📚বি.এ মেজর ও মাইনর বাংলা:1st Semester:একক-১: সাহিত্যের সংরূপ ও গঠন সংক্রান্ত প্রাথমিক ধারণা(সংজ্ঞা ও বৈশিষ্ট্য): উপন্যাস📚

✍️প্রশ্নমান-২:

প্রশ্ন: ইংরেজী 'Novel' নামটি কোথা থেকে আগত?

উত্তর: ইংরেজী 'Novel' নামটি ইতালীয় 'Novella' থেকে আগত, যার অর্থ হল 'a little new thing' |

প্রশ্ন: 'Aspects of the Novel' গ্রন্থটি কার লেখা?

উত্তর: 'Aspects of the Novel' গ্রন্থটি E. M. Foster-এর লেখা।

প্রশ্ন: উপন্যাস কাকে বলে?

উত্তর: বাস্তব কোন কাহিনীকে অবলম্বন করে কিংবা চরিত্রের প্রতিবেশের সঙ্গে ঘাত প্রতিঘাতের জটিলতা, লেখকের ব্যক্তিগত জীবনদর্শন ও জীবনানুভূতির রসে জারিত হয়ে যখন একটি বর্ণনাত্মক শিল্পকর্মে রূপায়িত হয় তখন সেই শিল্পিত রূপবন্ধ রচনাকে উপন্যাস বলে।

প্রশ্ন: উপন্যাসের উপাদানগুলি সাধারণত কী কী?

উত্তর: উপন্যাসের উপাদান নিয়ে নানা মুনির নানা মত সত্ত্বেও সাধারণ ভাবে বলা যায়-প্লট বা আখ্যান ভাগ, চরিত্র, সংলাপ, বাস্তবতা, কাহিনীর পটভূমি, বর্ণনারীতি, লেখকের জীবন দর্শন-এগুলিই উপন্যাসের মূল উপাদান।

প্রশ্ন: উপন্যাস প্রধানত কয় প্রকার?

উত্তর: উপন্যাসের নানান দিক দিয়ে নানান সময়ে সমালোচকেরা নানাবিধ শ্রেণী বিভাগ করলেও প্রধানত উপন্যাসের শ্রেণী বিভাগ হল-সামাজিক উপন্যাস, ঐতিহাসিক উপন্যাস, আঞ্চলিক উপন্যাস, মনস্তত্ত্বমূলক উপন্যাস, পত্রোপন্যাস; এছাড়াও বলা যায়-কাব্যধর্মী উপন্যাস, রহস্যমূলক উপন্যাস, রাজনৈতিক উপন্যাস, বীরত্বব্যঞ্জক উপন্যাস, আত্মজীবনীমূলক উপন্যাস, হাস্যরসাত্মক উপন্যাস ইত্যাদি।

প্রশ্ন: সামাজিক উপন্যাস কাকে বলে? উদাহরণ দাও।

উত্তর: উপন্যাস জীবনের এক সুসংবদ্ধ শিল্পিত রূপ, যে উপন্যাসে সামাজিক সমস্যার ঘাত প্রতিঘাত ও পারিবারিক টানা পোড়েনে দ্বন্দ্ব-বিক্ষুব্ধ মানব-চরিত্রের জীবন রহস্য লেখকের জীবনদর্শনে জারিত হয়ে এক বাণীবদ্ধ রূপ লাভ করে তাকে সামাজিক উপন্যাস বলে। সমাজ ও ব্যক্তিমনের দ্বন্দ্বই এই উপন্যাসের উপজীব্য বিষয়।বঙ্কিমচন্দ্রের 'বিষবৃক্ষ', শরৎচন্দ্রের 'গৃহদাহ' এই শ্রেণির বিখ্যাত উপন্যাস।

প্রশ্ন: কোন বাংলা গ্রন্থে প্রথম সামাজিক উপন্যাসের পূর্বাভাস পাওয়া যায়?

