 200 কোটি ভাগের 1 ভাগ আলো উত্তাপ রূপে প্রতি মুহূর্তে পৃথিবীতে এসে পৌঁছায়।
39. পৃথিবী তার কক্ষ তলের সঙ্গে কত ডিগ্রি কোণে হেলে থাকে?
উত্তর : পৃথিবী তার কক্ষ তলের সঙ্গে 66½° কোণে হেলে থাকে।
40. ভাবে সূর্যরশ্মি পড়লে মাটি তাড়াতাড়ি উত্তপ্ত হয়।
উত্তর : লম্বভাবে সূর্যরশ্মি পড়লে মাটি তাড়াতাড়ি উত্তপ্ত হয়।
41.---------ভাবে সূর্যরশ্মি পড়লে মাটি ধীরেধীরে উত্তপ্ত হয়।
উত্তর : তীর্যকভাবে সূর্যরশ্মি পড়লে মাটি ধীরে ধীরে উত্তপ্ত হয়।
42. কোন দিনটিকে মহাবিষুব এবং কোন দিনটিকে জলবিষুব বলে?
উত্তর: 21 শে মার্চ দিনটিকে মহাবিষুব বলে এবং 23 সেপ্টেম্বর দিনটিকে জলবিষুব বলে।
43. কোন কোন দিন উত্তর ও দক্ষিণ গোলার্ধে দিনরাত্রি সমান হয়?
উত্তর: 21 শে মার্চ বা মহাবিষুব ও 23 সেপ্টেম্বর বা জলবিষুব এর দিন উত্তর ও দক্ষিণ গোলার্ধে দিনরাত্রি সমান হয়।
44. কোন দিনটিকে কর্কট সংক্রান্তি বলে?
উত্তর: 21 জুন তারিখকে কর্কট সংক্রান্তি বলে।
45. কোন তারিখে উত্তর গোলার্ধে সবচেয়ে বড় দিন ও দক্ষিণ গোলার্ধে সবচেয়ে বড় রাত হয়?
উত্তর: 21 জুন তারিখে উত্তর গোলার্ধে সবচেয়ে বড় দিন ও দক্ষিণ গোলার্ধে সবচেয়ে বড় রাত হয়।
46. কোন তারিখটিকে মকর সংক্রান্তি বলে?
উত্তর: 22 ডিসেম্বর তারিখটিকে মকরসংক্রান্তি বলে।
47. কোন তারিখে দক্ষিণ গোলার্ধে সবচেয়ে বড় দিন ও উত্তর গোলার্ধে সবচেয়ে বড় রাত হয়?
উত্তর: 22 ডিসেম্বর তারিখে দক্ষিণ গোলার্ধে সবচেয়ে বড় দিন ও উত্তর গোলার্ধে সবচেয়ে বড় রাত হয়।
48. সূৰ্যেৰ উত্তরায়ন এর শেষ দিন কোনটি?
উত্তর: 21 জুন সূর্যের উত্তরায়ন এর শেষ দিন।
49. সূর্যের দক্ষিণায়ন এর শেষ দিন কোনটি?
উত্তর: 22 ডিসেম্বর সূর্যের দক্ষিণায়নের শেষ দিন।
50. কোন ঋতুতে পুকুর গুলো জলে ভর্তি থাকে?
উত্তর: বর্ষা ঋতুতে পুকুর গুলো জলে ভর্তি থাকে।
51. কোন ঋতুতে বন্যার সম্ভাবনা থাকে?
উত্তর : বর্ষা ঋতুতে বন্যার সম্ভাবনা থাকে।
52. সূর্যের উত্তরায়ন কাকে বলে?
উত্তর: 22 ডিসেম্বর থেকে 21 জুন পর্যন্ত ছয় মাস ধরে সূর্যের উত্তরমুখী আপাতগতিকে সূর্যের উত্তরায়ন বলে।
53. সূর্যের দক্ষিণায়ন কাকে বলে?
উত্তর: 21 জুন থেকে 22 ডিসেম্বর পর্যন্ত ছয় মাস ধরে সূর্যের দক্ষিণমুখী আপাতগতিকে দক্ষিণায়ন বলে।
54. কি কারনে ঋতু পরিবর্তন হয়?
