📚জাদুঘর কি? অতীতের পুনর্নির্মাণে জাদুঘরের ভূমিকা আলোচনা কর।
জ্ঞানদ্রীমোহন দাসের সংজ্ঞা:- তাঁর মতে, যে বাড়িতে অদ্ভুত অদ্ভুত জিনিসের সমাহার থাকে এবং যা দেখে মন্ত্রমুগ্ধ হতে হয় তাকে জাদুঘর বলে।
বাংলা অভিধানের সংজ্ঞা:- পশ্চিমবঙ্গের বাংলা একাডেমি একটি জাদুঘরকে এমন একটি স্থান হিসাবে সংজ্ঞায়িত করে যেখানে প্রাচীন জিনিসপত্র সংরক্ষণ করা হয়।
J.C.D.M.-এর সংজ্ঞা- জাদুঘরের সংজ্ঞার পরিপ্রেক্ষিতে বলা হয় যে, জাদুঘর হল একটি অলাভজনক, স্থায়ী সেবামূলক শিক্ষা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, যেখানে মূর্ত ও অধরা বস্তু সংরক্ষণ করা হয়।
সাধারণ সংজ্ঞা:- জাদুঘরের সাধারণ সংজ্ঞা হল- যেখানে ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক, বৈজ্ঞানিক, শৈল্পিক প্রভৃতি নিদর্শন সংরক্ষণ করা হয় এবং জনসাধারণের কাছে প্রদর্শিত হয়, তাকে জাদুঘর বলে।
অতীতের পুনর্গঠনে জাদুঘরের ভূমিকা:- বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছেন- অতএব, এই প্রবাদ অনুসারে, অতীতের উপাদান থেকে বর্তমান কালকে সহজেই বোঝা যায়, জাদুঘর সেই কাজটি করে যাতে অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যৎ জীবন সুন্দরভাবে গড়ে তোলা যায়। এর উল্লেখযোগ্য ভূমিকা হল-
বিবর্তনীয় প্রবণতা:- জাদুঘরগুলো অনেক প্রাণীর প্রত্নতাত্ত্বিক নমুনা সংগ্রহ করে। উদাহরণস্বরূপ, আমরা মানুষের কঙ্কাল, মাথার খুলি, দেহাবশেষ, ডাইনোসর এবং বিভিন্ন প্রাণীর কাঠামো সংরক্ষণের মাধ্যমে প্রাণীদের বিবর্তন সম্পর্কে জানতে পারি।
অতীত সম্পর্কে ধারণা:- যাদুঘরে সংরক্ষিত বিভিন্ন সময়ের মুদ্রা, শিলালিপি, শিল্পকর্ম, বিভিন্ন বই, প্রাচীনতম নমুনা যা থেকে অতীতের সমাজ ও সংস্কৃতির পরিচয় জানা যায়।
অতীত ও বর্তমানের সংমিশ্রণ:- অতীত ও বর্তমানের সমন্বয়ে জাদুঘর। দর্শনার্থী ও ইতিহাসবিদরা জাদুঘরের বিভিন্ন চিত্রকর্ম, ভাস্কর্য, বস্ত্র, অলংকার, মূর্তি ইত্যাদি দেখেন যা থেকে তারা মানব সভ্যতার অগ্রগতির পথ বা ঘটনা জানতে পারেন। ফলাফল অতীত এবং বর্তমান মধ্যে একটি যোগসূত্র.
সামঞ্জস্যতা:- জাদুঘরে সংরক্ষিত বস্তু থেকে মানুষ বুঝতে পারে কিভাবে প্রাচীন সংস্কৃতি থেকে আধুনিক সংস্কৃতির উৎপত্তি হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, আধুনিক হিন্দু সংস্কৃতি প্রাচীন বৈদিক সংস্কৃতি থেকে উদ্ভূত হয়েছে।
গবেষণা সহায়ক: - জাদুঘরে বিভিন্ন বিষয়ে তথ্য থাকে। যা ছাত্র ও ইতিহাসবিদদের গবেষণা কাজে সাহায্য করে। এছাড়াও জাদুঘরের বিভিন্ন দিক থেকে অনেক অজানা তথ্য পাওয়া যায়, যা অতীতকে পুনর্গঠনে সাহায্য করে।
মন্তব্য:- জাদুঘরে সংরক্ষিত বিভিন্ন বস্তুর দুটি উদ্দেশ্য রয়েছে। যথা- (i) পুরাকীর্তি সংরক্ষণ (ii) পুরাকীর্তি ব্যাখ্যা। যাইহোক, এই দুটি উদ্দেশ্য পূরণের জন্য একটি জাদুঘর নির্মাণ ব্যয়বহুল এবং সময়সাপেক্ষ।
.....................