 উত্তর: ভবানীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'নববাবু বিলাস' (১৮২৩) গ্রন্থে প্রথম সামাজিক উপন্যাসের পূর্বাভাস পাওয়া যায়।

প্রশ্ন: সামাজিক উপন্যাসের বৈশিষ্ট্য লেখো। 

উত্তর: (ক) ঔপন্যাসিকের সমকালীন সমাজ ও প্রতিবেশের প্রসঙ্গ এখানে প্রতিবিম্বিত হয়।

(খ) ঔপন্যাসিকের বক্তব্য চরিত্রের মাধ্যমে প্রতিভাত হয়।

(গ) সামাজিক মূল্যবোধের বিবর্তন চরিত্রগুলিকে দ্বিধাগ্রস্ত করে তুলবে। (ঘ) সমাজ সম্পর্কে লেখকের নিজস্ব জীবনদর্শনের ছায়াপাত ঘটবে।

প্রশ্ন: ঐতিহাসিক উপন্যাস কাকে বলে?

উত্তর: শুধু ইতিহাসের বিষয় ও চরিত্র উঠে এলেই ঐতিহাসিক উপন্যাস হয়না। যখন ঐতিহাসিক ঘটনা, চরিত্র, পরিবেশ, লেখকের কল্পনাপ্রসূত চরিত্র, পরিবেশ ইত্যাদির সঙ্গে মিশে গিয়ে মানবরস সমন্বিত ঐতিহাসিক রসের উৎসার ঘটায় তখন তাকে ঐতিহাসিক উপন্যাস বলে।

প্রশ্ন: কোন্ ইউরোপীয় লেখককে ঐতিহাসিক উপন্যাসের প্রথম সার্থক রচয়িতার শিরোপা দেওয়া হয়?

উত্তর: ওয়ালটার স্কটকে প্রথম সার্থক ঐতিহাসিক উপন্যাসের রচয়িতার শিরোপা দেওয়া হয়।

প্রশ্ন: বাংলা সাহিত্যে ঐতিহাসিক উপন্যাসের প্রথম যথার্থ শিল্পী কে? তাঁর এই শ্রেণীর একটি উপন্যাসের নাম লেখো।

উত্তর: বাংলা সাহিত্যে ঐতিহাসিক উপন্যাসের প্রথম যথার্থ শিল্পী হলেন বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। তাঁর এই শ্রেণীর একটি উপন্যাস হল 'রাজসিংহ' (১৮৮২)।

প্রশ্ন: 'এই প্রথম ঐতিহাসিক উপন্যাস লিখিলাম'-কোন্ উপন্যাস সম্পর্কে কার এই উক্তি? 'মহারাষ্ট্র জীবনপ্রভাত' ও 'রাজপুত জীবনসন্ধ্যা' উপন্যাস দুটির রচয়িতা কে? ঐতিহাসিক উপন্যাসের বৈশিষ্ট্য লেখ।

উত্তর: 'রাজসিংহ' উপন্যাস সম্পর্কে রচয়িতা বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় স্বয়ং এই মন্তব্য করেছেন। 'মহারাষ্ট্র জীবনপ্রভাত' ও রাজপুত জীবনসন্ধ্যা' উপন্যাস দুটির রচয়িতা রমেশচন্দ্র দত্ত।

ঐতিহাসিক উপন্যাসের বৈশিষ্ট্য:

(ক) ইতিহাসাশ্রয়ী কাহিনী।(খ) কেন্দ্রীয় চরিত্র হবে ঐতিহাসিক।(গ) ঐতিহাসিক উপন্যাসে থাকে মহাকাব্যিক বিস্তার। চরিত্রগুলি তাদের আপন ঐতিহাসিক পরিচয়ের পোশাক খুলে ফেলে মহাকালের অঙ্গীভূত হয়ে যায়। একটি বিশেষ স্থান কালের সীমা অতিক্রম করে পায় বিশ্বজনীন ব্যঞ্জনা।(ঘ) মূলরস হল ঐতিহাসিক রস। 

প্রশ্ন:আঞ্চলিক উপন্যাস কাকে বলে? 

উত্তর: উপন্যাসে শুধু অঞ্চলের কথা থাকলেই আঞ্চলিক উপন্যাস হয় না, তাকে উপন্যাসও হতে হবে। মূলত যে উপন্যাসে কোন বিশেষ অঞ্চলের প্রাকৃতিক, সামাজিক, ধর্মীয়, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক উত্থান-পতন, জীবন-জীবিকা, ভাষা, আচার-আচরণ, উৎসব-অনুষ্ঠান, লোক-কথা প্রবাদ-প্রবচন অর্থাৎ 'Local Colour' উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে তাকে আঞ্চলিক উপন্যাস বলে।