উত্তর: পৃথিবীর উপবৃত্তাকার কক্ষপথে ও পৃথিবীর হেলানো অক্ষের জন্য ঋতু পরিবর্তন হয়। কারণে ঋতু শারবতা ইরা
55. কি কারনে দিন রাত ছোট বড় হয়?
উত্তর: পৃথিবীর উপবৃত্তাকার কক্ষপথে ও পৃথিবীর হেলানো অক্ষের জন্য দিন রাত ছোেট বড়।
57. বিষুব কথার অর্থ কি?
উত্তর: বিষুব কথার অর্থ হল সমান দিন ও রাত্রি।
58. কোন ঋতুতে খুব কোকিল ডাকে?
উত্তর : বসন্ত ঋতুতে খুব কোকিল ডাকে।
59. উত্তর গোলার্ধে কোন ঋতুতে সবচেয়ে বড় দিন হয়?
উত্তর : গ্রীষ্মকালে উত্তর গোলার্ধে সবচেয়ে বড় দিন হয়।
60. 25 ডিসেম্বর বড়দিনে দক্ষিণ গোলার্ধে গরম না ঠান্ডা?
উত্তর: 25 ডিসেম্বর বড়দিনের দক্ষিণ গোলার্ধে গরম।
61. অরোরা বোরিয়ালিস কি?
উত্তর : উত্তর গোলার্ধের মেরুজ্যোতি কে সুমেরু প্রভা বা অরোরা বোরিয়ালিস বলে।
62. অরোরা অস্ট্রালিস কি?
উত্তর : দক্ষিণ গোলার্ধের মেরু জ্যোতিকে কুমেরু প্রভা বা অরোরা অস্ট্রালিস বলে।
63. পৃথিবীর কোথায় সারাবছর দিন রাত সমান থাকে?
উত্তর: নিরক্ষরেখায় সারাবছর দিন রাত সমান থাকে।
64. কোন গ্রহের অক্ষ কক্ষপথের সমতলে অবস্থিত?
উত্তর: ইউরেনাসের অক্ষ কক্ষপথের সমতলে অবস্থিত।
65. কোন গ্রহের অক্ষ কক্ষের সঙ্গে লম্বভাবে অবস্থিত?
উত্তর: বৃহস্পতির অক্ষ তার কক্ষের সঙ্গে লম্বভাবে অবস্থিত।
66. মেরুপ্রভার অপর নাম কি?
উত্তর: মেরুপ্রভা অপর নাম অরোরা।
67. কোন কোন ঋতুতে বেশিরভাগ দিন নীল আকাশ দেখা যায়?
উত্তর: শরৎ ও বসন্ত ঋতুতে বেশিরভাগ দিন নীল আকাশ দেখা যায়।
68. কোন ঋতুতে মাঠের মাটি ফেটে যায়?
উত্তর: গ্রীষ্ম ঋতুতে মাঠের মাটি ফেটে যায়।
✍️ প্রশ্নের মান-২:
1. মহাকর্ষ কী?
উত্তর: এই মহাবিশ্বে প্রতিটি বস্তুই পরস্পর পরস্পরকে আকর্ষণ করে বা নিজের দিকে টানতে থাকে, একেই মহাকর্ষ বলে। 1687 খ্রিস্টাব্দে বিজ্ঞানী স্যার আইজাক নিউটন মহাকর্ষ সূত্রটি আবিষ্কার করেন।
2. মাধ্যাকর্ষণ শক্তি কাকে বলে?
উত্তর : যে আকর্ষণ বলের দ্বারা পৃথিবী তার উপরিস্থিত সমস্ত বস্তু বা পদার্থকে নিজের কেন্দ্রের দিকে আকর্ষণ করে, তাকে মাধ্যাকর্ষণ শক্তি বলে। একারণেই কোনো বস্তুকে ওপরের দিকে ছুঁড়লে তা পুনরায় পৃথিবীতে ফিরে আসে।
3. মুক্তিবেগ কাকে বলে? অথবা, কোনো বস্তুকে প্রতি সেকেন্ডে 11.2 কিমি বেগে ওপরের দিকে ছুঁড়লে সেটা আর নীচে পড়ে না কেনো?
উত্তর:কোনো বস্তু প্রতি সেকেন্ডে 11.2 কিমি গতিবেগে ওপরের দিকে ধাবমান হলে তা পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ কাটিয়ে মহাশূন্যে চলে যেতে পারে, একে মুক্তিবেগ (Escape Velocity) বলে। ওই বস্তু পৃথিবীতে ফিরে না এসে মহাকাশে পৃথিবীর চারপাশে ঘুরতে থাকবে।
যেমন – কৃত্রিম উপগ্রহ, মহাকাশযান, রকেট এই মুক্তিবেগের সাহায্যে মহাকাশে পৌঁছায়।
4. অপসূর অবস্থান বা Aphelion কাকে বলে?
উত্তর: 4 জুলাই সূর্য থেকে পৃথিবীর দূরত্ব সবচেয়ে বেশি হয়, প্রায় 15 কোটি কুড়ি লক্ষ কিমি। একে পৃথিবীর অপসূর অবস্থান বলা হয়।
5. অনুসুর অবস্থান বা perihelion কাকে বলে?
উত্তর : 3 জানুয়ারি সূর্য থেকে পৃথিবীর দূরত্ব সবচেয়ে কম হয়, প্রায় 14 কোটি 70 লক্ষ কিমি। একে পৃথিবীর অনুসুর অবস্থান বলা হয়।
6. পরিক্রম গতির আরেক নাম বার্ষিক গতি কেন?
উত্তর : সূর্যকে একবার পরিক্রমণ করতে পৃথিবীর 365 দিন সময় লাগে। 365 দিন সময়কে এক বছর (বর্ষ) বলে। তাই পরিক্রম গতির আরেক নাম বার্ষিক গতি।
7. অধিবর্ষ বা লিপ ইয়ার কাকে বলে?
উত্তর : আমাদের ক্যালেন্ডারের একবছর আর পৃথিবীর একবার সূর্যকে পরিক্রমণ এর সময় এক হওয়া উচিত। কিন্তু হিসাবের সুবিধার জন্য 365 দিনে এক বছর ধরা হয়। ফলে প্রতিবছর 5 ঘন্টা 48 মিনিট 46 সেকেন্ড বাড়তি সময় থেকে যায়। এই বাড়তি সময়ের হিসাব ঠিক রাখার জন্য প্রতি চার বছর অন্তর একটা পুরো দিন যোেগ করা হয় ক্যালেন্ডারে। ওই একদিন ফেব্রুয়ারি মাসের সঙ্গে যোগ করে মাসটা হয় 29 দিনের, আর বছরটা হয় 366 দিনের। তাই 366 দিনের বছরকে বলে অধিবর্ষ বা লিপ ইয়ার।
7. সূর্যের দৈনিক আপাত গতি কাকে বলে?
উত্তর: পৃথিবীর পশ্চিম দিক থেকে পূর্ব দিকে আবর্তন করে বলে আপাতদৃষ্টিতে সূর্যকে প্রতিদিন পূর্ব আকাশ থেকে পশ্চিম আকাশে চলাচল করছে বলে মনে হয়। এটা কে সূর্যের দৈনিক আপাত গতি বলে।
৪. চান্দ্রমাস কাকে বলে?
উত্তর : পৃথিবীকে একবার প্রদক্ষিণ করতে পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহ চাঁদের সময় লাগে প্রায় 28 দিন। এই সময়কে চান্দ্রমাস বলে।
9. সৌরবছর (Solar Year) কী?
উত্তর: পৃথিবী সূর্যের সামনে নিজ মেরুরেখার ওপর আবর্তন করতে করতে ঘড়ির কাঁটার বিপরীতক্রমে উপবৃত্তাকার কক্ষপথে সূর্যকে একবার পূর্ণ পরিক্রমণ করতে সময় নেয় 365 দিন 5 ঘণ্টা 48 মিনিট 46 সেকেন্ড বা 365 দিন 6 ঘণ্টা বা প্রায় 1 বছর, একে এক সৌরবছর (Solar Year) বলে।
10. সূর্যের বার্ষিক আপাত গতি বা রবিমার্গ কাকে বলে?