প্রশ্ন: কয়েকটি বিখ্যাত বাংলা আঞ্চলিক উপন্যাসের নাম লেখো।

উত্তর: তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'হাঁসুলী বাঁকের উপকথা', মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'পদ্মানদীর মাঝি', অদ্বৈত মল্লবর্মনের 'তিতাস একটি নদীর নাম', সমরেশ বসুর 'গঙ্গা' ইত্যাদি।

প্রশ্ন: আঞ্চলিক উপন্যাসের বৈশিষ্ট্য লেখো।

উত্তর: (ক) কোন বিশেষ এক অঞ্চলের সামগ্রিক পরিচয় এর উপজীব্য। (খ) ব্যক্তিজীবনের বদলে এখানে গোষ্ঠীজীবন প্রাধান্য পায়।

(গ) ধর্মীয় বিশ্বাস, উৎসব অনুষ্ঠান সংস্কার বৃহত্তর জনজীবন থেকে ভিন্নতর হয়ে ওঠে।(ঘ) চরিত্রগুলির ভাষা আঞ্চলিক ভাষা।

প্রশ্ন: বাংলা উপন্যাসে কাকে 'আঞ্চলিকতা'-র দক্ষ ও মরমী শিল্পী বলা হয়? 

উত্তর: বাংলা উপন্যাসে তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়কে 'আঞ্চলিকতা'-র দক্ষ ও মরমী শিল্পী বলা হয়।

প্রশ্ন: মনস্তাত্ত্বিক উপন্যাস কাকে বলে?

উত্তর: সাধারণত যে উপন্যাসে ঔপন্যাসিক আখ্যানভাগের চেয়ে চরিত্র মনের গহনে বেশি নজর দেন এবং ঘাত-প্রতিঘাতে জর্জরিত চরিত্রের মন, মেজাজ, মনন ও মানসিকতাকে বিশ্লেষণ করে, কাহিনীর প্রথাগত কাঠামোকে লঙ্ঘন করে এক অন্তর্ময় পরিবেশ রচনা করেন তাকে মনস্তাত্ত্বিক উপন্যাস বলে।

প্রশ্ন: 'ঔপন্যাসিক অন্তর্বিষয়ের প্রকটনে যত্নবান হইবেন'-কে বলেছিলেন? 

উত্তর: 'ঔপন্যাসিক অন্তর্বিষয়ের প্রকটনে যত্নবান হইবেন'-একথা বলেছেন বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়।

প্রশ্ন: বাংলা সাহিত্যের কয়েকটি বিখ্যাত মনস্তাত্ত্বিক উপন্যাসের নাম লেখো।

উত্তর: বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের 'কৃষ্ণকান্তের উইল', রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের 'চোখের বালি', ধূর্জটিপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের 'অন্তঃশীলা', 'আবর্ত', 'মোহনা', গোপাল হালদারের 'একদা'-বাংলা মনস্তাত্ত্বিক উপন্যাসের সার্থক নিদর্শন। 

প্রশ্ন: মনস্তাত্ত্বিক উপন্যাসের বৈশিষ্ট্য লেখো।

উত্তর: আখ্যানভাগ বা 'প্লট'-এর চাইতে চরিত্রের মন-মনন, মেজাজ বেশী গুরুত্ব পায়। এই ধরনের উপন্যাসে প্রতি মুহূর্তে ব্যক্তিতে-ব্যক্তিতে কিংবা ব্যক্তিতে-সমাজে নানা মানস প্রক্রিয়াগুলি বিবর্তিত হয়। 

প্রশ্ন: রাজনৈতিক উপন্যাস কাকে বলে?

উত্তর: যে উপন্যাসে রাজনৈতিক ঘটনা ও কাহিনীকে অবলম্বন করে একটি দেশ ও জাতির, স্থান ও কালের সামাজিক-অর্থনৈতিক-রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা, তার দ্বন্দু সমস্যা সংকট ইত্যাদি প্রকাশ পায় তখন আমরা তাকে সার্থক রাজনৈতিক উপন্যাস বলতে পারি। কোন বিশেষ রাজনৈতিক মতবাদকে প্রচার নয়,সর্বজন হিতকর একটি ভাবাবেগ তুলে ধরাই এই উপন্যাসের কাজ।