উত্তর : রবি কথার অর্থ হল সূর্য এবং মার্গ কথার অর্থ হল পথ। আপাতভাবে মনে হয় যে সূর্য পৃথিবীর বিষুবরেখা থেকে উত্তরে কর্কটক্রান্তি রেখা পর্যন্ত এবং দক্ষিনে মকরক্রান্তি রেখা পর্যন্ত চলাচল করে। এটাই সূর্যের বার্ষিক আপাতগতি বা রবিমার্গ।
11. ঋতুপরিবর্তন কাকে বলে?
উত্তর: পৃথিবীর পরিক্রমণ গতির জন্য আকাশে সূর্যের উত্তরায়ণ ও দক্ষিণায়ন লক্ষ করা যায় এবং ভূপৃষ্ঠে দিন-রাত্রির দৈর্ঘ্যের র্ঘ্যর হ্রাস-বৃদ্ধি ও সৌরতাপের তারতম্য হয়। এর ফলে ভূপৃষ্ঠের বিভিন্ন অংশে বছরের বিভিন্ন সময়ে উন্নতার যে তারতম্য ঘটে তারই জন্য জলবায়ুর পরিবর্তন ঘটে। জলবায়ুর এই পরিবর্তনকে ঋতুপরিবর্তন বলে।
12. 'বড়দিন' কি আসলে বড়দিন?
উত্তর: বড়দিন (Christmas) বা যিশুখ্রিস্টের জন্মদিন (25 December), 22 ডিসেম্বর মকরসংক্রান্তির কয়েকদিন পরেই। আসলে ঐ সময় থেকে উত্তর গোলার্ধে আবার দিন বড় হতে শুরু হয়।আসলে ক্রিসমাস এর দিন একটি বড় উৎসবের দিন কিন্তু পৃথিবীর সবচেয়ে বড় দিন নয় তবে দক্ষিণ গোলার্ধে সবচেয়ে বড় দিন এর তিন দিন পর।
13. কাকে মধ্যরাত্রির সূর্যের দেশ বলা হয় এবং কেন?
উত্তর : ডেনমার্ক আলাস্কা নরওয়ে সুইডেন প্রভৃতি জায়গাতে যখন স্থানীয় সময় অনুযায়ী গভীর রাত, তখন কিছু সময়ের জন্যও দিগন্তরেখায় সূর্যকে দেখা যায়। একে মধ্যরাত্রির সূর্য বলে। নরওয়ের হেমারফেস্ট বন্দরকে মধ্যরাত্রির সূর্যের দেশ বলে।
14. মেরুজ্যোতি কাকে বলে?
উত্তর: দুই মেরু প্রদেশ মাঝরাত চলার সময় মাঝে মাঝে আকাশের রংধনুর মত আলোের জ্যোতি দেখা যায়। একে মেরুজ্যোতি বা Aurora বলে।
15. অধিবর্ষ বা লিপ ইয়ার (Leap Year) কাকে বলে?
সংজ্ঞা: ইংরেজি ক্যালেন্ডার অনুসারে যে বছরে ফেব্রুয়ারি মাসে 28 দিনের সঙ্গে 1 দিন যোগ করে বছরটিকে 366 দিনের করা হয়, সেই বছরটিকে অধিবর্ষ (Leap year) বলা হয়। মিশরীয়রা প্রথম এই অধিবর্ষের হিসাব আবিষ্কার করে।
16. শীতকালে আবহাওয়া শীতল থাকে কেন?
সংজ্ঞা: শীতকালে আবহাওয়া শীতল থাকে কারণ - ও পৃথিবীর অক্ষ 66½° কোণে হেলে থাকায় যে গোলার্ধ সূর্যের বিপরীত দিকে ঝুঁকে পড়ে, ফলে সেই গোলার্ধে শীতকাল হয় । শীতকালে সূর্যরশ্মি, অত্যন্ত তির্যকভাবে পড়ায় উন্নতা কম হয় এবং আবহাওয়া শীতল থাকে। ও শীতকালের দিনের দৈর্ঘ্য রাতের দৈর্ঘ্যের থেকে কম। ফলে দিনেরবেলায় ভূপৃষ্ঠ যে পরিমাণ তাপ গ্রহণ করে দীর্ঘ রাতে তার সবটাই বিকিরিত হয়ে যায় এবং ভূপৃষ্ঠ ক্রমশ শীতল হতে থাকে বলে শীতকালে আবহাওয়া শীতল থাকে।
17. পৃথিবীর অক্ষ কক্ষপথের সঙ্গে 66½° কোণে হেলানো কেন?
সংজ্ঞা : সৃষ্টির আদিলগ্নে কোনো বৃহৎ মহাজাগতিক বস্তুর সঙ্গে পৃথিবীর সংঘর্ষ ঘটার কারণেই পৃথিবীর অক্ষ তার কক্ষপথের সঙ্গে 66½° কোণে হেলে অবস্থান করছে বলে বিজ্ঞানীরা মনে করেন।
✍️প্রশ্নের মান -৩:
1. আহ্নিক গতি (Rotation) সম্পর্কে টীকা লেখ।
সংজ্ঞা : সূর্যকে সামনে রেখে পৃথিবী নিজ মেরুরেখাকে বেষ্টন করে একটি নির্দিষ্ট গতিতে পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে ঘুরে চলেছে। পৃথিবীর এই গতিকে আবর্তন গতি বা আহ্নিক গতি বলা হয়।
নামকরণের তাৎপর্য: অহ্ন' শব্দটির অর্থ' দিন'। নিজের অক্ষের চারদিকে একবার পূর্ণ দিন'। নিজের অক্ষের চারদিকে একবার পূর্ণ আবর্তন করতে পৃথিবীর সময় লাগে 23 ঘণ্টা 56 মিনিট 4 সেকেন্ড বা প্রায় 24 ঘণ্টা বা 1 দিন। তাই পৃথিবীর আবর্তন গতির অপর নাম আহ্নিত গতি বা দৈনিক গতি।
আবর্তন বেগ: পৃথিবীর নিরক্ষরেখা বরাবর পরিধি সর্বাধিক (40,077 কিমি) হওয়ায় নিরক্ষরেখায় আবর্তন বেগ সবচেয়ে বেশি (প্রায় 1,674 কিমি/ ঘণ্টা)। নিরক্ষরেখা থেকে উভয় গোেলার্ধের দিকে এই আবর্তন বেগ কমতে কমতে উভয় মেরুবিন্দুতে তা শূন্য হয়ে যায়।
2.টীকা লেখ: মহাবিষুব (Vernal Equinox)।
সংজ্ঞা: 21 মার্চ উত্তর গোলার্ধে বসন্তকাল এবং দিন - রাত্রির দৈর্ঘ্য সমান হওয়ায়, এই দিনটিকে বলা হয় মহাবিষুব বা বসন্তকালীন বিষুব (Vernal Equinox)
অবস্থা : সূর্যকে পরিক্রমণরত অবস্থায় পৃথিবী তার
আপন কক্ষপথে 21 মার্চ এমন এক স্থানে থাকে, যেখানে - ও মধ্যাহ্নে সূর্য নিরক্ষরেখায় লম্বভাবে পড়ে। ও ছায়াবৃত্ত প্রতিটি সমাক্ষরেখাকে সমান দুটি ভাগে ভাগ করে। ও উত্তর ও দক্ষিণ গোলার্ধ সূর্য থেকে সমান দূরে অবস্থান করে। উত্তর ও দক্ষিণ মেরু একইসঙ্গে সূর্যালোক পায়।
ফলাফল:21 মার্চ সূর্য পৃথিবীর ঠিক পূর্ব আকাশে ওঠে ও পশ্চিম আকাশে অস্ত যায়। ও সারা পৃথিবীতে এই দিন 12 ঘণ্টা দিন ও 12 ঘণ্টা রাত্রি হয়। ও মধ্যাহ্নে সূর্য নিরক্ষরেখায় লম্বভাবে পড়ে।
3. টীকা লেখ: জলবিষুব (Autumnal Equinox)।
সংজ্ঞা: 23 সেপ্টেম্বর উত্তর গোলার্ধে শরৎকাল এবং দিনরাত্রির দৈর্ঘ্য সমান হওয়ায়, এই দিনটিকে বলা হয় জলবিষুব বা শরৎকালীন বিষুব (Autumnal Equinox)