প্রশ্ন: বাংলা সাহিত্যের কয়েকটি রাজনৈতিক উপন্যাসের নাম লেখো।

উত্তর: শরৎচন্দ্রের 'পথের দাবী', মনোজ বসুর 'ভুলি নাই', সতীনাথ ভাদুড়ীর 'জাগরী'। 

প্রশ্ন: রাজনৈতিক উপন্যাসের বৈশিষ্ট্য লেখো।

উত্তর: (ক) সমকালীন বিভিন্ন ঘটনার ঘাত-প্রতিঘাত মুখর রাজনৈতিক জীবন এর উপজীব্য।

(খ) এক সুলভ আবেগ প্রবণতা ও ভাবালুতা পাঠক ও লেখককে একসঙ্গে গেঁথে রাখে। (গ) ভাবের উচ্ছ্বাসের সাথে সাথে ভাষার চমৎকারিত্বে লেখক পাঠককে অভিভূত করে দেন।

প্রশ্ন: “জাগরী” উপন্যাসের পটভূমি কোন্ আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত? 

উত্তর: "জাগরী” উপন্যাসটি ১৯৪২ সালের আগস্ট আন্দোলনের পটভূমিকায় রচিত।

✍️প্রশ্নমান-৫:

১. উপন্যাস কাকে বলে? সামাজিক উপন্যাসের বৈশিষ্ট্যগুলি লেখো। 

উত্তর: যে দীর্ঘ গদ্য কাহিনীতে জীবনের জটিলতার প্রকাশ ঘটবে। যার ঘটনা এবং চরিত্রগুলি হবে বাস্তবের প্রতিনিধি এবং নানা জটিলতা সত্ত্বেও একটি শিল্পগত ঐক্য হলে তাকে উপন্যাস বলে।

বৈশিষ্ট্য: (১) সামাজিক উপন্যাসে বিশেষ এলাকার সমাজকে চিত্রিত করা হয়।

(২) সামাজিক উপন্যাসে তুলে ধরা হয় পরিচিত সমাজকে।

(৩) চরিত্রগুলি এক একটি সমাজের প্রতিনিধিত্ব করে থাকে।

(৪) ঔপন্যাসিকের বক্তব্য চরিত্রের মাধ্যমে ব্যক্ত হয়।

(৫) ঔপন্যাসিকের সমসাময়িক প্রসঙ্গই এই শ্রেণির উপন্যাসের অন্তর্ভুক্ত হয়। 

উদাহরণ : (১) রমেশচন্দ্র দত্তের 'সংসার', 'সমাজ'। (২) বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের 'বিষবৃক্ষ', 'কৃষ্ণকান্তের উইল'। (৩) শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের 'পল্লীসমাজ', 'গৃহদাহ'।

✍️প্রশ্নমান-১০: 

১.উপন্যাস কাকে বলে বা উপন্যাস কত প্রকার ও কি কি এবং উপাদানসমূহ আলোচনা করো।

উত্তর: উপন্যাস বলতে এমন একটি বিশেষ সাহিত্য-সৃষ্টি বোঝায় যাতে লেখকের জীবনদর্শন ও জীবনানুভূতি কোন বাস্তবকাহিনি অবলম্বনে বর্ণনামূলক শিল্পকর্মে রূপায়িত হয়। সমগ্র জীবনের প্রতিচ্ছবি এতে ফুটে ওঠে বলে এর পটভূমি থাকে বিস্তৃত। ব্যাপকতর আকৃতি, সামঞ্জস্যপূর্ণ ঘটনাবিন্যাস, আকর্ষণীয় গল্পরস, বৈশিষ্ট্যপূর্ণ

চরিত্রসৃষ্টি, মনোমুগ্ধকর বর্ণনাভঙ্গি, সাবলীল সংলাপ ইত্যাদির লক্ষণ সার্থক উপন্যাসে অভিপ্রেত।

উপন্যাসের প্রকৃতিগত বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে যে, এতে কোন একটি কাহিনির বর্ণনাই প্রধান হয়ে থাকে। মানব জীবনের ঘটনাবলির বর্ণনাদানের সঙ্গে সঙ্গে জগৎ ও জীবন সম্পর্কিত লেখকের বিচিত্র উপলব্ধি উপন্যাসের মধ্যে প্রকাশ পায়। উপন্যাসের ইংরেজি প্রতিশব্দ Novel শব্দটি ইংরেজিতে এসেছে ইতালিয় শব্দ novella থেকে, আর এর অর্থ হচ্ছে tale, piece in news | উপন্যাস শব্দটি বিশ্লেষণ করলে পাওয়া যায় উপ+নি + অস; অর্থাৎ 'উপ' পূর্বক, 'নি' পূর্বক, 'অস' ধাতুর সঙ্গে 'অ' প্রত্যয় যোগে 'উপন্যাস' শব্দটি গঠিত, যার অর্থ 'উপন্যাস'।