অবস্থা : সূর্যকে পরিক্রমণরত অবস্থায় পৃথিবী তার আপন কক্ষপথে 23 সেপ্টেম্বর এমন এক স্থানে থাকে, যেখানে - মধ্যাহ্নে সূর্য নিরক্ষরেখায় লম্বভাবে পড়ে। ও ছায়াবৃত্ত প্রতিটি সমাক্ষরেখাকে সমান দুটি ভাগে ভাগ করে। উত্তর ও দক্ষিণ গোলার্ধ সূর্য থেকে সমান দূরে অবস্থান করে। উত্তর ও দক্ষিণ মেরু একই সঙ্গে সূর্যালোক পায়।
ফলাফল:23 সেপ্টেম্বর সূর্য পৃথিবীর ঠিক পূর্ব
আকাশে ওঠে ও পশ্চিম আকাশে অস্ত যায়। ও সারা পৃথিবীতে এই দিন 12 ঘণ্টা দিন ও 12 ঘণ্টা রাত্রি হয়। ও মধ্যাহ্নে সূর্য নিরক্ষরেখায় লম্বভাবে পড়ে।
4. কর্কটসংক্রান্তি (Summer Solstice) সম্পর্কে যা জানো লেখো।
সংজ্ঞা: সূর্যে উত্তরায়ণের শেষ দিন অর্থাৎ, 21 জুন সূর্যরশ্মি উত্তর গোলার্ধে কর্কটক্রান্তি রেখার (23½ ° উত্তর) ওপর লম্বভাবে কিরণ দেয়। ফলে এই দিন উত্তর গোলার্ধে দিন সব থেকে বড়ো ও রাত সব থেকে ছোটো (14 ঘণ্টা দিন ও 10 ঘণ্টা রাত) হয়। এই দিনটিকে বলা হয় কর্কটসংক্রান্তি (Summer Solstice) বা গ্রীষ্মকালীন সৌরস্থিতি।
অবস্থা:21 জুন এই দিনটিতে কর্কটক্রান্তিরেখায় লম্বভাবে কিরণ দেয়। ছায়াবৃত্ত প্রতিটি সমাক্ষরেখাকে মধ্যাহ্ন সূর্যরশ্মি (নিরক্ষরেখা ছাড়া) অসমানভাবে ভাগ করে। উত্তর গোলার্ধ সূর্যের দিকে ঝুঁকে অবস্থান করে।
ফলাফল : কর্কটক্রান্তির দিন উত্তর গোলার্ধে দীর্ঘতম দিন ও ক্ষুদ্রতম রাত্রি এবং দক্ষিণ গোলার্ধে এর বিপরীত অবস্থার সৃষ্টি
5. মর্করসংক্রান্তি (Winter Solstice) সম্পর্কে যা জানো লেখো।
সংজ্ঞা: সূর্যের দক্ষিণায়নের শেষ দিন অর্থাৎ, 22 ডিসেম্বর সূর্যরশ্মি দক্ষিণ গোলার্ধের মকরক্রান্তি রেখার (23½° দক্ষিণ) ওপর লম্বভাবে কিরণ দেয়। ফলে এই দিন দক্ষিণ গােলার্ধে দিন সব থেকে বড়ো ও রাত সব থেকে ছোেটা (14 ঘণ্টা দিন ও 10 ঘণ্টা রাত) হয়। এই দিনটিকে বলা হয় মকরসংক্রান্তি (Winter Solstice) বা শীতকালীন সৌরস্থিতি।
অবস্থা:22 ডিসেম্বর এই দিনটিতে – মধ্যাহ্নে সূর্যরশ্মি মকরক্রান্তি রেখায় লম্বভাবে পতিত হয়। ও দক্ষিণ গোলার্ধ সূর্যের দিকে ঝুঁকে অবস্থান করে । ও ছায়াবৃত্ত প্রতিটি সমাক্ষরেখাকে (নিরক্ষরেখা ছাড়া) অসমানভাবে ভাগ করে।
ফলাফল : মকরসংক্রান্তির দিন দক্ষিণ গোলার্ধে দীর্ঘতম দিন ও ক্ষুদ্রতম রাত্রি এবং উত্তর গোলার্ধে এর বিপরীত অবস্থার সৃষ্টি হয়।