উপন্যাস কি: গ্রন্থকারের ব্যক্তিগত জীবন দর্শন ও জীবনানুভূতি কোন বাস্তব কাহিনিকে অবলম্বন করে যে বর্ণনাত্মক শিল্পকর্মে রূপায়িত হয়, তাকে উপন্যাস বলে। 

উপন্যাসের শ্রেণিবিভাগ: বৈচিত্র্যপূর্ণ বিষয় উপন্যাসের উপজীব্য বলে উপন্যাসের শ্রেণিবিভাগেও বৈচিত্র্যের সৃষ্টি হয়েছে। উপন্যাসের শ্রেণিবিভাগ সম্পর্কে অনেকের মধ্যেই মতভেদ রয়েছে। উপন্যাসের ভাগগুলি হলো-

১. ঐতিহাসিক উপন্যাস: ঐতিহাসিক উপন্যাস রচিত হয় ইতিহাসের কাহিনি অবলম্বনে। ইতিহাসের প্রতি আনুগত্য রেখে শিল্পসৌন্দর্য মণ্ডিত হয়ে ওঠে এই শ্রেণির উপন্যাসে।

২. সামাজিক উপন্যাস : সামাজিক উপন্যাসে প্রতিফলিত হয় সমাজজীবন। সমাজের চিত্রের সঙ্গে সঙ্গে সামাজিক সমস্যা এতে স্থান পেতে পারে।

৩. আঞ্চলিক উপন্যাস : এই ধরনের উপন্যাসে কোনো এক বিশেষ অঞ্চলের মানুষরে কথা, পরিবেশ, জীবনচর্যাসহ শিল্পসম্মতরূপে পরিবেশিত। ৪. পৌরাণিক উপন্যাস: পুরাণ বা মিথকে নির্ভর করে পৌরাণিক উপন্যাস রচিত হয়।

৫. আত্মজীবনীমূলক উপন্যাস: আত্মজীবনীমূলক উপন্যাসে লেখকের ব্যক্তিজীবনের প্রতিফলন ঘটে।

৬. হাস্যরস উপন্যাস: হাস্যরস প্রধান উপন্যাসে একটি অসাধারণ দৃষ্টিকেন্দ্র থেকে জীবনের পর্যবেক্ষণ এবং তার প্রচলিত গতির মধ্যে বক্ররেখা ও সূক্ষ্ম অসংগতির কৌতুককর ঘটনা আবিষ্কার করা হয়।

৭. কাব্যধর্মী উপন্যাস: এই ধরনের উপন্যাসে আখ্যানভাগ নিয়ন্ত্রণকুশলতা বা চরিত্রসৃষ্টির নৈপুণ্য অপেক্ষা লেখকের কবিদৃষ্টি জীবনদর্শনকে স্নিগ্ধ ও মধুর করে তোলে এবং গীতিধর্মিতা প্রাধান্য পায়।

৮. ডিটেকটিভ বা রহস্য উপন্যাস: এই রহস্যমূলক উপন্যাসে অপরাধমূলক ঘটনা স্থান পায় এবং পুলিশী তৎপরতার মাধ্যমে কূটবুদ্ধির প্রখরতা প্রকাশ পায়।

৯. রোমান্স উপন্যাস: রোমান্স প্রধান উপন্যাসে লেখকের অতীতপ্রীতি ও কল্পনাভিসারী মনের পরিচয় রূপলাভ করে।

উপন্যাসের উপাদান: একটি উপন্যাস তৈরির ক্ষেত্রে প্রধান ৫টি উপাদানের গুরুত্ব দেওয়া হয়। (১) ঘটনা, (২) চরিত্র, (৩) সংলাপ, (৪) ভাষা এবং (৫) ঔপন্যাসিকের জীবনদর্শন।

                             .................

                            Presented by

   skacademyallinone.blogspot.com